বাম জোটের ইশতেহার প্রতিক্রিয়া : দেশে ধর্মবিদ্বেষী দলের রাজনীতিই নিষিদ্ধ করা উচিত

আতাউর রহমান খসরু ।।

ফতোয়া নিষিদ্ধ করে হাইকোর্টের রায় কার্যকর এবং দেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধকরণের প্রতিশ্রুতি রেখে খসড়া ইশতেহার ঘোষণা করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। জোটের সমন্বয়ক সাইফুল হক গণমাধ্যমে খসড়া ইশতেহার তুলে ধরেন।

গণভিত্তিহীন বাম দলগুলো বরাবরই এই দেশে ইসলাম ও মুসলিম স্বার্থ বিরোধী তৎপরতার সাথে জড়িত। দেশের যেকোনো ইসলামি আন্দোলন বা স্বার্থ রক্ষার দাবির বিরোধী অবস্থানে দেখা যায় বাম দলগুলোকে। বলা হয়, বাম রাজনীতিকদের প্ররোচণায় স্বাধীনতার পরপর বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়।

ধর্মবিদ্বেষ ও নাস্তিক্যবাদের চর্চা ও প্রসারে সক্রিয় বামধারার দলগুলো। নাস্তিকদের রক্ষা করতে তাদের তৎপরতাও চোখে পড়ার মতো।

বাম দলগুলো কেন ইসলাম ও মুসলিম স্বার্থের বিরোধিতা করে? এমন প্রশ্নের উত্তরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, ‘আদর্শিকভাবে বাম দলগুলো ধর্মবিদ্বেষী। তারা মানুষকে ধর্ম ও নীতি-নৈতিকতাহীন করে তুলতে চায়। আর তাদের স্বপ্নপূরণে ইসলামি দলগুলোই প্রধান বাধা। এজন্য তারা ইসলামি দল নিষিদ্ধ করতে চায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘তারা নিজেরাও জানে তারা কতোটা জনবিচ্ছিন্ন, তাদের এই ইশতেহার কতোটা জনমত বিরোধী। তারপরও তারা এসব বলছে তাদের বিদেশী বন্ধুদের সন্তুষ্ট করতে। যাদের করুণায় তারা টিকে আছে। এই গণবিরোধী ইশতেহার তাদেরকে আরও গণবিচ্ছিন্ন করবে।’

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকার জামিয়া হুসাইনিয়া ইসলামিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা বাহাউদ্দিন যাকারিয়া এই সংবাদের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, বাম দলগুলো বরাবরই ইসলাম বিদ্বেষী মনোভব প্রকাশ করে। তাদের এই মনোভবই দেশের শান্তি-শৃংখলা নষ্টের জন্য দায়ী। বাম দলগুলোর মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বিশ্বাস ও প্রত্যাশার বিরোধী কথা বলে দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত করার অচচেষ্টা লক্ষ্যণীয়।

তিনি আরও বলেন, ‘যারা এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বিরুদ্ধে কথা বলবে এবং কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী অবস্থান নেবে তাদের সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া উচিত। কোনো রাজনৈতিক দল যদি কুরআন-সুন্নাহ ও ধর্মবিরোধী অবস্থান নেয় তাদের রাজনীতিও নিষিদ্ধ হওয়া দরকার।’

অবশ্য মাওলানা ইমতিয়াজ আলম অবশ্য মনে করেন, ‘বাম দলগুলোকে আইন করে নিষিদ্ধ করার দরকার নেই। জনগণই তাদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এজন্য স্বাধীনতার পর থেকে তাদের অবস্থান ক্রমহ্রাসমান।’

বাম দলগুলোর ইশতেহারে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি থাকতে পারলে ইসলামি দলগুলোর ইশতেহারে ধর্মবিদ্বেষী রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি থাকতে পারে কিনা? উত্তরে মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, ‘দাবি থাকতে পারে। তবে আমার মনে হয়, তাদের নিষিদ্ধ করার দাবি করলে তাদের যতোটা গুরুত্ব দেয়া হবে তারা ঠিক কতোটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। তারা এমনিতেই গণবিচ্ছিন্ন এবং দিনদিন বিলীন হয়ে যাচ্ছে।’

ফতোয়া বিরোধী রায় সম্পর্কে তারা উভয়ে বলেন, ফতোয়া মুসলমানের মৌলিক অধিকার। এই অধিকার কোনো আদলতও কেড়ে নিতে পারে না। ফতোয়া বিষয়টি উচ্চ আদালতে (সুপ্রিম কোর্টে) নিষ্পত্তি হওয়ার পরও হাইকোর্টের রায় কার্যকর করার দাবি আদালতের প্রতি আস্থাহীনতার প্রকাশ।

এই রায় কার্যকর করলে দেশের আবারও অস্থিরতা ও বিশৃংখলা তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন মাওলানা ইমতিয়াজ আলম।

পূর্ববর্তি সংবাদআমরা একতরফা নির্বাচন করতে চাই না : ওবায়দুল কাদের
পরবর্তি সংবাদচূড়ান্ত প্রার্থীর নাম জানাতে হবে ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে : ইসি