ইসলাম টাইমস ডেস্ক : টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে সাদপন্থীদের উগ্র ও ন্যাক্কারজনক হামলায় সারা দেশে তাদের প্রতি ঘৃনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাধারণ দীনদার মানুষ ও তাবলিগি সাথীরা চোখের সামনে শত শত আহত মানুষ দেখে বলার মতো কিছু খুঁজে পাচ্ছেন না। সবশ্রেণির মানুষ ভাষা হারিয়েছেন।
‘একসঙ্গে রক্তাক্ত জখমের এত রোগী টঙ্গী হাসপাতালে কখনো আসেনি। আমরা সবাই মিলে এদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছি।’
টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে সাধারণ তাবলিগী সাথী, ওলামায়ে কেরাম ও মাদরাসা ছাত্রদের ওপর সাদপন্থীদের নগ্ন হামলার আহত রোগীদের পরিমাণের কথা মিডিয়ার কাছে এভাবেই বর্ণনা দিয়েছেন টঙ্গী সরকারি হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. পারভেজ হোসেন।
জানা গেছে, দিল্লির মাওলানা সাদ ইসলামের ঈমান-আকীদা বিরোধী বিভিন্ন মন্তব্য করে ইতোমধ্যে সারা বিশ্বে সমালোচিত ও প্রত্যাখাত। এরই ধারাবাহিকতায় তাবলিগের বিশ্ব মুরুব্বি ও বাংলাদেশের ওলামায়ে কেরাম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন- বাংলাদেশে মাওলানা সাদের বিভ্রান্তিমূলক-তাবলিগি কার্যক্রম চালানো যাবে না।
এদিকে পরামর্শক্রমে টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে তাবলিগি জোড় করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বাংলাদেশের ওলামায়ে কেরাম ও তাবলিগ সাথীরা। তাদের জোড়কে বানচাল করা এবং আগামী বিশ্বইজতেমাকে প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে গত ৩০ নভেম্বর শুক্রবার থেকে ৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার পর্যন্ত ৫ দিনব্যাপী জোড় করার ঘোষণা দেয় সাদপন্থীরা। এ জন্য তারা সারা দেশ থেকে ঢাকায় আসে এবং বিভিন্ন মসজিদে অবস্থান করে।
পরে শনিবার (১ ডিসেম্বর) সকালবেলা টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে একত্র হয়ে তারা গেট ভেঙ্গে সন্ত্রাসী কায়দায় বাঁশ, ইট-পাটকেল নিয়ে নিরীহ নিরস্ত্র এবং আমলে-মগ্ন তাবলিগি সাথী, ওলামায়ে কেরাম ও মাদরাসা ছাত্রদের ওপর নৃশংসভাবে হামলা চালায়।এতে কয়েক হাজার সাধারণ তাবলিগী সাথী, ওলামায়ে কেরাম ও মাদরাসা ছাত্র চরমভাবে আহত হয়েছেন। তাদের অনেকের মাথা ফেটে গেছে, হাত-পা ভেঙ্গে গেছে। অনেকে রক্তাক্ত ও জখম হয়েছেন ভীষণভাবে।
প্রত্যক্ষদর্শী উত্তরার বাসিন্দা মাসউদ হাসান জানান, টঙ্গী সরকারি মেডিকেল হাসপাতাল ও বাংলাদেশ মেডিকেল উত্তরা হাসপাতালে হাজারের ওপর আহত ব্যক্তি প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। যাদের অবস্থা গুরুতর মনে হয়েছে, ডাক্তাররা তাদের ঢাকা মেডিকেল ও পঙ্গু হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছেন। এ ছাড়া টঙ্গী ইজতেমা মাঠের আশপাশের বিভিন্ন মাদরাসায় অবস্থান করে অনেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।
তা ছাড়া যেসব এলাকার ছাত্র ও তাবলিগি সাথীরা ইজতেমার মাঠে তাবলিগের কাজ করার জন্য গিয়েছেন তাদের অনেকেই নিজ নিজ এলাকায় ফিরে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ ঘটনায় নিহত হয়েছেন একজন। আহত হয়েছেন হাজারেরও অধিক লোক। আহতদের সবাই এখনো নিজ নিজ এলাকায় এসে পৌঁছাননি।
