বিশেষ প্রতিবেদন: রাজধানী ঢাকার উত্তরার ১০ নং সেক্টরের একটি মসজিদে শিশুদের মসজিদে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা জানিয়ে একটি নোটিশ টানানো হয়েছে। এ ছাড়াও অনেক মসজিদে বাচ্চাদের মসজিদে আসতে মৌখিকভাবে নিষেধ করা হয়। সাম্প্রতিক উত্তরায় নোটিশ টানানো নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয়েছে সমালোচনার ঝড়।
ছোটবেলায় মসজিদে আসতে নিষেধ করলে বড় হলে দাওয়াত দিয়েও মসজিদে আনা যাবে না এ আশঙ্কা করছেন অনেকেই। তাই উত্তরায় শিশুদের ওপর থেকে মসজিদে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিয়ে দেশের কোথাও যেন মৌখিকভাবেও বাচ্চাদের মসজিদে আসতে নিষেধ না করা হয় সে দাবি জানানো হয়েছে অনেকের পক্ষ থেকে।
তবে কেউ কেউ বাচ্চাদের সাথে সাথে বুঝমান কিশোর, এমনকি প্রাপ্তবয়স্কক ছেলেরাও মসজিদে এসে যেভাবে হাসাহাসি, শোরগোল শুরু করে তারও নিয়ন্ত্রণ জরুরি মনে করেন। তারা মনে করেন, প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেরা তো আসলে শিশু নয়, কিন্তু অনেক সময় শিশুদের মতো আচরণ করে মসজিদে এসে। এদের নিয়মিত তারবিয়ত, তাম্বীহ ও তারগীব প্রয়োজন।
বাচ্চাদের মসজিদে আগমন ও কলরব নিয়ে ইসলাম টাইমস-এর সাথে কথা বলেন উত্তরার ৯ নং সেক্টরের জামিয়াতুস সাহাবার মুহাদ্দিস মাওলানা নুরুযযামান। তিনি বলেন, নোটিশ টানিয়ে বাচ্চাদের মসজিদে আসতে নিষেধ করা অনুচিৎ কাজ। মসজিদে না নিয়ে আসলে বাচ্চাদের নামাযের অনুশীলন হবে না। আর ছোটবেলা থেকে নামাযে অভস্থ না হলে বড় হলে ওরা আর মসজিদে আসতে চাবে না। তবে মসজিদে এসে শোরগোল যেন না করে সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে।
ছোটদের সাথে সাথে তুলনামূলক বড়রাও যে মসজিদে এসে হট্টগোল শুরু করে তাদের ব্যাপারে জানতে চাইলে মাওলানা নুরুযযামান বলেন, আসলে সমস্যা মূলত ওরাই করে বেশি। ছোটরা ওদের দেখে দেখে দুষ্টুমি করা শেখে। প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেরা মসজিদে এসে কোলাহল শুরু করে দিলে তাদের বুঝাতে হবে। না মানলে বাসায় বলতে হবে। যেন পারিবারিকভাবে তাদেরকে মসজিদের আদব রক্ষা করতে শাসন করা হয়। মসজিদ আল্লাহর ঘর। এখানে মুসল্লীরা নামায পড়তে আসে। তাই কারো সন্তান যেন মসজিদে এসে হট্টগোল না করে সে ব্যাপারে পারিবারিকভাবে সচেতন হতে হবে।
এদিকে মারকাযুদ্দাওয়াহ আল ইসলামিয়ার ইফতা বিভাগের শিক্ষক মুফতী ফয়জুল্লাহর সাথে কথা বললে তিনি ইসলাম টাইমসকে বলেন, একদম ছোট বাচ্চাদেরকে মসজিদে আনা ঠিক নয়। অনেকসময় দেখা যায় বাবারা সাথে করে একদমই অবুঝ ছোট বাচ্চাদেরকে মসজিদে নিয়ে আসেন পরে ওরা কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। কখনো কখনো তহারাতের সমস্যাও হয়। সেজন্য একটু বয়স হলে নামাযের গুরুত্ব ও মসজিদের আদাব বুঝিয়ে সন্তানদের মসজিদে আনা উচিৎ। অবশ্য নোটিশ টানিয়ে শিশুদের মসজিদে আসতে নিষেধ করাটা নিন্দনীয়।
ছোট ছেলেরা মসজিদে এসে যে কলরব শুরু করে দেয় তা বন্ধের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে মুফতী ফয়জুল্লাহ বলেন, তাদেরকে পেছনে দলবদ্ধভাবে দাঁড়াতে দেওয়া যাবে না। কাতারের মাঝেমাঝে অভিভাবকরা তাদের সাথে সাথে রাখবে। অথবা চোটদের সাথে সাথে দায়িত্বশীল বড়রাও নামাযে দাঁড়াবে। বারবার তাদের বোঝাবে। শিশুরা দুষ্টুমি করলেও তাদেরকে বুঝিয়ে মসজিদে আনতে হবে।
