জাপার ইশতেহারে ধর্ম : মুসলমানকে উপেক্ষা করে সংখ্যালঘুদের প্রাধান্য

আবরার আবদুল্লাহ ।।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টি আজ তাদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে। ইশতেহারে প্রাদেশিক ব্যবস্থা প্রবর্তন, নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার, পূর্ণাঙ্গ উপজেলা ব্যবস্থা প্রবর্তন, কৃষকের জন্য ভর্তুকি মূল্যে শিক্ষা পদ্ধতির সংশোধন ১৮ দফা কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে। জাতীয় পার্টি তাদের ইশতেহারের দুটি ধারায় ধর্ম বিষয়ে তাদের অঙ্গীকার তুলে ধরেছে। আর তাতে প্রাধান্য পেয়েছে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের দাবি।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় ইশতেহার তেমন কোনো মূল্য বহন না করলেও ইশতেহারের মাধ্যমে দলের মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গি বোঝা সহজ হয়। মহাজোটের অংশিদার হিসেবে জাতীয় পার্টির নির্বাচনী ইশতেহারের পৃথক কোনো মূল্য আছে বলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন না। বিশেষত এই জোটের নিয়ন্ত্রক আওয়ামী লীগ হওয়ায় তা আরও বেশি প্রতীকী বলে মনে করছেন তারা।

জাতীয় পার্টির ইশতেহারের ৫ ও ১৮ নং ধারায় ধর্ম বিষয়ে তাদের পরিকল্পনা তুলে ধরেছে। ৫ নং ধারায় তারা ধর্মীয় সংখ্যা গরিষ্ঠ তথা মুসলমানের বিষয়টি উল্লেখ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, ধর্মীয় মূল্যবোধকে সবার ঊর্ধ্বে স্থান দেওয়া হবে এবং মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দিরসহ সব ধর্মীয় উপসনালয়ের বিদ্যুৎ ও পানির বিল মওকুফ করে দেওয়া হবে। জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় যাওয়ার এক বছরের মধ্যে এই দুই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে বলে অঙ্গীকার করা হয়েছে।

১৮ নং ধারায় জাতীয় পার্টি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় তাদের পরিকল্পনা তুলে ধরেছে। সেখানে ৩টি অঙ্গীকার করা হয়েছে। তাহলো, ১. সাধারণ নির্বাচন বাদে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য ৩০টি আসন সংরক্ষিত করা হবে, ২. সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর সংখ্যার হার অনুসারে তাদের চাকরি ও উচ্চশিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করা হবে, ৩. ধর্মীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা এবং সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করা হবে। এসব অঙ্গীকার বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনে সংবিধান সংশোধন করার ঘোষণাও দিয়েছে জাতীয় পার্টি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ মনে করেন, প্রতীকী হলেও এই ইশতেহারে জাতীয় পার্টি সংখ্যালঘুদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টায় বেশি করেছে। কারণ, সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো অঙ্গীকার নেই। বিপরীতে সংখ্যালঘুদের জন্য রয়েছে একাধিক সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার। কিছুদিন পূর্বে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সাংবাদিক সম্মেলনে করে যে যে বিষয় ইশতেহারে অন্তর্ভূক্ত করার দাবি করেছিলো তার সবগুলোই রয়েছে জাতীয় পার্টির নির্বাচনী ইশতেহারে। ফলে জাতীয় পার্টি যে, তাদের ইশতেহারে সংখ্যালঘুদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছে তা খুব সহজেই বোঝা যায়।

ধর্মীয় সংখ্যা গরিষ্ঠ জনগণকে উপেক্ষা করে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা সাধারণ মুসলিম ভোটারদের হতাশ করবে বলেই মনে করছেন অনেকেই।

পূর্ববর্তি সংবাদচুয়াডাঙ্গায় নির্বাচনী অফিসে আগুন
পরবর্তি সংবাদবাংলাদেশ থেকে হজে যেতে পারবেন ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হাজী