মা’কে মিষ্টি খাওয়ানোয় বৃদ্ধ বাবাকে চড়-থাপ্পড় মারল ছেলে!

পশ্চিমবঙ্গে মা’কে মিষ্টি খাওয়ানোর কারণে বৃদ্ধ বাবাকে চড়-থাপ্পড় ছেলের

ইসলাম টাইমস ডেস্ক : বিজয়া দশমীতে নিজের স্ত্রীকে মিষ্টি খাইয়েছিলেন আশি বছর বয়স্ক এক বৃদ্ধ। কিন্তু তার জন্য যে নিজের ছেলের হাতে এভাবে অপদস্থ হতে হবে তা বোধহয় ভাবতে পারেননি তিনি। বাবার কলার চেপে ধরে চড়-থাপ্পড় কিছুই বাদ রাখলেন না সেই গুণধর ছেলে।

জন্ম দেওয়ার পর যে ছেলেকে নিজের কোলে-পিঠে করে বড় করেছেন সেই ছেলের হাতে চড়-থাপ্পড় খেয়েও চুপচাপ দাঁড়িয়ে সহ্য করা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না বৃদ্ধ বাবার। ছেলের হাতে বাবাকে মারের দৃশ্য প্রকাশ্যে আসতেই এখন পুলিশের জালে গুণধর সেই ছেলে।

গত ২০ অক্টোবর ঘটনাটি ঘটে পশ্চিমবঙ্গের উত্তরচব্বিশ পরগনা জেলার অশোকনগর-কল্যাণগড় পৌরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিল্ডিং মোর এলাকায়। বিজয়া দশমীর মিষ্টি মুখ করাতে বৃদ্ধ মানিকলাল বিশ্বাস (৮২) মিষ্টি খাইয়েছিলেন ডায়াবেটিস রোগী তার স্ত্রী বন্দনা বিশ্বাসকে (৭৬)। এই অপরাধেই রুদ্রমূর্তি ধারন করে ছেলে প্রদীপ বিশ্বাস।

স্থানীয় অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার কর বিভাগের কর্মী প্রদীপ বাবার কলার চেপে ধরে এদিক ওদিক চড়-থাপ্পড় মারতে থাকে। আর অসহায় বাবা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তা সহ্য করতে থাকেন। অথচ ঘটনার সময় প্রদীপের স্ত্রী কাছে থাকলেও স্বামীকে থামানোর কোনো উদ্যোগ তিনি নেননি। ছেলের হাতে বাবাকে মারের সেই দৃশ্য দূর থেকে মোবাইল ক্যামেরা বন্দি করে এক প্রতিবেশী। গতকাল মঙ্গলবার থেকে সেই ছবি ভাইরাল রূপ নেয়। মারের ছবি সামনে আসতেই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে বিল্ডিং মোর এলাকায়।

মারের সেই দৃশ্য দেখে স্তম্ভিত হয়ে যান উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার পুলিশ কর্মকর্তারাও। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে দ্রুত গ্রেফতারের নির্দেশ যায় অশোকনগর থানায়। এরপরই বুধবার দুপুরে অভিযুক্ত প্রদীপ বিশ্বাসকে আটক করে পুলিশ। এদিন, অবশ্য প্রথমে সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের সামনে ঘটনা স্বীকার করতে না চাইলেও পরে পুলিশের সামনেই বাবাকে মারধরের ঘটনা স্বীকার করেন প্রদীপ।

তিনি জানান, মা ডায়াবেটিস রোগী, তাকে মিষ্টি খাওয়ানো নিষেধ। কিন্তু তার পরেও বাবা মিষ্টি খাওয়ানোয় মাথায় রাগ চেপে যাওয়াতেই তিনি চড়-থাপ্পড় মারেন। কিন্তু বাবাকে মারধর? এই প্রশ্নের উত্তরে সকলের সামনে হাতজোড় করে ক্ষমা চেয়ে নিয়ে প্রদীপ জানান ভবিষ্যতে আরও কোনদিন এরকম কাজ তিনি করবেন না।

তবে এবারই প্রথম নয়, প্রতিবেশিরা জানিয়েছেন মাঝে মধ্যেই ছেলের হাতে মারধরের শিকার হন বৃদ্ধ মানিকলাল বিশ্বাস।

এদিকে, কান্না ভেজা গলায় মানিকলাল জানান, আমি ছেলের অনুমতি না নিয়ে আমার স্ত্রীকে মিষ্টি খাইয়েছিলাম। এটাই আমার অপরাধ। আমার ছেলে আমাকে জিজ্ঞাসা করতে পারতো যে কেন তাকে না জানিয়ে মিষ্টি দেওয়া হল কিন্তু তা না করে সে আমাকে মারধর করেছে।

পূর্ববর্তি সংবাদউপসচিব হলেন ২৫৬ জন কর্মকর্তা
পরবর্তি সংবাদমিয়ানমারে এখনও চলছে মুসলিম নিধন : জাতিসংঘ