মালয়েশিয়ার শরীয়া প্রদেশ তেরেঙ্গানু ও ক্রিস্টাল মসজিদ 

মুকীম আহমাদ ।। মালয়েশিয়া থেকে

তেরেঙ্গানু

মালয়শয়িার অন্যতম একটি সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চল। মালয়শয়িার উত্তর-র্পূব কোণে কেলান্তান ঘেঁষে অবস্থিত এই প্রদশেটি। মালয়শয়িা স্বাধীনতা লাভের অনেক আগে থেকেই প্রদেশটিতে মুসলিম শাসন ছিল। মালয়শিয়াতে ইসলামের আলো পৌঁছে প্রথমে তেরেঙ্গানুতে। তাই তার অন্য আরকেটি নাম হলো দারুল ঈমান।

প্রদেশটির সুলতান হচ্ছেন সুলতান মিযান যায়নুল আবিদীন। প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন পাস পার্টির আহমাদ শামসুরী মুখতার। দেশটিতে প্রাদেশিকভাবে এখনও জাভীলিপি প্রচলতি। জাভী (JAWI) হচ্ছে আরবি বর্ণমালাসদৃশ্য। পুরনো মুসলমি মালায়ুদের ঐতিহ্য হলো এই বর্নমালাগুলো।

ক্রিস্টাল মসজিদ ও পর্যটন 

পর্যটন ও স্থাপনার জন্যও প্রদশেটি পর্যটকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। ছোট ছোট অনেক আইল্যান্ড রয়েছে। রয়েছে ছোট ছোট সমুদ্র সৈকত। তেলেগা সৈকত ও কেমাসিক সৈকত তাদের অন্যতম। তবে পর্যটকদের বেশি আকৃষ্ট করে ক্রিস্টাল মসজিদটি। ইসলামিক হেরেটিজ পার্কে অবস্থিত মসজিদটি। মসজিদটির প্রধান ও মৌলিক অংশগুলোতে স্টিল, গ্লাস ও ক্রিস্টাল ব্যবহার করা হয়। তিন বছর (২০০৬-২০০৮) সময় ব্যয়ে নির্মাণ করা হয় মসজিদটি।

চারটি দৃষ্টিনন্দন ক্রিস্টালে মিনার রয়েছে। দূর থেকে ক্রিস্টালের গম্বুজগুলো পর্যটকদের ভীষণ আকৃষ্ট করে। একসঙ্গে ১৫০০ মুসল্লী নামাজ আদায় করতে পারনে মসজিদটিতে। মসজিদটির মূল অংশ পানিতে ভাসমান। পানতিে প্রলম্বতি মসজিদটির প্রতিবিম্ব মুসল্লীদের মুগ্ধ করে। রাতের বর্নালি আলো ঝলমল গম্বুজগুলো যেন পর্যটকদের হৃদয়ওে আলো জ্বালিয়ে দেয়।

 

মাদরাসা শিক্ষা 

প্রদেশটিতে ভারত উপমহাদেশের মতই দ্বীনি শিক্ষার জন্য রয়ছেে সরকারি বেসরকারি, আবাসিক-অনাবাসিক দু রকমেরই প্রচুর মাদরাসা রয়েছে। তবে পন্ড’ক হচ্ছে বিশেষ ধরনের মাদরাসা। কাঠের অর্ধ দেয়াল খড়ের ছাউনি দিয়ে নির্মিত।

আরবের অনুসরণে মসজিদেও দরস প্রদান করা হয়। কখনও কখনও নির্ধারিত শ্রেণিকক্ষে। প্রদেশটির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় মানের ইনস্টটিউিটগুলোতে আরব আলেমদের প্রাধান্য লক্ষণীয়।

দেওবন্দের অনুসরণেও রয়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মাদরাসা। তবে প্রসিদ্ধ মাদরাসাটি মাহাদ তাহফিজ ওয়াত তারবিয়াহ দারুল ঈমান। বালক-বালিকা উভয় শাখাই  রয়েছে মাদরাসাটিতে।

ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি

জনশ্রুতি আছে, একমাত্র তেরেঙ্গানুতেই মুসলিম জাতীয়তাবাদ চর্চিত। মালয়শিয়াতে যখন প্রচুর পরমিাণে ইন্ডিয়ান ও চায়নিজ অভিবাসীদের আগমন ঘটছিল, তখন তেরেঙ্গানুর অধিবাসীরা তাদের স্বাগত জানায় নি। ফলে তাদের সংস্কৃতিটা শতভাগ মুসলিম মালায়ু সংস্কৃতি।

রাজনীতি ও শরীয়া আইন 

ধর্মপ্রাণ মালায়ু মুসলমিগণ যুগ যুগ ধরে শরীয়া-আইন প্রয়োগের প্রচেষ্টা করে আসছেন তাদের রাজনৈতিক দল পাস পার্টির মাধ্যমে। ইসলামী রাজনীতিকদের দৃঢ়তা আর ঐক্যের দরুন দেশটিতে ইসলামপন্থীদের প্রভাব প্রতিষ্ঠিত। সাধারণ মালায়ু নাগরকি এখনও ন্যায়বিচারের জন্য শরীয়া আদালতমুখী।

সম্প্রতি নির্বাচনে তেরেঙ্গানুতে ইসলামী দলের বিজয়ের পরপর প্রদেশটির শরীয়া আদালত দুজন মহিলা সমকামীকে প্রকাশ্যে শাস্তি দান করে ধর্মপ্রাণরা তাদের শক্তি প্রকাশ করে, ঠিক ওই সময়ে যখন সমকামীরা আইনি বৈধতার জন্য আন্দোলন করছিল। প্রদেশটির শরীয়া আদালত রাষ্ট্রীয় চাপ উপক্ষো করে তাদের শরঈ দণ্ড-প্রদান অব্যাহত রখেছেে ।

৯৬.৬% ভাগ মুসলিম অধ্যুষিত এই প্রদেশটিতে ১৯৫৯-৬১ পর্যন্ত পাস-র্পাটি প্রাদেশিক শাসনর্কায পরচিালনা করে । তারপর ১৯৯৯-২০০৪ এবং তৃতীয়বারের মতো বর্তমানে প্রদেশটি তারা শাসন করছে ।

 

পূর্ববর্তি সংবাদনির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে সংখ্যালঘু নেতা রানা দাশগুপ্তের সন্তোষ প্রকাশ
পরবর্তি সংবাদ‘যুদ্ধাপরাধীরা’ বিজয়ী হলে সংসদে ঢুকতে দেবেন না শাজাহান খান!