হায় আরব!

আলী হাসান তৈয়ব ।।

আজ সোমবার মিসরে উদ্বোধন হলো মিসর ও মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় খ্রিস্টানদের গির্জা। উদ্বোধন করলেন মিসরের প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুরসিকে সেনাশক্তির বলে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করা প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ সিসি।

শাহি এ অনুষ্ঠানে আরও অতিথি ছিলেন মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় ও পোপের পর দ্বিতীয় ইস্কানদারিয়ার পাদ্রী। এ উপলক্ষে পোপ তাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পত্র লেখেন। (বিবিসি ফার্সি)

এর আগে সদ্য বিদায়ী ডিসেম্বরে সিসি ঘোষণা দেন, মিসরের প্রতিটি মহানগরে একটি করে গির্জা নির্মাণ করা হবে।

এদিকে মার্কিন টেলিভিশন নেটওয়ার্ক সিবিএসকে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। সিবিএসের বরাত দিয়ে আলজাজিরা বলেছে, মিসরের সিনাই উপদ্বীপে আইএস ও অন্যান্য সশস্ত্র যোদ্ধাদের দমনে কায়রো যে ইসরাইলের সরাসরি সহযোগিতা নিচ্ছে- সেটা সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেন মিসরীয় প্রেসিডেন্ট।

তিনি বলেন, ‘অভিযান চালাতে গিয়ে বিমানবাহিনীকে অনেক সময়ই ইসরাইলি সীমান্তে প্রবেশ করতে হয়। সেজন্য আমরা ইসরাইলের সঙ্গে বিস্তৃত পরিসরে সমন্বয় করছি।’ অথচ গত বছর মিসরীয় সেনাবাহিনী উত্তর সিনাইয়ে বিদ্রোহীদের দমনে ইসরাইলি সহযোগিতা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছিল।

গেল মাসে আরেকটি সংবাদ দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল, এবার বড়দিন উপলক্ষে বিশ্বের সবচেয়ে দামি ক্রিসমাস ট্রি সাজানো হয়েছে আবুধাবিতে। ১০ কোটি ২০ লাখ ডলার খরচ করে স্বর্ণ আর রত্নখচিত ক্রিসমাস ট্রি সাজিয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবি। খবর বিবিসির।

এর এক মাস আগে তথা গত নভেম্বরে বৃটেনের একটি আদালতে বাহরাইন রাজার এক কাজিনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। তিনি বলিউড স্টারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য এক লোকের সঙ্গে ৩০ মিলিয়ন ডলারের (!!!) চুক্তি করে সেটা ভঙ্গ করেছেন। কথা ছিল প্রত্যেক বলিউড স্টারের সঙ্গে একটি পাঁচতারা হোটেলে তিনি সাক্ষাৎ করবেন। পনেরো মিনিট তার সঙ্গে কাটাবেন। বিনিময়ে দেড় মিলিয়ন ডলার দেবেন। উদাহরণত ধরুন, তিনি শাহরুখ খানের সঙ্গে ১৫ মিনিট সময় কাটাবেন। প্রত্যেক মিনিটের বদলে তাকে গুণতে হবে এক লাখ ডলার। মানে প্রত্যেক মিনিটে প্রায় ৮৫ লক্ষ টাকা!

একদিকে যখন জ্বলছে সিরিয়া। না খেয়ে, চিকিৎসা না পেয়ে কিংবা সাগরে ডুবে মরছে সিরিয়ার হাজারো নারী-শিশু। পুড়ছে ইয়ামান। ক্ষুধায় রোজ মরছে শত শত ইয়ামানি শিশু। রোজ নির্বিচারে পাখির মতো মরছে ফিলিস্তিনিরা। কাঁদছে রোহিঙ্গা জাতি। অশান্তি ও অস্বস্তি বিরাজ করছে তিউনিশিয়া, কাতার, লিবিয়াসহ পুরো আরবজাহান, তখন এই খবরগুলো কেমন লাগতে পারে? আফসোসের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, ইসলামের ভিত্তিভূমি আরবের কোনো দেশ বর্তমানে উম্মাহর জন্য আলো দেখাতে পারছে না। তাদের কীসে প্রতিযোগিতা করা উচিত আর তারা কোন প্রতিযোগিতায় লিপ্ত! কাকে খুশি করার চেষ্টা তাদের করা উচিত আর তারা চাইছে কাকে খুশি করছে! হায় আরব!

 

পূর্ববর্তি সংবাদমিরপুরে যুবককে হত্যা
পরবর্তি সংবাদনির্বাচনী অনিয়মে আদালতেও সমাধান খুঁজবে ঐক্যফ্রন্ট