ইসলাম টাইমস ডেস্ক : দুই শিক্ষার্থীর কাছ থেকে দিনদুপুরে ছিনতাই করতে গেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পাঁচ শিক্ষার্থীকে হাতেনাতে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মীরা। রোববার (২৫ নভেম্বর) দুপুর দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটক শিক্ষার্থীরা হলেন— বাংলা বিভাগের আসিফ আহমেদ, সজিব গাজী, লোক প্রশাসন বিভাগের ইয়া রাফিউ শিকদার, মুস্তাফিজুর রহমান, সোহেল রানা। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। এর আগেও তাদের বিরুদ্ধে সাংবাদিক মারধর, ছাত্রী লাঞ্ছনা ও ছিনতাইর অভিযোগ রয়েছে এবং এর জন্য তারা শোকজ ও বিচারাধীন রয়েছে।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ছিনতাইয়ের শিকার মো. জাহেদুর রহমান অর্ণব। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সান্ধ্যকালীন এমবিএ’র শিক্ষার্থী।
অভিযোগপত্র ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রোববার অভিযোগকারী ও তার বান্ধবী ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসেন। দুপুর ১টার দিকে তারা জাবি বোটানিকাল গার্ডেনের দিকে গেলে আটক শিক্ষার্থীরা তাদের পথ আটকায়। পরে আটক শিক্ষার্থীরা ওই দুজনকে বোটানিকাল গার্ডেনের ভেতরে নিয়ে যায়। এ সময় তারা অভিযোগকারীর কাছ থেকে সবকিছু ছিনিয়ে নেন এবং তার বান্ধবীর কানের দুল ছিনতাই করেন। পরে অভিযোগকারী শিক্ষার্থীকে মারধর করে ২৫ হাজার টাকা দাবি করেন।
খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ হোসেন হলের শিক্ষার্থীরা সেখানে গেলে তাদেরকেও শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত করেন আটক শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর আলাদা অভিযোগ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ হোসেন হলের শিক্ষার্থীরা।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আটক শিক্ষার্থীরা জানান,তারা বোটানিকাল গার্ডেনের ভেতরে হাঁটছিলেন। অভিযোগকারীদের আপত্তিকর অবস্থায় দেখে আটক শিক্ষার্থীরা তাদের পরিচয় জিজ্ঞাসা করলে তারা নিজেদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে দাবি করেন। বিভাগ, ব্যাচ ও হলের নাম জিজ্ঞাসা করলে তারা উত্তর দিতে পারেননি। এ সময় অভিযোগকারী ভয়ে দৌঁড় দেন। পরে অভিযোগকারীর পরিচিত ক্যাম্পাসের সিনিয়র ভাইয়েরা এসে আটক শিক্ষার্থীদের মারধর করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সিকদার মো. জুলকারনাইন বলেন, ‘আটককৃতরা ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত ছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। তাদেরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদন তৈরির প্রক্রিয়া চলছে। আগামীকাল ডিসিপ্লিনারি বোর্ডের জরুরি সভা আহ্বান করা হয়েছে। প্রয়োজন হলে ভিসি ম্যাম জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহ্বানের মাধ্যমে তাদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা প্রদান করবে।
আটককৃতরা ছাত্রলীগের পরিচয় দিলে এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো.জুয়েল রানা বলেন, ‘ছিনতাইকারী যেই হোক তাদের বিচার দাবি করছি। কোনো অপরাধী বাঁচার জন্য ছাত্রলীগের পরিচয় দিলে তা আমাদের জন্য লজ্জাজনক।’
