বি-বাড়িয়ায় তাবলিগি মারকাজে হামলা : সারা দিনের থমথমে পরিবেশের পর প্রশাসনের আশ্বাসে শান্ত শহর

নিজস্ব প্রতিবেদক : গতকাল শুক্রবার বি-বাড়িয়া মারকাজ মসজিদে তাবলিগি সাথীদের উপর সাদপন্থীদের হামলার পর সারাদিনের থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছিলো সেখানে। সন্ধ্যার পর বি-বাড়িয়া মারকাজ পরিচালনার দায়িত্ব উলামাদের বুঝিয়ে দিবে মর্মে  প্রশাসনের আশ্বাসে পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে জেলা শহরটির।

গতকালের ঘটনার প্রেক্ষিতে আজ শনিবার মাগরিবের পর প্রশাসনের কাছে ৫ দফা দাবি নিয়ে যান শায়খুল হাদিস মাওলানা সাজিদুর রহমানের নেতৃত্বে বি-বাড়িয়ার শীর্ষ উলামায়ে কেরামের প্রতিনিধি দল।  এ সময় প্রশাসন বি-বাড়িয়া মারকাজের পরিচালনার দায়িত্ব উলামায়ে কেরামকে বুঝিয়ে দেয়ার আশ্বাস দেন।

প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য ও জামিয়া কুরআনিয়া সৈয়দা সাইয়েদুন্নিসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সিনিয়র শিক্ষক মুফতি এনামুল হাসান ইসলাম টাইমসকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী তফসিলের পর কিছু আইনি বাধ্য-বাধকতা তৈরি হওয়ায় উলামায়ে কেরামের সবগুলো দাবি পূরণে অপারগতা প্রকাশ করেছে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার মহোদয়। তারা বলেছেন, আমরা আপনাদের প্রধান দাবি মারকাজের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিবো। কিন্তু এ মুহূর্তে আইনি সীমাবদ্ধতা থাকায় আমরা সবগুলো দাবি পূরণ করতে পারছি না।’

তারা সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, বি-বাড়িয়া মারকাজ এখন থেকে বিবাড়িয়ার তাবলিগের ৬ শুরা সদস্য ও উলামায়ে কেরামের পরামর্শে পরিচালিত হবে।

উলামায়ে কেরামও তাদের অপারগতা কথা বিবেচনা করে এ ইস্যুতে সাধারণ মুসল্লিদের শান্ত থাকার আহবান জানিয়েছেন।

বি-বাড়িয়া জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন মুফতি মোবারক উল্লাহ,  মাওলানা আশেক এলাহী ইবরাহিমী, মুফতি শামসুল হক, মুফতি আবদুর রহিম কাসেমী, মুফতি বোরহান উদ্দিন কাসেমী প্রমুখ। প্রশাসনের পক্ষে জেলা প্রশাসক হায়াৎ উদদৌলা ও পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেনসহ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, আগামী বিশ্ব ইজতেমাকে সামনে রেখে মারকাজ মসজিদে ২৪ ঘণ্টার জোড় চলছিল। মাগরিব নামাজের সময় সাধারণ সাথীরা মসজিদে প্রবেশ করার সময় সাদপন্থীদের ৯০-১০০ জনের একটি বাহিনী অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে সাথীদের ওপর হামলা চালায়।
এ সময় ২৫-৩০ জনের মতো আহত হয়। তাদের মাঝে ৫-৭ জনের অবস্থা গুরুতর।

আশঙ্কজনক অবস্থায় দুইজনকে ঢাকা নিয়ে যাওয়া হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঢাকায় নিয়ে আসা দুইজনের মধ্যে একজনের অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। অন্যজনের সামান্য উন্নতি হয়েছে।

ঘটনার প্রতিবাদে আজ সারা দিন বি-বাড়িয়া শহরের থেমে থেমে বিক্ষোভ করে সাধারণ মুসল্লি ও মাদরাসা ছাত্ররা।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় শহরের তাবলিগি মারকাজ মসজিদে সাধারণ মুসল্লিদের উপর সাদপন্থীদের আক্রমণের প্রতিক্রিয়া জামিয়া ইউনুসিয়ায় জেলার শীর্ষ আলেমদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ৫ দফা দাবি উত্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়। তাহলো, সাদপন্থী আলেম ও হামলার নেপথ্য নায়ক মাওলানা আনিসকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার ও শাস্তি প্রদান, কর্তব্য অবহেলা করায় মারকাজের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এএসপি রেজাউল করিমকে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেয়া, মারকাজ পরিচালনার দায়িত্ব উলামায়ে কেরামকে বুঝিয়ে দেয়া, হামলায় আহতদের সুচিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ দেয়া এবং হামলার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তি প্রদান করা।

পূর্ববর্তি সংবাদসম্পত্তির ভাগ না দেওয়ায় ছেলের হাতে পিতা খুন, আসামি গ্রেফতার 
পরবর্তি সংবাদদুদিনের মধ্যে নির্বাচন বিষয়ে ২৩ দলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত