ইসলাম টাইমস ডেস্ক : পাকিস্তানে নবী মুহাম্মদ সা.-কে অবমাননার দায়ে ফাঁসির দণ্ড পাওয়া খ্রিস্টান নারী আসিয়া বিবিকে খালাস প্রদান করে দেওয়া উচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে করা রিভিউ আবেদন খারিজ করে দিয়েছে দেশটির আদালত।
আজ পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি আসিফ সাঈদের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি বেঞ্চ রিভিউ আবেদনের উপর শুনানি শেষে তা খারিজ করে দেন।
শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি বলেন, মিথ্যা সাক্ষীর শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও হতে পারে। মামলার সংবেদনশীলতার জন্য আমরা শুনানিতে রাজি হয়েছি। নতুবা উকিল প্রদত্ত রায়ের এমন কোনো ত্রুটি উত্থাপন করতে পারেননি যার ভিত্তিতে রিভিউ হতে পারে।
শুনানিকালে আইনজীবী অ্যাডভোটেক গোলাম মোস্তফা বলেন, এটি মুসলিম উম্মাহ সংশ্লিষ্ট একটি বিষয়। তাই আদালতের উচিৎ ধর্মীয় বিষয়ে পণ্ডিতদের সঙ্গে কথা বলা। উত্তরে প্রধান বিচারপতি বলেন, ইসলাম অপরাধ প্রমাণের পর শাস্তি দেওয়ার কথা বলেছে। কিন্তু এমন সাক্ষী কী ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয়? যদি সাক্ষীদের কোনো ত্রুটি প্রমাণিত হলে আদালত রায় সংশোধনের কথা ভাববে।
অ্যাডভোকেট গোলাম মোস্তফা বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি সাকিব নিসার যে সাক্ষ্যের ভিত্তিতে রায় দিয়েছিলেন তিনি তার ভুল ব্যাখ্যা করেছিলেন। সুতরাং তার দেওয়ার রায় পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে। উত্তরে প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচারপতি সাকিব নিসার এই বেঞ্চের অংশ নন। তিনি আপনার কথার উত্তর দিতে পারবেন না।
২০১০ সালে রাসুল সা.-কে অবমান করার দায়ে আসিয়াকে লাহোরের নিম্ন আদালত মৃত্যুদণ্ড দেন। লাহোর হাই কোর্টও সেই রায় বহাল রাখেন এবং আপিল খারিজ করে দেন। পরবর্তীতে বিবাদী উচ্চ আদালতে আপিল করেন। দীর্ঘদিন মামলাটি নিষ্পত্তিহীন অবস্থায় থাকার পর ৩১ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট আসিয়া বিবিকে বেকসুর খালাসের রায় প্রদান করেন।
এই রায়ে পাকিস্তানে গণবিক্ষোভ শুরু হয় এবং আসিয়া বিবির আইনজীবী দেশত্যাগে বাধ্য হন। সরকার আন্দোলনকারীদের সাথে ৩ দফা সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করে। যেখানে এই মামলার রিভিউ করার পূর্ব পর্যন্ত আসিয়া বিবিকে দেশত্যাগ করতে দেওয়া হবে বলে অঙ্গীকার করা হয়।
আজ রিভিউ আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় আসিয়া বিবির দেশত্যাগে আর কোনো বাধা থাকলো না।
সূত্র : ডেইলি পাকিস্তান
