
ইসলাম টাইমস ডেস্ক : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরুর পর থেকেই চট্টগ্রামের অধিকাংশ ভোটকেন্দ্র দখল করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও পুলিশের বিরুদ্ধে।
বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র থেকে ধানের শীষের প্রার্থীদের এজেন্ট বের করে দেয়ার অভিযোগ করেছে বিএনপি।
রোববার মতিঝর্ণা, পুলিশ লাইন স্কুল, রেলওয়ে স্কুল, পলোগ্রাউন্ড স্কুল, পাহাড়তলী কলেজসহ সংসদীয় আসনের অধিকাংশ কেন্দ্র ভোর থেকেই দখল করে রেখেছে আওয়ামী লীগের লোকজন। সাধারণ ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দিচ্ছে তারা। এই আসনের অধিকাংশ সেন্টারের এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে।
নগরীর পাহাড়তলী কলেজ কেন্দ্র থেকে খুলশী থানার ওসি নিজেই বিএনপির এজেন্টদের বের করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। ১৪ নং ওয়ার্ডের পুলিশ লাইন্স কেন্দ্রে ছাত্রলীগের বাধা দেয়ার পরও ভোট দিতে চাওয়ায় তিনজন ভোটারকে কেন্দ্র থেকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ।
এ আসনে বিএনপির প্রার্থী কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান জানান, ১১৭টি কেন্দ্রের মধ্যে সবগুলো কেন্দ্র প্রশাসনের সহযোগিতায় সন্ত্রাসীরা দখল করে নিয়ে নৌকার ব্যালট বাক্সভর্তি করেছে। এজেন্টদের বের করে দিয়েছে।
চট্টগ্রামের লালখান বাজারের একটি ভোটকেন্দ্রে (চট্টগ্রাম-১০) সকাল ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে নির্বাচনী কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্ট শাহনেওয়াজ রকি নামে স্থানীয় একজন জানান অধিকাংশ ব্যালট বাক্স পূর্ণ দেখতে পান।
এ বিষয়ে ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
এ কেন্দ্রে ধানের শীষের এজেন্ট মাওলানা মহিউদ্দিন জানান, সকালে ভোটগ্রহণ শুরুর ২০/২৫ মিনিটের মধ্যে স্থানীয় যুবলীগ নেতা মাসুমের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ-যু্বলীগ কর্মীরা মাদ্রাসার ভোট কেন্দ্র দখল করে নিয়ে নেয়। তারা ধানের শীষের এজেন্ট আমাকে ও মাওলানা আব্বাসকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়। পরে সীল মেরে বাক্স ভর্তি করে।
এদিকে চট্টগ্রাম-১১ আসনের হালিশহর,বন্দর থানার অধিকাংশ এলাকার ভোট কেন্দ্রগুলোতে গতকাল রাতেই ব্যলট পেপারে সিল মেরেছে রাখার অভিযোগ করেছে বিএনপির প্রার্থী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
সকাল থেকে বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে গেইটে পাহারা বসিয়েছে নৌকার সমর্থকরা। পরিচিত লোকজন ছাড়া সাধারণ ভোটারদের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দিচ্ছেনা বলে জানান তিনি।
নগরীর মহিলা সমিতি বালিকা বিদ্যালয় (বওয়া স্কুল) কেন্দ্রের ভোটার বীমা কর্মকর্তা মো. মিলাদ বলেন, আমরা তিনভাই এক সাথে ভোট দিতে এসেছিলাম। একজন ভোট দিতে পারলেও আমাদের দুই ভাইয়ের মুখে দাঁড়ি থাকায় আমাদের ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়নি।
গেইটে নৌকার ব্যাজ লাগিয়ে কিছু যুবক পুলিশের সামনেই আমাদের বাধা দেয়। তারা প্রথমে ভোটার নাম্বার জিজ্ঞাসা করে। নাম্বার বলার পর বলে ভোটের স্লিপ নিয়ে আসেন। স্লিপ নিয়ে যাওয়ার পরও আমাদের ভোট দিতে দেয়নি। বলে ভোট দেয়া হয়ে গেছে।
এদিকে চট্টগ্রাম-১২, চট্টগ্রাম-১২ সংসদীয় আসনের পূর্ব মানসা আশরাফ আলী স্কুলকেন্দ্র ও কুসুমপুরা এলাকার ভোটকেন্দ্রে সকাল ৫টার আগেই জাল ভোট দিয়ে ব্যলট পেপারে সিল মেরে রাখে নৌকার সমর্থকরা। এই ভোট কেন্দ্রে কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। বিএনপি এজেন্টদের বের করে দিয়েছে।
কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা পুলিশের এসআই আব্দুর রউফ জানান, সকালে কিছুটা সমস্যা হয়েছিল। পরে তা ঠিক হয়েছে।
