মাওলানা সামিউল হকের হত্যাকারী কে?

ইসলাম টাইমস ডেস্ক ।।  পাকিস্তানের প্রখ্যাত আলেম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম (এস)-এর প্রধান, সাবেক সিনেটর মাওলানা সামিউল হকের হত্যাকারী কে – এ বিষয়ে পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন রকম মতামত। পুলিশি তদন্ত প্রতিবেদন এবং সুস্পষ্ট তথ্য-প্রমাণ না পাওয়া গেলেও সামনে চলে আসছে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য।

সম্ভাব্য হত্যাকারী বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন পুশিল কর্মকর্তা ও মাওলানা সামিউল হকের ছেলের বক্তব্য প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের দৈনিক জং-এর অনলাইন সংস্করণ। সেখানে দাবি করা হয়েছে, হত্যাকারী কাছের কেউ হতে পারে, আবার বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্টদের কথাও উড়িয়ে দেয়া যায় না।

মাওলানার দাফনকাজে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নেওয়া ওই পুলিশ অফিসার দাবি করেছেন, মাওলানাকে হত্যাকারী আততায়ী হত্যার সময় ভয়ংকর বিদ্বেষ ও প্রতিশোধমূলক মানসিকতার আলামত রেখে গেছে। পাশবিক কায়দায় হত্যাকারী তার চেহারা, বুক ও বাহুতে ছুরিকাঘাত করেছে। মর্মান্তিক কষ্টে কষ্টে তার মৃত্যু ঘটানো হয়েছে।

ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এতে মনে হচ্ছে হত্যাকারী কাছের কোনো ব্যক্তি, চেনাজানা কেউ । যে ধীরেসুস্থে বাসায় ঢুকেছে। প্রথমে নিজের পাশবিকতা চরিতার্থ করেছে, এরপর নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করেছে। হত্যাকারীর জানা ছিল, মাওলানা সামিউল হক বাসায় একাই আছেন। মাওলানার দেহরক্ষী গানম্যান ও গাড়ীর চালকও নিরাপত্তার ব্যাপারে নিশ্চিন্ত থাকায় তাঁকে একা ছেড়ে বাইরে চলে যান। এ বিষয়টিও আততায়ী জানতো।

আরও পড়ুন : পাকিস্তানে প্রখ্যাত আলেম মাওলানা সামিউল হককে ছুরিকাঘাতে হত্যা

আরও পড়ুন : মাওলানা সামিউল হকের জানাজা ও দাফন : জোরদার নিরাপত্তা

মাওলানা সামিউল হক ছিলেন আধুনিক শিক্ষিত ও আলেমদের মাঝে এক শক্ত যোগসূত্র। ধারণা করা হচ্ছে, হত্যাকারী খুব কাছের কেউ, যে ঘরের পুরো পরিবেশ সম্পর্কে জানতো। কোনো কোনো সূত্র দাবি করছে, মাওলানা সামিউল হকের হত্যাকাণ্ডের জের আফগানিস্তান পর্যন্ত পৌঁছতে পারে।

শহীদ মাওলানা সামিউল হকের ছেলে মাওলানা হামিদুল হক

এদিকে শহীদ মাওলানা সামিউল হকের ছেলে মাওলানা হমিদুল হক বলেছেন, আফগান সরকার এবং বিভিন্ন বিদেশি শক্তির পক্ষ থেকে আমার আব্বার জীবননাশের আশঙ্কা ও হুমিকি ছিল। আব্বা চাইতেন আমেরিকান আধিপত্য থেকে আফগানিস্তান মুক্ত হোক। মাদরাসা ও জিহাদবিরোধী শক্তি এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত। পুলিশ ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে এসব হুমকির বিষয়ে অবগত করা হয়েছিল।

গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় মাওলানা হামিদুল হক আরও বলেন, দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিভিন্ন সময় আমাদের জানিয়েছে, মাওলানা সামিউল হক আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর টার্গেটে আছেন। আমরা পুলিশ ও নিরাপত্তা সংস্থাকে এসব বিষয় আগেই জানিয়ে রেখেছিলাম। এ কারণেই দারুল উলুম জামিয়া হক্কানিয়া আকোড়াখটকেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল। কিন্তু মাওলানা সামিউল হক রহ. নিজেই নিরাপত্তার বাড়াবাড়ি পছন্দ করতেন না। এজন্য সফরের সময় তাঁর সঙ্গে নিকটজন ছাড়া কোনো নিরাপত্তাকর্মী থাকতো না।

সূত্র : দৈনিক জং অনলাইন

পূর্ববর্তি সংবাদমাওলানা সামিউল হকের জানাজা ও দাফন : জোরদার নিরাপত্তা
পরবর্তি সংবাদতফসিলে বিলম্ব দাবি : আবার সংলাপ চান ড. কামাল