চীনে খ্রিস্টানদের ওপরও চলছে নিপীড়ন

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: শুধু উইঘুর মুসলিম নয়, চীনে নিপীড়ন ছলছে খ্রিস্টানদের ওপরও।‘রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা নস্যাতে উস্কানি দেওয়া’র অভিযোগে চীনে একশরও বেশি খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন যাজক ও আইন বিশেষজ্ঞ ওয়াং ই এবং তার স্ত্রী জিয়াং রং। সিচুয়ান প্রদেশের চেংডু শহরে ওই দম্পতির পরিচালিত একটি চার্চ (খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়) থেকে গত সপ্তাহে তাকে আটক করা হয় বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সংস্থা চায়না এইড। সংস্থাটি চীনের খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের পক্ষে প্রচার চালায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চার্চের এক কর্মীও ওয়াং ই দম্পতিকে আটকের কথা মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে নিশ্চিত করেছেন।

পশ্চিমাঞ্চলীয় ঝিনঝিয়াং প্রদেশের লাখ লাখ উইঘুর মুসলিম ধর্মাবলম্বীর ওপর কাঠামোগত মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে বেইজিং কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, উগ্র চরমপন্থা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যবস্থা নিচ্ছে তারা। স্বাধীন ধর্ম পালনের ওপর বেইজিং কর্তৃপক্ষের অভিযান নিয়ে নিন্দা জানিয়ে আসছে পশ্চিমা বিভিন্ন দেশের সরকার ও চীনের বাইরের মানবাধিকার কর্মীরা। চেংডু শহরের ওই চার্চে অভিযান নিয়েও উদ্বেগ জানিয়েছে আসছে তারা।

ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রশ্নে দশটি ‘উদ্বেগজনক দেশের’ মধ্যে চীন একটি-এমন কথা জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক বিশেষ দূত স্যাম ব্রাউনব্যাক বলেছেন, আমার বিশেষ উদ্বেগ এখন চীনকে নিয়ে। তারা এখন বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের ওপর এধরণের নিপীড়নমূলক কার্যক্রম বাড়িয়েছে। ধর্মীয় নিপীড়ন থেকে পিছু হটছে না চীন। মনে হচ্ছে তারা এটা সম্প্রসারণ করছে।

আনুষ্ঠানিকভাবে ঈশ্বরে বিশ্বাস করে না চীনা রাষ্ট্র। তবে দেশটিতে ধর্ম পালন বৈধ হলেও কেন্দ্রীয় সরকার এবং চীনের কমিউনিস্ট পার্টির নীতি ও নজরদারিতে থাকতে হয়। একারণে দেশটির কোনও কোনও ধর্ম বিশ্বাসী স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন করতে অনিবন্ধিত উপাসনালয়ে হাজির হন।

চীনের পুলিশ বলছে চেংডু শহরের যে চার্চ থেকে ওয়াং ই-কে আটকের কথা বলা হচ্ছে সেই আরলি রেইন নামের ওই চার্চটির কোনও নিবন্ধন নেই। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) জানিয়েছে, গত কয়েক বছর ধরে ওয়াং এবং তার চার্চের সদস্যদের নিয়মিত হয়রানি করেছে কর্তৃপক্ষ।

এইচআরডব্লিউ’র চীনা গবেষক ইয়াকুই ওয়াং বলেছেন, ‘ধর্মীয় স্বাধীনতায় বিশ্বাস করা প্রত্যেকেরই ওয়াং ই এবং ধর্মের ওপর চীনা কর্তৃপক্ষের নিপীড়নের বিরুদ্ধে কথা বলা উচিত’। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, অনিবন্ধিত চার্চ এবং ধর্ম পালনের বিরুদ্ধে অভিযানে রাষ্ট্রীয় অনুমোদন নেই। এর সঙ্গে ধর্ম পালনের সঙ্গে সম্পর্ক খুব সামান্য কিন্তু নাগরিক সমাজের ওপর চীনা কমিউনিস্ট পার্টির জোরালো নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার সম্পর্ক বেশি।

সূত্র: সিএনএন

পূর্ববর্তি সংবাদচীনে কয়লা খনি দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত
পরবর্তি সংবাদশহীদ মিনারে ফুল দেওয়া নিয়ে আ.লীগ -বিএনপি সংঘর্ষ: আহত ২২