আবরার আবদুল্লাহ ।।
গতকাল ইজতেমার মাঠের দখল পেতে সাংবাদিক সম্মেলন করে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেন মাওলানা সাদপন্থী তাবলিগিরা। তারা মাঠের দখল পেতে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন। তবে প্রশাসন সহযোগিতা না করলে গায়ের জোরে মাঠ দখলের চেষ্টা করবেন বলেও হুমকি দেন তারা।
সাংবাদিক সম্মেলনে সাদপন্থীরা উলামায়ে কেরামের অনুসারী তাবলিগি মুরব্বি ও সাথীদের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ উত্থাপন করেন।
তারা সাংবাদিক সম্মেলনে দাবি করেন, উলামায়ে কেরাম মাদরাসার ছাত্র দিয়ে অবৈধভাবে মাঠ দখল করে রেখেছেন এবং তাদের কাজে বাধা দিয়ে উলামায়ে কেরাম মূলত দ্বীনের কাজেই বাধা দিচ্ছেন। তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে।
এ সময় তারা প্রশাসনকেও অভিযুক্ত করে একাধিক মন্তব্য করেন।
তাদের অভিযোগের উত্তর জানতে যোগাযোগ করেছিলাম মুফতি কেফায়াতুল্লাহ আজহারি এবং তাবলিগের পুরাতন সাথী কুড়িলের ডা. শাহাবুদ্দিন ও মাণ্ডার হাজি রফিকুল ইসলামের সাথে।
মুফতি আজহারি মাদরাসার ছাত্র দিয়ে ইজতেমার মাঠ দখল করে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মাদরাসার ছাত্র দিয়ে মাঠ দখল করে রাখা হয়নি। যারা অভিযোগ করছে তারাও যদি মাঠে আসেন তবে দেখবেন মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সংখ্যা খুবই কম। ধরুন! প্রতি ৭ হাজারে ৫ শতও হবে না। মাদরাসার ছাত্র যারা আসছেন, তারা তাদের নিয়মিত আমলের অংশ হিসেবেই আসছেন।
আর ড. শাহাবুদ্দিনের ভাষায় এটি ১২০% মিথ্যা কথা। তারা উভয় দাবি করেন তাবলিগের সাথীরাই নিয়মিত কাজ করছেন মাঠে।
মুফতি কেফায়াতুল্লাহ আজহারি আরও বলেন, ‘যারা অভিযোগ করছেন, তারাও জানেন এই সময় প্রতিবছর অধিক সংখ্যক সাথী মাঠে অবস্থান করেন। ইজতেমার জন্য মাঠ প্রস্তুত করার বিষয়টি এখনই হয়ে থাকে।’
হাজি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ইজতেমার মাঠ অনেক বড়। এই মাঠ পাহারা দেয়ার জন্য সারা বছরই এখানে লোক থাকে। অন্তত ৪-৫ হাজার মানুষ সব সময় ইজতেমার মাঠে থাকে। আর প্রয়োজনের সময় আরও বেশি সাথী একত্র হয় এখানে। এখন প্রয়োজন তাই সাথীরা মাঠে এসেছেন।’
মুফতি আজহারি ‘অবৈধভাবে দখল’ শব্দের তীব্র প্রতিবাদ করে বলেন, ‘কাকরাইল মসজিদ ও ইজতেমার মাঠে তারাই কাজ করবে যারা দ্বীনের সহি ধারার উপর প্রতিষ্ঠিত। যারা শরিয়তের উপর ব্যক্তির অনুসরণকে প্রাধান্য দিয়েছে এবং শরিয়ত বিরোধী কাজ করছে তাদের অবস্থানই তো অবৈধ হবে। কারণ, এই জায়গা দুটো দ্বীনের মারকাজ।’
আরও পড়ুন : গায়ের জোরে ইজতেমার মাঠ দখলের ষড়যন্ত্র সাদপন্থীদের!
তাদেরকে ধর্মপালনেও বাধা দেয়া হচ্ছে না দাবি করেন মুফতি আজহারি। তিনি বলেন, ‘যারা শরিয়তের মূলনীতি থেকে সরে যায় তাদের কাজকে দ্বীনি কাজ বলা যায় না। বরং উলামায়ে কেরামের ভাষায় তারা দ্বীনের ক্ষতি করছে। আর দ্বীনের ক্ষতি তো করতে দেয়া যাবে না। উলামায়ে কেরাম দ্বীনের রাহবার হিসেবে দ্বীনের হেফাজত করছেন।’
তবে মাঠ দখলের জন্য সাদপন্থীরা এলে তারা লাঠির বদলে লাঠি ধরবেন না বলে জানিয়েছেন মুফতি আজহারি। তিনি বলেছেন, ‘লাঠির পরিবর্তে লাঠি ধরা আমাদের উসুল (মূলনীতি) না। আমরা আল্লাহর কাছে কান্না-কাটি করবো। প্রশাসনের সহযোগিতা চাইবো যেন কেউ ফেতনা না করতে পারে এবং আমাদের মুরব্বিদের পরামর্শে চলবো। বিশেষত কাকরাইলের পাঁচ ফায়সাল মাওলানা মুহাম্মদ যোবায়ের, মাওলানা রবিউল হক, মাওলানা মুহাম্মদ হোসাইন, মাওলানা ফারুক ও মাওলানা ওমর ফারুক; তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা চলবো। আমরা আসমান থেকে ফায়সালা আশা করি।
