শীত নামছে শহরের রাস্তায়

আতাউর রহমান খসরু ।।  নভেম্বরের শুরুতে হালকা বৃষ্টিতে আভাস পাওয়া গিয়েছিল শীত আসছে। এরপর প্রতিদিন একটু একটু করে কমছে তাপমাত্রা। সারা দিনের কাঁচা-মিঠে রোদের পর রাতে হালকা শীতের আমেজ। শহরের কোলাহল থামার পর চাদর বিছাতে শুরু করে শীতের কুয়াশা। শেষ রাতে ঘন হয়ে ওঠে। এখন শীতের আঁচ পাওয়া যায় সকালের শহরের রাস্তায়। হালকা শীতবস্ত্র পরছে স্কুলগামী শিশুরা। অফিস-আদালতে বন্ধ হচ্ছে এসির শীতলতা। বাসা-বাড়িতে কমছে ফ্যানের গতি।

শহরের পথে-ঘাটে বসছে শীতবস্ত্রের পসরা। রঙ-বেরঙের শীতের পোশাক উঠছে সেখানে। হালকা শীতের মতোই হালকা শীতবস্ত্রগুলোই বিক্রি হচ্ছে এখনও। শীতের মোজা, হাতাওয়ালা গেঞ্জি, শিশুদের জন্য গেঞ্জি কাপড়ের জামা-পায়জামা দিয়েই সাজানো হচ্ছে পথের ধারের পসরাগুলো। ভারী শীত নামলেই উঠানো হবে শীতের ভারি কাপড়।

মার্কেট বা শপিংমলের বস্ত্রবিতানেও লেগেছে শীতের ছোঁয়া। সেখানে মোজা, গেঞ্জি, টুপির সাথে দেখা যাচ্ছে ছেলেদের কোট আর মেয়েদের হালকা চাদর।

পিঠা-পুলি ছাড়া বাঙালির শীত জমে না কখনও। গ্রামের মতো হরেক রকমের পিঠার আয়োজন দেখা যায় না শহরে। তবে পিঠার উষ্ণ ভাঁপ থেকে একেবারে বঞ্চিত না সে-ও। শহরের গলিতে শীতের আগমনি বার্তা দেয় পিঠার দোকানগুলো। ছোট ছোট আয়োজনের এসব দোকানে পাওয়া যায় ভাঁপা ও চিতই পিঠা। ভাগ্য ভালো হলে মিলতে পারে পাটিসাপ্টা ও তেলেভাজা আরও কিছু পিঠা।

গলিতে গলিতে শুরু হয়েছে পিঠা-পুলির আয়োজন। ভীড়ও বাড়ছে সেখানে। হরেক রকম ভর্তা ঝালঝাল গন্ধ ও গুড়ের মিষ্টি সৌরভ মোহিত করছে ভোক্তাদের ।

শহরের সবজি বাজারগুলোও হাসছে সবুজ সুন্দরে। গ্রাম থেকে শহরবাসীর জন্য আসছে সবুজ সাওগাত। শীতের নতুন সবজি। শিম, ফুলকপি, বাধাকপিসহ শীতের শাক-সবজি এখন পাওয়া যাচ্ছে শহরের বাজারে, সবজি বিক্রেতার ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে।

অন্যদিকে সবুজ হারাচ্ছে শহরের বাগান ও পার্কগুলো। পাতা ঝরতে শুরু করেছে সড়কের সবুজ গাছগুলোর। তবে শহরবাসীর মধ্যে প্রাপ্তির আনন্দটাই বেশি। নগরের অসহনীয় তাপমাত্রার পর শীত যেন স্বস্তির বার্তা নিয়ে এসেছে শহরবাসীর কাছে।

অবশ্য বাংলার গ্রামে-গঞ্জে শীত নেমেছে আরও আগেই। মধ্য অক্টোবর থেকেই গ্রামের পথে-ঘাটে, ঘরের চালে চুপিচুপি নামতে শুরু করে শীত। আর এখন শহর ছেড়ে গ্রামে পা রাখলেই টের পাওয়া যাবে পুরো দস্তুর শীতের রাজ্য সেখানে।

শীতের এইসব নরম আয়োজনের সাথেই আবার লেপ্টে থাকে গরিবির কনকনে দু:খ। মোটা কাপড় আর এক প্রস্থ কম্বলের অভাব। ছাদহীন ঘরে শুয়ে থাকা মানুষের উজাড় হওয়া ঘুম। সহানুভূতির ছোঁয়া না পেলে শীতে তাদের দুর্ভোগেরও অন্ত থাকে না। নগর ও গ্রামের শীতে এইসব দু:খী মানুষদের জন্যও তাই দরকার উদ্যোগী মানবিক মানুষের কিছু প্রস্তুতি।

পূর্ববর্তি সংবাদকুমিল্লায় ৮ হাজার পিস ইয়াবা আটক, হিজড়াসহ গ্রেফতার ৩
পরবর্তি সংবাদঅবৈধ সম্পদ অর্জনকারীদের ভোট দেবেন না : দুদক চেয়ারম্যান