বহু আলেমকে দেখবেন, তার সনদটি কোথায় আছে, তিনি জানেন না। সনদ খুঁজে দেখার আগ্রহও তার নেই -মুফতি আবুল হাসান মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ

  • মুফতি আবুল হাসান মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ। রঈস, উচ্চতর ইসলামী শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান- মারকাযুদ দাওয়াহ আলইসলামিয়া ঢাকা। গবেষক আলেমেদ্বীন, ফকীহ। সম্পাদক, মাসিক আলকাউসার। ইসলামী অর্থনীতি ও ফিকহে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব। সম্প্রতি কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদীসের সনদের (মাস্টার্স সমমান) স্বীকৃতি বিল জাতীয় সংসদে পাশ এবং মাননীয় রাষ্ট্রপতি কর্তৃক স্বাক্ষরিত হয়। এই স্বীকৃতির জন্য অভিনন্দন, শুকরিয়া ও সংবর্ধনার বিভিন্ন আয়োজন চলছে। চলছে এসব আয়োজন নিয়েও নানা প্রতিক্রিয়া। ইসলাম টাইমস টুয়েন্টি ফোরের পক্ষ থেকে এ সব বিষয়ে কথা বলার জন্য ৫ই অক্টোবর বাদ-জুমা তার সামনাসামনি হয়েছিলেন আবু তাশরীফ।

 

ইসলাম টাইমস : কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদীসের সনদকে মাস্টার্স সমমানের স্বীকৃতির একটি বিল জাতীয় সংসদে পাশ হয়েছে। সরকারিভাবে স্বীকৃতিদানের এ বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখেন?

মুফতি আবুল হাসান আবদুল্লাহ : দাওরায়ে হাদীসের স্বীকৃতির এই আলোচনা ও প্রক্রিয়াটি  বেশ কিছুদিন যাবত চলে আসছে। অন্য একটি সরকারও স্বীকৃতির কিছু কাজ করেছিল। কিন্তু সম্পন্ন করেনি। সম্প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতির বিল পাশ হয়েছে। ঘটনাটিকে এক হিসেবে আমি ইতিবাচকভাবেই দেখি। আসলে এই স্বীকৃতি ঘোষণার দুটি দিক রয়েছে। একটি হচ্ছে, স্বীকৃতি চাওয়া। আরেকটি হচ্ছে, স্বীকৃতি দেওয়া। কওমি মাদরাসার যে ঐতিহ্য, কওমি মাদরাসার বরেণ্য আলেমদের যে ঐতিহ্য ও রীতি সেটা স্বীকৃতি চাওয়ার নয়। উপমহাদেশজুড়ে কওমি মাদরাসা ও ওলামায়ে কেরামের অসামান্য ও অপ্রতিদ্বন্দ্বী অবদান যাদের মাধ্যমে হয়েছে, তারা কখনো সরকার কিংবা ক্ষমতাবানদের মুহতাজ হননি। তারা দুনিয়ার কোনো প্রয়োজন পূরণের জন্য কর্তৃত্ববান মহলের কাছে যাননি। বরং উল্টোটাই ঘটেছে। ক্ষমতাসীনরা ধর্মীয় বিষয়ে, জাতীয় বিষয়ে তাদের মুহতাজ হয়েছেন। ব্রিটিশ শক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে দেশ মুক্ত করতে ভূমিকা রেখেছেন এই কওমি আলেমরা। তাদের তো তখনও রাষ্ট্রের কাছে কোনো মূল্যায়ন ছিল না।

ইসলাম টাইমস : ব্রিটিশ যুগে তো আলেমদের কোনো রাষ্ট্রীয় সম্মান ছিল না। তখন তো স্বীকৃতির সুযোগ ছিল না…

মুফতি আবুল হাসান আবদুল্লাহ : ওই রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কওমি মাদরাসার আলেমদের প্রতি আনুষ্ঠানিক কোনো সম্মান ছিল না বটে। কিন্তু সমাজ ও মানুষের মধ্যেও কি তাদের সম্মান ছিল না? তাদের মূল্যায়ন ছিল না? আখেরাতে তো ইনশাআল্লাহ আছেই, তাদের মূল্য দুনিয়াতেও ছিল। কেউ স্বীকৃতি দিলো কি না, কোনো রাষ্ট্র তাদের প্রতি সম্মান দেখালো কি না, এটা তাদের কাছে মুখ্য ছিল না। এটা তারা চাননি। আমি এন্তেজামি স্বীকৃতির কথাই বলছি। স্বীকৃতি চাওয়া তাদের মনমানসের সঙ্গে মানানসই হয় না। তবে এন্তেজামি স্বীকৃতি প্রদান রাষ্ট্রের দায়িত্বে পড়ে। তাই এ দায়িত্ব তারা পালন করতে চাইলে তাতে বাধা নেই।

ইসলাম টাইমস : না চাইলেও কি কেউ কোনো স্বীকৃতি দেয়? মূল্যায়ন করে?

মুফতি আবুল হাসান আবদুল্লাহ : এর তো অনেক নজির আছে দুনিয়ায়। পৃথিবীর বহু বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্মানসূচক পিএইচডি দেওয়া হয়। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে শিক্ষাবিদদেরকে এমিরিটাস অধ্যাপক নিযুক্ত করা হয়। জাতীয় অধ্যাপক নিযুক্ত করা হয়। যাদেরকে এই সম্মাননা দেওয়া হয়- তারা এ সম্মাননা চান না। কিন্তু রাষ্ট্র বা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়। একইভাবে বিভিন্ন গ্রহণযোগ্য প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের পদক, পুরস্কার ও সম্মাননা দেওয়া হয়- সেখানেও সেটি চাওয়া হয় না। বরং যারা দেন তারা নিজেদের পক্ষ থেকেই দেন। এবং বরেন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠনকে সম্মান দেখিয়ে তারা নিজেরা সম্মানিত বোধ করেন।

আমি বলছি না, সনদের এই স্বীকৃতি দিয়ে সরকার কোনো ভুল করেছে। বরং বলব, সরকার ও রাষ্ট্র তার দায়িত্ব পালন করেছে। সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য কাজ করেছে। যদিও আগে থেকেই এ প্রক্রিয়াটি চলছিল। কিন্তু যারা শেষ পর্যন্ত কাজটি করেছেন, তারা ধন্যবাদ পেতেই পারেন।

ইসলাম টাইমস : আগে তো ব্রিটিশ বেনিয়ারা ছিল। এখন তো স্বাধীন দেশ। অনেকেই মনে করেন, এখন স্বীকৃতি চাওয়া যেতেই পারে…

মুফতি আবুল হাসান আবদুল্লাহ : প্রথমে সাতচল্লিশ, তারপর একাত্তর এবং তারও পর বহু বছর পার হয়েছে। এই সময়ের বড় অংশ জুড়েই আমাদের বরেণ্য আলেম মনীষীগণ স্বীকৃতি  চাননি। তারা স্বীকৃতি চেয়ে নেওয়ার দরকার মনে করেননি। তারা তাদের অবদান রেখে গেছেন। তাদের নিষ্ঠা, যোগ্যতা ও প্রভাবের কারণে সমকালের মানুষের মধ্যে তাদের সম্মান ও শ্রদ্ধা ছিল। শুধু রাজধানী ঢাকার কথাই ধরুন। যেই বড়কাটারা, লালবাগ, ফরিদাবাদ- এসব মাদরাসায় বসে কওমি আলেমদের মুরুব্বিগণ দীনের খেদমত করেছেন, সমাজ ও নেতৃত্ব তাদের প্রতি মুখাপেক্ষী ছিল। তারা কেউ কিন্তু রাষ্ট্র বা সরকারের কাছ থেকে নিজেদের বা সনদের স্বীকৃতির পিছনে পিছনে হাটেননি। এখন যে স্বীকৃতি নেওয়া হয়েছে, আমি এটার বিরোধী নই। কিন্তু স্বীকৃতি দাবি করে নেওয়া, সেটা পাওয়ার পর বড় কিছু পাওয়া হয়েছে মনে করে আত্মহারা হয়ে যাওয়া এটা কওমি মাদরাসার শিক্ষাদীক্ষা ও অমুখাপেক্ষিতার ঐতিহ্যের সঙ্গে মানানসই বলে মনে হয় না।

ইসলাম টাইমস : সনদ বিষয়ে কওমি মাদরাসার শিক্ষাধারার প্রধান বৈশিষ্ট্য আসলে কী?

মুফতি আবুল হাসান আবদুল্লাহ : আপনি এখনো বহু বরেণ্য যোগ্য আলেমকে দেখবেন, তার সনদটি কোথায় আছে, তিনি জানেন না। সনদ খুঁজে দেখার আগ্রহ ও সময় কোনটিই তার নেই। কওমি মাদরাসার এই ধারাটাই এমন। এখানে নিষ্ঠা, যোগ্যতা ও ঐকান্তিকতার মূল্যটাই সবচেয়ে বেশি। সনদ এখানে মুখ্য নয়। যোগ্যতা ও ইখলাস এখানে মুখ্য।

ইসলাম টাইমস : সনদের স্বীকৃতির পর এরই মধ্যে অভিনন্দন ও শুকরিয়া জানিয়ে মিছিল হয়েছে। খবর এসেছে, কওমি মাদরাসার সম্মিলিত বোর্ডের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। সংবর্ধনার খবর সামনে আসার পর আবার নানা রকম প্রতিক্রিয়াও হচ্ছে। এ ব্যাপারে আপনার কী মত?

মুফতি আবুল হাসান আবদুল্লাহ : কওমি মাদরাসার সনদের স্বীকৃতির এই আইনটি যখন জাতীয় সংসদে পাশ হয়েছে, স্বাভাবিকভাবে রাষ্ট্রের দায়িত্বশীলদের একটি ধন্যবাদ জানানো যেতেই পারে। এটা স্বাভাবিক শিষ্টাচারের মধ্যেই পড়ে। এখন যে সভা-মিছিলের উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে, শোনা যাচ্ছে বড় সংবর্ধনার আয়োজন করা হবে- আমরা মনে করি কওমি মাদরাসার যে ইতিহাস-ঐতিহ্য রয়েছে তার সঙ্গে এসব কিছু মানানসই নয়। এর দ্বারা তো লাভের চেয়ে ক্ষতির আশঙ্কাই বেশি।

দেখুন, সনদে স্বীকৃতির বিলেও দারুল উলুম দেওবন্দের আট মূলনীতি অক্ষুণ্ন রাখার কথা উল্লেখ আছে। অথচ ওই আট মূলনীতির একটি হচ্ছে, মাদরাসাগুলো সরকার ও ক্ষমতাসীনদের থেকে দূরে থাকবে। এই নীতির কথা বলার অর্থ সরকারের বিরোধিতা করা নয়। কিন্তু সরকারের সঙ্গে লেগে থাকা, তাদের থেকে সুযোগ-সুবিধা নিতে থাকা, দুনিয়াবি প্রয়োজনে সরকারের কাছে যাওয়া-চাওয়া এটা থেকে আমাদের মুরুব্বিরা দূরে থাকতেন। অবশ্য দ্বীনের কোনো প্রয়োজন ও হিতাকাঙ্ক্ষা সামনে এলে তারা ক্ষমতাসীনদের কাছে গিয়েছেন যথাযথ আত্মমর্যাদা ও সীমানা রক্ষা করে। তাদের এই অমুখাপেক্ষিতার কারণে দেখা গেছে, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান- এসব দেশে সরকারের লোকেরা উল্টো তাদের কাছে যেত। জাতীয় প্রয়োজনে, ব্যক্তিগত প্রয়োজনে আলেমদের কাছে তারা ভিড়ত।

ইসলাম টাইমস : স্বীকৃতি দিয়ে রাষ্ট্র বা সরকার তো আমাদের সম্মানিত করেছে। এ সম্মাননার জবাবে কৃতজ্ঞতা তো প্রকাশ হতে পারে…

মুফতি আবুল হাসান আবদুল্লাহ : কেউ কেউ হয়তো বলছেন, অথবা বলবেন, স্বীকৃতি দিয়ে তারা আমাদের সম্মানিত করেছেন। কিন্তু আসলে কি তাই? নাকি স্বীকৃতিদাতাগণ নিজেরা সম্মানিত হয়েছেনে এবং তারা বরং এর দ্বারা একটি দায়িত্ব পালন করেছেন, এবং মর্যাদাবানদের সম্মান দিয়ে তাদের মর্যাদাও বেড়েছে। মনে রাখতে হবে, স্বীকৃতি নিয়ে বেশি মাতামাতি হতে থাকলে কওমি মাদরাসার নতুন প্রজন্মে বিভ্রান্তি আসতে পারে। মূল লেখাপড়া ও যোগ্যতা অর্জনে মনোযোগ ছেড়ে দিয়ে ওইদিকে মনোযোগ দিতে পারে। আসলে এই বিষয়টিকে এতটা গুরুত্বের সঙ্গে দেখার দরকার নেই। দ্বিতীয় ব্যাপার হচ্ছে, কওমি মাদরাসা কওমের প্রতিষ্ঠান। কওম বা জাতির সব শ্রেণি, সব পক্ষের মানুষ এর সঙ্গে জড়িত। কওমের ফান্ডে এসব মাদরাসা চলে। বিভিন্ন দল-মতের মানুষ এসব মাদরাসাকে ভালোবাসে। কওমি মাদরাসার জন্য আইন তো একটি দলই পাশ করতে পারে, যে-ই করুক, যখনই করুক। এখন যদি কওমি মাদরাসার দায়িত্বশীল ও মানুষেরা একটি দল বা দলের নেতৃবৃন্দকেই অধিক কৃতিত্ব দিতে থাকে, তাদের প্রতিই ঝুঁকে যায়, তা হলে কওমের অন্য দল ও মতের লোকেরা এবং সাধারণ মানুষও বিরক্ত হয়ে উঠতে পারে। এতে ওই দলের লোক ছাড়া অন্য দলের লোক এবং ওই দলের লোকদের অনেকের কাছেও বিষয়টি অপছন্দের হতে পারে। শোনা যাচ্ছে, আলেমদের কেউ কেউ সরকারি দলের মনোনয়নে এবার নির্বাচন করতে যাচ্ছেন। এটি সংশ্লিষ্ট জায়গাগুলোতে ওই দলের লোকদের মধ্যেও বিরাগ ও বিভক্তির সৃষ্টি করবে।

আরেকটা ব্যাপার হলো, কওমি মাদরাসায় আগে কখনো পরীক্ষা ও সনদকে বড় করে দেখা হয়নি। বরং লেখাপড়া, কোরআন-হাদীসের যোগ্যতা, আমল ও তরবিয়তকে বড় করে দেখা হয়েছে। এর ফলে উপমহাদেশজুড়ে মূল ইসলামী উলুমের ধারক-বাহক হয়ে আছেন কওমি মাদরাসার আলেমরা। বিপরীতে আলিয়া মাদরাসার ইতিহাসে স্বীকৃতি, সিলেবাস ও অন্যান্য বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়ার কারণে ইসলামী উলুম থেকে ওই ধারাটি প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। কওমি সনদের স্বীকৃতিকে মুখ্য ও প্রধান কোনো বিষয় মনে না করে কওমি মাদরাসার কাজ হলো, ইলমী বিষয়ে উন্নতির জন্য বেশি থেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া।

ইসলাম টাইমস : সনদের স্বীকৃতি তো হয়ে গেছে। এখন কওমি মাদরাসার সামনে করণীয় কী কী থাকতে পারে?

মুফতি আবুল হাসান আবদুল্লাহ : স্বীকৃতি হয়েছে, মূল্যায়ন হয়েছে, ভালো হয়েছে। আগের মাতিই এখন দায়িত্ব হলো, যে যার কাজ করুন। ইলমচর্চার ঐতিহ্যগত ধারা যেন বজায় থাকে, পরীক্ষায় নিয়ম ও আন্তরিকতা যেন রক্ষা হয়, কোনো বদনাম যেন না হয়, সেদিকে সবার লক্ষ রাখতে হবে। সাজেশন ও গাইড নির্ভর যেন না হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ থেকে ফিরে সংবাদ সম্মেলনে সঠিক একটি কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, মাদরাসা শিক্ষাধারা থেকেই এ দেশে শিক্ষা চালু হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, তারা (আলেমরা) যদি আমার জন্য দোয়া করেন, অসুবিধাটা কী? আমার মনে হয়, এই স্বীকৃতি নিয়ে এতটা উচ্ছ্বাস হয়তো তারাও চান না। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দোয়া পেলে তিনি খুশি আছেন। তিনিও হয়তো আমাদের এত উচ্ছ্বাস চান না। তাই আমাদের উচিত, আমাদের শিক্ষার মৌলিকত্ব, ইলম চর্চার ঐতিহ্যগত ধারা এবং আমাদের পূর্ব-পুরুষদের অনুসরণীয় বৈশিষ্ট্যগুলো ধরে রাখা। সনদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি বা মূল্যায়ন নিয়ে বেশি উচ্ছ্বসিত হলে না সরকারের উপকার হবে; না আমাদের অঙ্গনের কোনো উপকার হবে।

পূর্ববর্তি সংবাদকাকরাইল মাদরাসা : বিশ্বময় ছড়াচ্ছে দ্বীনি শিক্ষার আলো
পরবর্তি সংবাদনাটোরে পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু