ইসলাম টাইমস ডেস্ক : পাকিস্তানের জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও মুত্তাহিদা মজলিসে আমাল-এর প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমান বলেন, আমাদের দেশের শাসকবর্গ আমাদের প্রতিনিধি নয়। তারা বিভিন্ন ইহুদী লবির এজেন্ট এবং পশ্চিমাদের প্রতিনিধি। যে সরকার পশ্চিমাদের ইশারায় নাচে, ইহুদিদের সমর্থন পেয়ে নবীর অবমাননাকারী নারীকে খালাস দেয়, সে সরকারের ক্ষমতা টিকতে পারে না। আমার যদি শক্তি থাকত তা হলে এক দিনের জন্যেও এই সরকারকে ক্ষমতায় থাকতে দিতাম না।
রবিবার (২৫ নভেম্বর) পাকিস্তানের সুক্কর এলাকায় তাহাফফুযে খতমে নবুয়ত উপলক্ষে মিলিয়ন মার্চ অনুষ্ঠিত হয়। লাখও মানুষের সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
মাওলানা ফজলুর রহমান বলেন, এ সরকারের প্রতি আমাদের বিলকুল শ্রদ্ধা নেই। এ সরকার এসেই সর্বপ্রথম খতমে নবুয়তের ওপর হামলা করেছে। এই সরকার ইসলাম ও পাকিস্তানের দুশমন। ক্ষমতায় আসতে না আসতেই তাদের কথিত বুদ্ধিজীবীরা ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা শুরু করে দিয়েছে। ইসরাইলের বিমানে করে কে এসেছে, কার সাথে দেখা করেছে, কার সাথে কী কথা বলেছে- এগুলো কেন অস্পষ্ট রাখা হল?
তিনি আরো বলেন, আমাদের মূল বিষয় হল, সুপ্রিম কোর্টের রায় আসার পরও কি আমরা আর ভাবতে পারি, পাকিস্তান একটি স্বাধীন রাষ্ট্র? যদি সরকার এবং তার লোকজন জাতিসংঘের চাপের মুখে নিজেদের আদর্শিক পরিচয়কে মুছে ফেলে এবং নিজেদের জাতিকে প্রত্যাখ্যান করে পশ্চিমা জাতিকে খুশি করার জন্যে রায় দেয় তাহলে তো পাকিস্তানের স্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ হবেই। আজ পাকিস্তানের ইসলামি পরিচয়কে পরিবর্তন করে ফেলা হচ্ছে। যে কালিমার অস্তিত্বের ওপর পাকিস্তানের জন্ম, সেই কালিমার মর্মই এখন পরিবর্তনের অপচেষ্টা চলছে।
মাওলানা ফজলুর রহমান বলেন, এই নজিরবিহীন প্রতিবাদ সভা এবং এই মিলিয়ন মার্চে সাধারণ মানুষের ব্যাপক অংশ গ্রহণ এগুলো অর্থহীন নয়। এগুলো জাতির সামনে একটি চ্যালেঞ্জ। জাতি বুঝতে পারছে, আমাদের শাসকরা কোনোভাবেই আর আমাদের প্রতিনিধি নয়, তারা এখন পশ্চিমাদের প্রতিনিধি, ইহুদিদের এজেন্ট। আমরা তাদের বলতে চাই, দেশের জনগণ জন্তু-জানোয়ার নয়, তারা মানুষ। তারা একটি জাতি। আমি পূর্ণ আস্থার সাথে বলব, আমরা পাকিস্তানকে কিছুতেই পশ্চিমাদের কলোনী হতে দেব না।
তিনি বলেন, আজ পাকিস্তান বিশ্বের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দাসে পরিণত হয়েছে। সত্তর বছর ধরে যারা শাসন করছে তাদের অপকর্মের শাস্তি ভোগ করতে হচ্ছে আজ জনগণকে। এই খেলা আর কত দিন চলবে? আজ মিডিয়া স্বাধীন নয়। মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করা এক নায়কতন্ত্রের লক্ষণ।
তিনি আরও বলেন, আপনি (ইমরান খান) দেশকে যে দিকে নিয়ে যাচ্ছেন, এ পথে দেশ রক্ষা করা যাবে না। আফগানিস্তান ইরাক লিবিয়া থেকে শিক্ষা নিন। এটা স্বীকার করুন, পাকিস্তানের দ্বীনী জামাতগুলো পাকিস্তানকে ইরাক আফগানিস্তানের পরিণতি থেকে বাঁচিয়েছে। পাকিস্তানের ওপর দয়া করুন। আর কত কাল আপনি আমাদের সবর ও সহ্যের পরীক্ষা নেবেন?
তিনি বলেন, “আজ শিখদের রাস্তা দেওয়ার নামে করিডোর খোলা হচ্ছে। একদিকে চীনের ৪৬ বিলিয়ন ডলারের চুক্তিকে উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, চীন ও পাকিস্তানের যৌথ লাভকে জলাঞ্জলি দেওয়া হচ্ছে, আরেক দিকে ইন্ডিয়াকে করিডোর দেওয়া হচ্ছে।
মাওলানা ফজলুর রহমান বলেন, আমরা পাকিস্তানের আদর্শিক পরিচয় পরিবর্তন হতে দিতে পারি না। গোটা জাতি আজ আদালতের রায়কে প্রত্যাখ্যান করেছে। এই রায়ে উল্লসিত হয়েছে ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডা, ইসরাইল আর মর্মাহত হয়েছে গোটা মুসলিম জাহান। এ দেশের আসল স্বাধীনতা তখনই অর্জিত হবে যখন আমরা স্বাধীন জাতির মতো নিজেরাই নিজেদের সিদ্ধান্ত নিতে পারব।
সূত্র : ডেইলী জং, নিউজ এক্সপ্রেস
