ইসলাম টাইমস ডেস্ক : দীর্ঘ ২৩ বছর কারাভোগ শেষে জেল থেকে মুক্তি পেলেন শামসু। সেইসঙ্গে কারাকর্তৃপক্ষ তাকে একটি ভ্যান দিয়েছেন। মুক্তি পাওয়ার পর ভ্যান পেয়ে কাঁদলেন শামসু।
জেল থেকে বেরিয়ে ভ্যান পেয়ে শামসু বললেন, ২৩ বছর ৭ মাস ৬ দিন কারাগারে কাটিয়েছি। কারাগারে গিয়ে বাবার মৃত্যুর খবর পেয়েছি, রেখে যাওয়া ছয় মাসের শিশুকন্যা মারা গেছে। তীব্র মানসিক কষ্টে দিন কাটিয়েছি। ভুল করে স্ত্রীকে আঘাত করেছিলাম। এতে মারা যায় স্ত্রী। বিষয়টি যখন উপলব্ধি করতে পেরেছি তখন আর সময় ছিল না। একেবারে খালি হাতে কারাগার থেকে বেরে হয়ে কী করব এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ আমার জন্য যে ভ্যানের ব্যবস্থা করেছেন এটি চালিয়ে আমার জীবন কেটে যাবে। এর জন্য তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে তার হাতে ভ্যানের চাবি তুলে দেন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার হালিমা খাতুন।
শামসু রাজশাহী জেলার তানোর পৌর এলাকার গোকুল গ্রামের জালেব দর্জির ছেলে। পারিবারিক বিরোধের জেরে ১৯৯৫ সালের ২২ মার্চ স্ত্রী রূপজান বিবিকে হত্যা করেন শামসু। এ ঘটনায় ১৯৯৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীর দায়রা জজ আদালত-৪ তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেন। একইসঙ্গে দুই হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ২০২৫ সালের ২৪ মার্চ মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল তার। কারাবন্দী থাকাকালীন কার্যবিধি মেনে চলায় ৬ বছর চার মাস ২৬ দিন সাজা মওকুফ করা হয়েছে শামসুর।
বন্দী সংশোধন ও পুনর্বাসন কার্যক্রমের সভাপতি ও সিনিয়র জেল সুপার হালিমা খাতুন বলেন, কারাবন্দী থাকাকালীন শামসুদ্দিন কারাবিধি মেনে চলেছেন। এখানে তিনি কারিগরি ও বৃত্তিমূলক কাজেরও প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে তাকে এই সহায়তা দেওয়া হয়েছে। কারাগার পুরোপুরি সংশোধনাগার। এখানে বন্দিদের সংশোধনে যাবতীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরা তাদের পুনর্বাসন করছি।
