টঙ্গী মাঠে অনুষ্ঠান না করার ইসির নির্দেশনার পরও সাদপন্থীরা কীভাবে ঢুকলো?

ইসলাম টাইমস ডেস্ক : সাদপন্থী তাবলিগি নেতা সৈয়দ ওয়াসিফ ইসলামের লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে ২৯ নভেম্বর রাতে নির্বাচনের আগে টঙ্গীর মাঠে কোনো ধরণের অনুষ্ঠান না করার  নির্দেশনা জারি করে ইসি। তারপরও সাদপন্থিরা কোন দাবিতে ও  কোন অনুষ্ঠানের জন্য কীভাবে টঙ্গী মাঠে ঢুকলো, প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে আলমী শুরার তাবলিগি সাথীদের মধ্যে। তারা এ প্রশ্নও করছেন,ইসির এ নির্দেশনা গাজীপুরের প্রশাসনের হাতে  থাকার পরও লাঠিসোটা নিয়ে মারমুখি সাদপন্থিদের কীভাবে টঙ্গী ইজতেমার মাঠে ঢুকতে দেওয়া হল? ইসির এই নির্দেশনা তাহলে কোন উদ্দেশ্যে জারি করা হয়েছে?

জানা গেছে, সাদপন্থি তাবলিগি নেতা সৈয়দ ওয়াসিফ ইসলাম প্রধান নির্বাচন কমিশোর বরাবর আবেদন জানিয়ে বলেন, নির্বাচনের আগে যেন টঙ্গীমাঠে কোনো অনুষ্ঠান না করা না হয় সে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।ওই আবেদনে তিনি আশঙ্কা ব্যক্ত করে বলেন, নির্বাচনের আগে টঙ্গী ইজতেমা মাঠে জোড় কিংবা তাবলিগের কোনো অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হলে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি হতে পারে। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতেই ২৯ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নির্দেশনা জারি করে বলা হয়-টঙ্গীর মাঠে নির্বাচনের আগে কোনো অনুষ্ঠান করা যাবে না।

৩০ নভেম্বর ওই নির্দেশনার খবর ইসলাম টাইমসসহ  বিভিন্ন অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশ হয়।

পল্লবীর তাবলিগি সাথী হেলাল আহমদ বলেন, টঙ্গীর মাঠে আলেমদের নেতৃত্বে আলমী শুরার সাথীরা অবস্থান করছিলেন। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে তাদের জোড় অনুষ্ঠানের কথা ছিল। কিন্তু সাদপন্থিরা চাচ্ছিলেন, টঙ্গীর মাঠে ৩০ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত  জোড়  অনুষ্ঠান করতে। সাদ বিরোধী তাবলিগি সাথীদের অবস্থানের কারণে মাঠে তারা ঢুকতে পারছিল না। তাই অপর পক্ষের জোড় বন্ধের জন্যই নির্বাচন কমিশনের কাছে সব অনুষ্ঠান বন্ধের আবেদন জানান সাদপন্থিদের নেতা ওয়াসিফ ইসলাম। সে হিসেবে ইসি অনুষ্ঠান বন্ধের  নির্দেশনাও জারি করে। কিন্তু এতেও মন ভরছিল না সাদপন্থিদের। তারা নিজেদের জোড়ে শরিক হওয়ার নামে টঙ্গীর ময়দানে আক্রোশ মেটানোর জন্য লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালিয়েছে।যাকে যেখানে পেয়েছে বেদম প্রহার করেছে। তিনি বলেন, তাদের আচরণে বোঝাই যায়নি যে নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে টঙ্গী মাঠে কোনো রকম অনুষ্ঠানের ব্যাপারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাবলিগ জামাতের একজন মুরব্বি বলেন, টঙ্গীর মাঠে কোনো  অনুষ্ঠান না করার ইসির নির্দেশনা আমলে নিয়ে আলমী শুরার  মুরব্বিরা সিদ্ধান্ত  নিয়ে রেখছিলেন ঘোষিত সময়ে জোড় অনুষ্ঠান হবে না।  সাদ বিরোধী তাবলিগের মুরব্বিরা ওই নির্দেশনা মেনে চলার সিদ্ধান্ত সবাইকে জানিয়েও দিয়েছিলেন। ময়দানে শুধু সাধারণ তালীম ও আমল চলছিল। এর মধ্যেই আজ  সাদপন্থিরা নৃশংসভাবে হামলা করলো। দ্বীনদার কোনো মানুষ অপর দ্বীনদার মানুষের ওপর এভাবে হামলা করতে পারে,এটা অকল্পনীয়।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, তাহলে নির্বাচনের আগে ইজতেমা-মাঠে সব ধরনের অনুষ্ঠান বন্ধের নির্দেশনা কোন উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়েছিল? সাদপন্থিরাই বা কোন উদ্দেশ্যে মাঠে প্রবেশ করেছিল? নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন তাদের এই হঠকারী আচরণ ও আক্রমণের ব্যাপারে কি কোনো পদক্ষেপ নিবে?

এদিকে টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে সাদপন্থিদের নৃশংস হামলার পর উদ্ভুত পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও আশু করনীয় নির্ধারণে শনিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে হামলার ঘটনা নিয়ে তদন্তের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।

পূর্ববর্তি সংবাদসুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য গ্রেফতার ও মামলা বন্ধ করতে হবে : শামসুল হুদা
পরবর্তি সংবাদগুজব ঠেকাতে জেলায় জেলায় মিডিয়া সেল গঠন করবে পুলিশ