ইসলাম টাইমস ডেস্ক : ভারতের অমৃতসরে রেল দুর্ঘটনায় আহতদের রক্ত দেওয়ার খবর প্রকাশ্যে আসতেই মাদরাসা ছাত্রদের প্রশংসা চলছে দেশজুড়ে।
‘জঙ্গি কারা বুঝুক দেশ! পাঞ্জাবের সবকটি মাদরাসায় জরুরীকালীন ঘোষণা, রেল দুর্ঘটনায় আহতদের রক্ত দিচ্ছে পড়ুয়ারা’। এই শিরোনামে একটি খবর করেছিল টিডিএন বাংলা। সেই খবর মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল সাইটে। টিডিএন বাংলার পাশাপাশি ক্যারাভান ডেইলিসহ জাতীয় স্তরের কিছু মিডিয়া এই খবর প্রকাশ করেছিল। এরপরই ওই মাদরাসা ছাত্রদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হতে দেখা যায় সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাজ্য তথা দেশের মুসলিম নেতাদের।
সোশ্যাল সাইট নেটিজেনরা টিডিএনের খবর শেয়ার করে লেখেন, প্রায় সময়ই মাদরাসাগুলির বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালানো হয়ে থাকে। কখনও বলা হয় সমাজবিরোধী কাজ কারবার হয় মাদরাসায়, আবার কখনও জঙ্গি তৈরির কারখানা উপাধি দিয়ে দেওয়া হয় চোখবুজে। কিন্তু পাঞ্জাবের অমৃতসরে ঘটে যাওয়া রেল দুর্ঘটনায় আহতদের রক্ত দিতে এগিয়ে এলো সেই মাদরাসাগুলিই।
এদিকে মাদরাসা ছাত্রদের এহেন কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করে রাজনীতিবিদ মহিলা নেত্রী নায়েমা আনসারী টিডিএন বাংলাকে বলেন, ‘মাদরাসার ছাত্ৰরা যে কতটা সামাজিক তা অমৃতসরে রক্তদানের ঘটনাই বয়ান করে দিচ্ছে। মাদরাসার ছাত্ররা দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের অংশ নিয়েছিল ‘
তিনি আরও বলেন, মাদরাসা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। দেশের কিছু বিভাজনকারী মানুষ মাদরাসার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার কাজ করে চলেছে।
সম্প্রতি রমযান মাসের রোজা রেখেই রক্তদান করে শিরোনামে এসেছিলেন কলকাতার মেটিয়াব্রুজ এলাকার এক সাহসী যুবক ইমাম আলী মোল্লা। অমুসলিম মেয়ে সৃজিতার জন্য রক্তদান করে ধর্মের ঊর্ধ্বে গিয়ে মানবতার নজির গড়া ইমামও পাঞ্জাবের মাদরাসাগুলির দেদার প্রশংসা করেছেন।
ইমাম বলেন, ‘অপপ্রচারকারীরা ভুলভাল প্রচার করে যাবে। তাঁদের কথায় কান দেওয়ার কিছু নেই। এই মহৎ কাজের জন্য মাদরাসাগুলিকে স্যালুট। মাদরাসা না হয়ে অন্য কোনও সংগঠন হলেও আমি একই মন্তব্য করতাম।’
একই ইস্যুতে মন্তব্য করেছেন মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সদস্য তথা জমিয়ত আহলে হাদীসের কেন্দ্রীয় সভাপতি আসগর আলী বিন ইমাম মেহেদী সালাফী। তিনি টিডিএন বাংলাকে বলেন, মাদরাসাগুলি বহু আগে থেকেই এ ধরনের সমাজসেবামূলক কাজ করে আসছে। আমরা হিন্দু-মুসলিম বুঝি না। আমরা শিখেছি একজনের প্রাণ বাঁচালে সমগ্র মানব জাতিকে বাঁচানোর সমান। আমি নিজেও মাদরাসার ছাত্র।
উল্লেখ্য, অমৃতসরে দশেহরার দিন রাবণ দহনের সময় ঘটে যাওয়া রেল দুর্ঘটনার পর পাঞ্জাবের সবকটি মাদরাসায় জরুরীকালীন ঘোষণা দিয়ে মাদরাসা কতৃপক্ষ বলেছিল তারা এই রেল দুর্ঘটনায় আহতদের রক্তদান করবে। গত শনিবার থেকে রক্তদান শুরুও করে দিয়েছে ওই মাদরাসার শিক্ষার্থীরা। জানা গেছে, মাদরাসাগুলো তাদের ছাত্রদের জন্য জোরালো আল্টিমেটাম জারি করে রক্তদানের নির্দেশ দিয়েছিল।
