ইসলাম টাইমস ডেস্ক: জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আ.লীগের দুই গ্রপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে উভয়পক্ষের প্রায় অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। এছাড়াও ৩০টি বাড়িঘর ভাঙচুর ও ব্যাপক অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১০ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করেছে।
আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার পিংনা ইউনিয়নের নরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ৩১ মে পিংনা ইউনিয়নের নরপাড়া গ্রামে বালু ব্যবসার আধিপত্য নিয়ে এক সংঘর্ষে ছাত্রলীগ নেতা জাহিদ হাসান নিহত হন। এ ঘটনার জের ধরে নিহত জাহিদের চাচাতো ভাই ইউসুফ আকন্দ ও আসামি পক্ষের তোফাজ্জল হোসেন মিলিটারির গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। সম্প্রতি জাহিদ হত্যা মামলার আসামিরা জামিনে বের হলে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে তোফাজ্জল মিলিটারির লোকজন ইউসুফ আকন্দকে সোনামুই বাজার থেকে সাহাপাড়ায় ধরে নিয়ে রামদা ও হাতুড়ি দিয়ে পেটায়।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ জনতা প্রতিপক্ষের ২২টি পরিবারের অন্তত ৩০টি ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়। এ সময় উভয়পক্ষে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বাধে। পরে বিজিবি, র্যাব, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
এদিকে ঘটনাস্থল থেকে বিলাত মেম্বারের ছেলে নাসির উদ্দিনকে পুলিশ আটক করলে পরিস্থিতি নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠে। আটককৃতকে স্থানীয়রা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ ৬ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও ৪ রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষ ও গুলিতে প্রায় অর্ধশত লোক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গুলিবিদ্ধরা হলেন জনি (২০), নুরুল আকন্দ (৭৫), আক্তার (২৮), মারুফ হোসেন (৫৫), শরিফ (৩৫) ও সামছুল আকন্দ (৪৫)। এছাড়া সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে গুরুতর ইউসুফ আকন্দ (৪৫) ও গোলাম মোস্তফাকে (৩৫) ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পিংনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা খন্দকার মোতাহার হোসেন জানান, তোফাজ্জল মিলিটারি ও তাঁর লোকজন সব সময় এলাকায় নানা বিশৃঙ্খলা করে বেড়ায়। তাঁর নেতৃত্বেই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এদেরকে আইনের আওতায় আনা জরুরী।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব ছানোয়ার হোসেন বাদশা বলেন, বালুর ব্যবসাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। বিশৃঙ্খলাকারী কেউ আওয়ামী লীগের হতে পারে না। তারা যে-ই হোক এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মাজেদুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৬ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও ৪ রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
