দেশ শান্তিতে আছে, ঢিল ছোড়বেন না : সংসদে মেননকে ফিরোজ রশীদ

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: কওমী মাদরাসা, আল্লামা শাহ আহমদ শফী ও হেফাজত নিয়ে রাশেদ খান মেননের সংসদে দেওয়া ধৃষ্টতামূলক বক্তব্যকে একপাঞ্জ করার দাবি জানিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেছেন, যারা সংসদে নেই, সংসদে আসতে পারেন না, তাদের নিয়ে সংসদে আমরা কেন এ ধরনের কথা বলবো? দেশ তো শান্ত আছে, শান্তিতে আছে। এখন তো কোথাও অশান্তি দেখি না। আমরা কেন শান্তির মধ্যে একটি অশান্তির ঢিল ছুড়ে দেবো?

রোববার (১০ মার্চ) সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এ দাবি জানান কাজী ফিরোজ রশীদ। তবে তিনি এ সময় মেননের নাম উল্লেখ করেননি।

ফিরোজ রশীদ বলেন, একজন সংসদ সদস্য, যিনি আগে মন্ত্রী ছিলেন, এই সংসদে ধান ভানতে শিবের গীত গেয়েছেন। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। কওমি মাদ্রাসা নিয়ে অনেক বেহুদা কথা বলেছেন। কওমি মাদ্রাসা নাকি বিষবৃক্ষ! অথচ এ সংসদে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা দাওরায়ে হাদিসের স্বীকৃতি দিতে সর্বসম্মতক্রমে আইন পাস করেছি।

এটা তাদের দীর্ঘদিনের দাবি। এটা একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। সেজন্য সব কওমি মাদ্রাসা থেকে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে। এখানে তো কোনও মোল্লাতন্ত্র বা দেশ দখলের ষড়যন্ত্র হয় না।

শাহ আহমদ শফীকে মেননের সমালোচনা করার প্রসঙ্গ টেনে জাপার এই এমপি বলেন, হেফাজতের আমির, তিনি একজন বর্ষীয়ান নেতা। সারাজীবন মাদ্রাসায় শিক্ষাকতা করেছেন। তাদের অনেক ছাত্র-ভক্ত রয়েছে। তাকে নিয়ে এই সংসদে কটাক্ষ করে কথা বলা হয়েছে। ‘তেঁতুল হুজুর’ বলে তাকে কটাক্ষ করা হয়েছে। তাকে বিদ্রুপ করা হয়েছে। এ ধরনের ধৃষ্টতা সংসদে উচিত নয়।

কিছু বামপন্থী নেতা রয়েছেন তারা ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলাটাকে ফ্যাশন মনে করেন। ইসলামের মধ্যে কথা বললেই বোধ হয় আলট্রা মর্ডান হয়ে গেলাম! মানুষ মনে করবে, আমি সব থেকেই বড় বিপ্লবী বামপন্থী কমরেড হয়ে গেলাম!

দেশের কওমি মাদ্রাসা শিক্ষার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এখানে ২০ হাজার কওমি মাদ্রাসা আছে। ২০ লাখ ছাত্র এতে কুরআন-হাদিস নিয়ে পড়াশোনা করেন। কঠিন ইসলামিক ধর্মীয় অনুশাসনের মধ্যে তাদের চলতে হয়। তারা স্কুল-কলেজের ছাত্রদের মতো ঘি-মাখন-পরাটা খেতে পারে না। যা জোটে তা-ই খায়।

কওমি মাদ্রাসায় মাদক, ইয়াবা, গাজা নিষিদ্ধ। ধূমপান এখানে চলে না। আমাদের স্কুল-কলেজ, ইউনিভার্সিটি ও বাড়িঘরে এই মাদক ঢুকে পড়েছে। কিন্তু কওমি মাদ্রাসায় ঢুকতে পারে না। আমরা রক্ত পরীক্ষা করলে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে শত ভাগ পিওর রক্ত পাবো। কিন্তু স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের রক্ত পরীক্ষা করলে ৫০ ভাগও পিওর রক্ত পাবো না।

স্পিকারকে উদ্দেশ করে ফিরোজ রশীদ বলেন, কওমি মাদ্রাসার বিরুদ্ধে বলে আলেম সমাজের নেতা আল্লামা শফী সাহেবের বিরুদ্ধে কথা বলে উনাকে অপমান করা হয়েছে। এই সংসদে তাদের জন্য আমরা আইন পাস করেছি। এখানে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার দরকার ছিল না। এই কথাগুলো একপাঞ্জ করবেন। অশান্ত পরিবেশ থেকে আমরা মুক্তি পাবো।

উল্লেখ্য, গত ৩ মার্চ সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণে আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনা অংশ নিয়ে সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন অশোভনীয় ভাষায় দাওরায়ে হাদিসের স্বীকৃতি প্রদান, হেফাজতে ইসলাম ও আহমদ শফীর  সমালোচনা করেন।

পূর্ববর্তি সংবাদবন্ধুকেই প্রধানমন্ত্রী করলেন মাহমুদ আব্বাস!
পরবর্তি সংবাদফতুল্লায় বালুর ট্রলারের ধাক্কায় শ্রমিকবাহী ট্রলারডুবি, আহত ১৫