হাল্কা বৃষ্টিতেই খোড়াখুড়ির রাস্তায় চরম দুর্ভোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঘূর্ণিঝড় তিতলির প্রভাবে বুধবার থেকেই রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে হাল্কা ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হচ্ছে। আকস্মিক বৃষ্টিতে ছন্দপতন নেমে এসেছে জনজীবনে। বিশেষত দেশের নগরগুলোতে দুর্ভোগের মুখে পড়েছে কাজের টানে বের হওয়া মানুষ। নানান ভোগান্তির শিকার হচ্ছে তারা। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছে নগরের সেসব রাস্তা ও গলিপথের বাসিন্দারা যেখানে সংস্কার বা উন্নয়নমূলক কাজ চলছে দীর্ঘদিন ধরে।

পয়নিষ্কাষণ, বর্জ্য নিষ্কাষণের নালা নির্মাণ ও রাস্তার উন্নয়নের জন্য মাসের পর মাস ধরে মাটি খোড়াখুড়ি চলছে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায়। এমনিতেই নগরের রাস্তাগুলো যান চলাচলের অনুপযোগী ও ধূলোবালির সমস্যায় জর্জরিত। তার সাথে বৃষ্টি যুক্ত হয়ে দুর্ভোগ বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েক গুণ। রাস্তা খোড়াখুড়ির পর জায়গায় জায়গায় স্তুপাকার মাটি প্যাক-কাঁদার সৃষ্টি করছে। এতে চলাচলে অসুবিধায় পড়ছে নারী-শিশুসহ সাধারণ পথচারীরা। স্কুলগামী শিশুরা পিচ্ছিল খাচ্ছে, জামা-কাপড় নষ্ট হচ্ছে তাদের।

রাস্তা চলাচলে সমস্যার মুখে পড়েন বয়স্ক লোকেরাও। কাদা-মাটির আস্তরে ঢাকা রাস্তায় চলতে গেলে পা পিছলে যায় তাদের। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজও ঠিক মতো মসজিদে যেয়ে আদায় করতে পারেন না তারা। বিশেষত ফজর ও এশার সময় অন্ধকার-আধো অন্ধকারে রাস্তাগুলো আরও বিপদজনক হয়ে ওঠে তাদের জন্য।

এ বিষয়ে রাজধানীর পল্লবী, মোহাম্মদপুর, মুগদা, উত্তরা ও পুরানা পল্টনের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে তাদের মিশ্রপ্রতিক্রিয়া জানা গেলো। তাদের অধিকাংশই উন্নয়নের নামে বছরে একাধিকবার রাস্তা খোড়াখুড়িতে বিরক্তি প্রকাশ করেন। তারা বলেন, এক রাস্তা বছরে তিন থেকে চার বারও খোড়া হয়। খোড়ার পর কেউ কেউ ঠিক না করে চলে যায় আবার কোনো কোনো কাজের পর কয়েক মাস সেভাবে পড়ে থাকে। আমরা উন্নয়ন চাই কিন্তু সমন্বয়ের অভাব ও দায়িতজ্ঞানহীনতা চাই না।

রাস্তায় চলাচলকারী একাধিক নারী জানিয়েছেন, তারা শিশুদের নিয়ে পথ চলতে অসুবিধার মুখোমুখি হন প্রায়। বৃষ্টি হলে এবং বৃষ্টি পরবর্তী সময়ে শিশুদের নিয়ে পথচলতে পারেন না। তখন অতিরিক্ত ভাড়া গুণতে হয় তাদের। আবার কোনো কোনো রাস্তায় যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

পুরান ঢাকার আবদুল হালিম বলেন, অনেক সময় দেখা যায় উন্নয়নমূলক কাজ শুরু করার কিছুদিন পর তা থেমে যায়। কাজও শেষ হয় না, জনদুর্ভোগও কমে না। গলিতে যানবহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তখন মালামাল স্থানান্তর ও অসুস্থ্য রোগীদের হাসপাতালে নিতেও সমস্যায় পড়তে হয়। বৃষ্টি হলে মারাত্মক পরিস্থিতির তৈরি হয় পুরো এলাকায়। হেঁটেও চলা যায় না।

শরতের শেষ বেলায় এই বৃষ্টিতে নগরজীবনে স্বাভাবিকভাবে কিছু ছন্দপতন ঘটলেও মাসের পর মাসজুড়ে রাস্তা খোড়াখুড়ির কারণে বৃষ্টি নামলে নগরবাসীর জীবনে চরম ভোগান্তি নেমে আসে। এই ভোগান্তি দূর করতে উদ্যোগী কোনো প্রতিষ্ঠানকে পাওয়া যায় না। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সিটি কর্পোরেশনের একজন দায়িত্বশীলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ঠিকাদার তার সময়-সুযোগ মতো কাজ করছে। আমরা কিছু বলতে পারবো না।

পূর্ববর্তি সংবাদট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানকে দুদকে তলব
পরবর্তি সংবাদজীবনস্মৃতি : বাইরে বৃষ্টির ধোঁয়া