বক্তাদের আয়ের উপর করারোপসহ ৬ সুপারিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের

ইসলাম টাইমস ডেস্ক : ওয়াজ মাহফিলের বক্তাদের আয়ের উপর করারোপ, তাদের নিবন্ধন ও রাষ্ট্র-সরকার বিরোধী বক্তব্য দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণসহ ৬ দফা সুপারিশ পেশ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বক্তারা তাদের বয়ানে সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদে উৎসাহ দেওয়া, ধর্মের নামে বিভিন্ন উপদল ও শোবিজ তারকাকে নিয়ে বিষদগার করছেন –এমন অভিযোগ এনে তার ভিত্তিতে এই সুপারিশ করা হয়েছে।

এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (ইফাবা), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও সব বিভাগীয় কমিশনারের কাছে এটি পাঠানো হয়েছে।

সুপারিশ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ঢাকার একটি অনলাইন পোর্টালকে বলেন, ‘ওয়াজ মাহফিলে কী ধরনের বক্তৃতা হয় তা সবসময় আমাদের কাছে প্রতিবেদন আকারে আসে। আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করি। আর বক্তারা কীভাবে করের আওতায় আসবেন তা দেখবে আয়কর বিভাগ।’

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বর্তমান সময়ের বক্তাদের আলোচ্য বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে। এতে নারী, পহেলা বৈশাখ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, গণতন্ত্র-সমাজতন্ত্র, জাতীয় সঙ্গীত ও জিহাদ বিষয়ে বক্তাদের বিভিন্ন মন্তব্য তুলে ধরা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বক্তাদের সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহার ও ইউটিউব চ্যানেল খোলার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ছয়টি সুপারিশ হলো:
১. বক্তারা যেন বাস্তবধর্মী ও ইসলামের মূল স্পিরিটের সঙ্গে সংহতিপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন, সেজন্য তাদের প্রশিক্ষণ ও উদ্বুদ্ধকরণের ব্যবস্থা করা। এক্ষেত্রে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসন ও কমিউনিটি পুলিশের ভূমিকা তাৎপর্যপূর্ণ।

২. যারা ওয়াজের নামে হাস্যকর ও বিতর্কিত বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে ধর্মের ভাবগাম্ভীর্য নষ্ট করার চেষ্টা চালান তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণসহ প্রো-অ্যাকটিভ উদ্বুদ্ধকরণ করা।

৩. অনেক আলেমের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। দাওরায়ে হাদিস ডিগ্রির মতো উচ্চশিক্ষা ব্যতীত যারা ওয়াজ করে তারাই জঙ্গিবাদ ও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। তাই মাদ্রাসায় উচ্চশিক্ষিত ওয়াজকারীদের নিবন্ধনের আওতায় নিয়ে আসা।

৪. অনেকেই আছেন, যারা হেলিকপ্টারযোগে ওয়াজ মাহফিলে যোগ দেন এবং ঘণ্টাচুক্তিতে বক্তব্য দিয়ে বিশাল অঙ্কের অর্থ গ্রহণ করেন। তারা নিয়মিত ও সঠিকভাবে আয়কর প্রদান করেন কিনা তা নজরদারির জন্য আয়কর বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সব বিভাগে কর্মতৎপরতা বৃদ্ধি করা।

৫. বক্তাদের বক্তব্য স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক সংরক্ষণ ও পর্যালোচনার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া এবং উস্কানিমূলক ও বিদ্বেষ ছড়ানোর বক্তব্য দিলে তাদের সতর্ক করা। প্রয়োজনে পরবর্তী সময়ে তাদের ওয়াজ করার অনুমতি না দেওয়া।

৬. সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে ও রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য প্রদানকারীদের আইনের আওতায় আনা।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গবেষণা বিভাগের পরিচালক নূর মোহাম্মদ আলম। তিনি বলেন, ‘আমাদের মহাপরিচালক স্যার বৈঠক ডেকেছেন। আমরা গবেষকদের সঙ্গে কথা বলছি। এ ব্যাপারে কী করা যায়, বক্তাদের ডাকব নাকি তাদের চিঠি দেব; এসব বিষয় সভায় ঠিক হবে। এরপর আমরা পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করব।’

পূর্ববর্তি সংবাদনওগাঁর পাঁচতলা ভবনে আগুন
পরবর্তি সংবাদমঙ্গলবার শপথ নিচ্ছেন মোকাব্বির খান