টঙ্গীর হামলার জন্য সামীম আফজালও দায়ী করলেন সাদপন্থীদের (ভিডিও-সহ)

আবরার আবদুল্লাহ ।।

টঙ্গীর ইজতেমার মাঠে নিরীহ নিরস্ত্র তাবলিগি সাথী, উলামায়ে কেরাম ও মাদরাসা ছাত্রদের উপর সাদপন্থীদের নৃশংস হামলার দায় স্বীকার করে নিলেন সাদপন্থী আলেম মাওলানা আশরাফ আলী।

গতকাল ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির এক টকশোতে কথার এক পর্যায়ে টঙ্গীর ইজতেমার মাঠের ঢোকা এবং নিরীহ নিরস্ত্র ছাত্রদের উপর আক্রমণের কথা স্বীকার করে নেন। টকশোর সঞ্চালক খালিদ মহিউদ্দিন প্রশ্ন করেন, ‘আপনারা নিরস্ত্র নিরীহ ছাত্রদের উপর হামলা করেছেন। এটা কী ঠিক? আপনারা গেট ভেঙ্গেছেন। উত্তরে মাওলানা আশরাফ আলী সম্মতি দিয়ে বলেন, ‘গেট তো ভাঙ্গতে হয়েছে।’

টকশোর অপর অতিথি ছিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজাল। তিনি এক প্রশ্নের উত্তরে মাওলানা আশরাফ আলীর কথার সূত্র ধরে তিনি বলেন, ‘যেহেতু একজন মানুষ মারা গেছে  অবশ্যই মামলা হওয়া দরকার। কিন্তু মাওলানা আশরাফ আলী সাহেবের কথা অনুসারে প্রথমেই তারা দায়ী হয়ে যাবেন। কারণ, তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন তারা গেট ভেঙ্গে ঢুকেছেন এবং মাঠের ভেতর যারা ছিলেন তাদের উপর আক্রমণ করেছেন।’

এ সময় সামীম আফজাল বলেন, আগ থেকে কেউ মাঠ দখল করে থাকলেও তারা (সাদপন্থীরা)  আইনের আশ্রয় নিতে পারতেন। কিন্তু তারা আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে ভুল করেছেন। এ সময় বিতর্কিত মাওলানা সাদকে বাদ দিলেই হয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মাওলানা আশরাফ আলী শুধু ছাত্রদের উপর আক্রমণ করার কথাই স্বীকার করেননি; বরং এই ঘটনার সঙ্গে তার দীর্ঘ সম্পৃক্ততার প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। তার বক্তব্য শুনলে যে কেউ বুঝতে পারবেন যে, এই নৃশংস হামলার তদন্তের জন্য তাকে আটক করলে গুরুত্বপূ্র্ণ অনেক তথ্য পাওয়া যেতে পারে। যেমন, তিনি বলেন, ‘ঘটনার প্রেক্ষাপট আমি জানি। এ ক্ষেত্রে আমার অনেক কাজ করতে হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যেদিনের ঘটনা তার আগের দিন রাতের কথা। গাজীপুরের পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে আলাপ হয়। কারণ, তার কাছে আমাদের বারবার যেতে হয়েছে।’

তার এই কথায় প্রশাসনের সঙ্গে আঁতাতেরও গন্ধ পেয়েছেন অনেক বিশ্লেষক।

সাদপন্থীরা জোড় করার জন্য মাঠ দখল করতে গিয়েছিলো দাবি করলেও তারা যে মূলত তাবলিগি সাথী, উলামায়ে কেরাম ও মাদরাসার ছাত্রদের পরিকল্পিত হামলা করতে গিয়েছিলো তার প্রমাণ আগেই পাওয়া গিয়েছিলো। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন হলো, জোড় করতে গেলে তারা কেন ‘সামানা’ (প্রয়োজনীয় আসবাব) নিয়ে গেলো না? আর মাঠ দখলের পর তা দুই ঘণ্টার মধ্যে ছেড়ে দিলো?

টকশোতে মাওলানা আশরাফ আলীও কথা থেকেও বোঝা যায় তারা মূলত উলামায়ে কেরামের উপর হামলা এবং তাদেরকে মাঠ থেকে উচ্ছেদ করার পরিকল্পনা নিয়ে গিয়েছিলো। তিনি তাদের চাওয়া-পাওয়া সম্পর্কে বলেন, ‘যেহেতু আমরা দুটি পক্ষ হয়ে গেছি সুতরাং একটি পক্ষ করলে অপর পক্ষের করার অধিকার পাওয়া দরকার। না পেলে উভয়পক্ষের না পাওয়া দরকার। আর সেটা তখনও সম্ভব যখন মাঠটা উভয়পক্ষ থেকে মুক্ত করে সরকারের নিয়ন্ত্রণে যাবে।’

হয়েছেও তাই। তারা মাঠ দখল করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে চলে গেছে।

একটি ছোট্ট ভিডিও। মাত্র কয়েক মিনিটের। কিন্তু কয়েক হাজার ঘন্টার ঘটে যাওয়া এবং আগামীতে ঘটতে পারে এমন সব ম্যাসেজ এখান থেকে উদ্ধার সম্ভব। প্রথম ম্যাসেজ – এতায়াতের নামে সাধারণ সাথীদের ব্যবহার করে মাওলানা সা'দ সাহেবের এজেন্টরা কী করেছে কী করতে চাচ্ছে,তা এখানে ক্লিয়ার। এতায়াতি মাওলানা আশরাফ আলী সাহেবের বয়ান শুনলেই বুঝা যায়। ★তারা ১লা ডিসেম্বর জোড়ের জন্য নয়,অপর পক্ষকে সড়াতেই গিয়েছেন। ★তাবলীগ জামাতের কী হল না হল এটা তাদের কাছে মূল নয়। মূল হল,সা'দ সাহেব ব্যক্তি। ★মাদরাসার ছাত্র শিক্ষকদেরকে তারা সবসময় বহিরাগতই মনে করেন,হয়ত আগামীতেও এমনই মনে করবেন। ★ এতবড় একটি রক্তাক্ত ঘটনায় তিনি সামান্যও অনুতপ্ত নন। বরং তার চেহারার হাস্যোজ্জ্বল ভাব প্রমাণ করে আমরা জিতেছি। বুঝা যায় তারা লড়াইটা চালিয়েই যাবে। আল্লাহ মাফ করুন। ★তারা একটি বিভাজন চান। এজন্য কাকরাইল ও টংগী মাঠকে ভাগ করে দিতে চাচ্ছেন। হায় আফসোস? দ্বিতীয় ম্যাসেজ- মাওলানা! ফরিদ সাহেব একজন ফেতনাবাজ। উল্লু। যে বাগানেই যাবেন সেটা ধবংস করেই ছাড়বেন। অতএব ওরে যত দ্রুত অবাঞ্চিত ঘোষণা করা বহিষ্কার করা যায়, ততই কল্যাণ। উনার বক্তব্যে ব্যবহৃত "৩য় পক্ষ,নাক গলানি শব্দদ্বয় আর সা'দ সাহেবের পক্ষে নির্লজ্জ অবস্থান থেকেই এটা ক্লিয়ার। তৃতীয় ম্যাসেজ-সাধারণ মানুষ তাবলীগ জামাতকে কাজের মাধ্যমে চিনে।ব্যাক্তি দিয়ে নয়। তাদের কাছে ব্যক্তি কখনোই মুখ্য ছিলনা। আজও নেই। তাই তারা একটা ভেজালমুক্ত তাবলীগ জামাত চায়। সেটা যেভাবেই সম্ভব। দুয়েকজন ব্যক্তির জন্য এমন একটি মহান জামাত শেষ হয়ে যাওয়া কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেনা। যা ইফা ডিজির বক্তব্য থেকে বুঝা যায়।অথচ এ লোকটা আপাদমস্তক ভিন্ন ঘরানার।ইনশাআল্লাহ, দাওয়াত ও তাবলীগ ছিল,আছে,থাকবে। আজ যারা সাধারণ সাথীদেরকে মিথ্যাচার করে উলামায়ে কেরামের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলেছে,গায়ে হাত তুলতে উতসাহীত করেছে তাদের বিচার আল্লাহর হাতে। কপালে যাদের হেদায়েত আছে তারা ফিরে আসবেই আসবে। উলামায়ে কেরাম শুধুমাত্র ব্যক্তি সা'দ সাহেবের কিছু শরিয়ত বিরুধী বক্তব্যের বিরোধিতা করেছেন, তাবলীগ জামাতের নয়। ব্যক্তি পুঁজায় নিমজ্জিতরা এ বাস্তব সত্যটা যত দ্রুত বুঝবে ততই কল্যাণ। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সহীহ বুঝ দান করুন।

Posted by Md Shamsuddoha on Monday, December 3, 2018

পূর্ববর্তি সংবাদবিএনপির ১৪১, আ.লীগের ৩ প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল
পরবর্তি সংবাদপাবনায় আ’লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষ : নিহত ২, আহত ১০