দখলমুক্ত সেই মসজিদে খুতবাপূর্ব বয়ানে যা বললেন আল্লামা বাবুনগরী

ইসলাম টাইমস প্রতিবেদন: স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক চট্টগ্রাম বায়েজিদ থানাধীন ওয়াজেদিয়া (অনন্যা আবাসিক সংলগ্ন) ওমর ফারুক আল ইসলামিয়া মাদরাসা ও এতিমখানা অবৈধ দখলদার মাজারপন্থীদের থেকে দখলমুক্ত করে প্রতিষ্ঠানটির মোতাওয়াল্লী কর্তৃক মনোনীত পরিচালক মাওলানা হাফেজ মুহাম্মদ তৈয়বের হাতে তুলে দেয়ার পর ১৭ মে শুক্রবার মাদরাসার মসজিদে পবিত্র জুম’আর নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

ওমর বিন খাত্তাব রা. মসজিদে হাজার হাজার মুসল্লীদের উপস্থিতিতে আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী-এর খুৎবার মাধ্যমে পবিত্র জুম‘আর নামায অনুষ্ঠিত হয়।

খুতবাপূর্ব আলোচনায় আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী বলেন, মহান আল্লাহ আমাদেরকে অনেকগুলো বেমেসাল নেয়ামত দান করেছেন। যা অন্য নবির উম্মতদের দান করা হয়নি। নেয়ামতের শ্রেষ্ঠতম নেয়ামতগুলোও আমাদের ভাগে। মহান আমাদেরকে শ্রেষ্ঠতম নেয়ামত মুহাম্মাদ সা. কে দান করেছেন। শ্রেষ্ঠতম আসমানি্ গ্রন্থ কোরআনও আমাদেরকে দান করেছেন। শ্রেষ্ঠমত মাস রমযানও আমাদেরকে দান করেছেন। এসবের মূল্যায়ন করতে হবে। এলাকায় রোজার এমন পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে যাতে বেরোজদাররা রোযা না রাখার কারণে লজ্জিত হয় । নামাজের এমন পরিবেশে বানাবেন যাতে বেনামাজিরাও নামাজ ছেড়ে থাকতে না পারে। তিনি বলেন, পবিত্র রমযানের সাথে কোরআনের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। এ রমজানে আপনারা বেশি বেশি করে কোরআন পাঠ করবেন।

পবিত্র রমযানে ঘটিত ঐতিহাসিক যুদ্ধাবলির আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, এ রমযান মাসে মহান আল্লাহ পাক বদরের বিজয় দান করেছেন। ফতহে মক্কাও রমযানে সংগঠিত হয়েছে। রমযানের ঐতিহাসিক ঘটনাবলি আলোচনার জন্য দীর্ঘ সময় প্রয়োজন। আপনাদের কাছে একটাই দাবি থাকবে। আল্লাহর জমিনে আল্লাহর রাসুল ও তার সাহাবায়ে কেরাম যেভাবে দীন প্রতিষ্ঠার জন্য মেহনত করেছেন আপনারাও সেভাবে মেহনত করবেন। প্রয়োজনে দীনের জীবনের সবকিছু ত্যাগ করতেও প্রস্তুত থাকবেন।

আলোচনার শেষ পর্যায়ে এসে বলেন, আমরা সকলেই ভাই ভাই। মহানবি সা. আমাদেরকে ভাই ভাই বলেছেন। দুই জন এক সাথে হজ আদায় করলে তারা যদি ভাই ভাই হতে পারে আমরা একই কালিমা পাঠ করে কেন ভাই ভাই হতে পারব না? আমাদের সবার মাঝে একটা কঠিন সম্পর্ক আছে। সেটা হচ্ছে কালিমায়ে তায়িবা। আমরা সবাই তো এটা করি। এটার কারণে আমরা ভাই। এ মাদরাসা মসজিদ আপনাদের। এখানে দান দক্ষিণা করা আপনাদেরই দায়িত্ব। মাদরাসা উসতাদ ছাত্রদের সাথে সম্পর্ক রাখবেন। এরা আপনাদের পর নয়। আমরা আপনারা সবাই ভাই ভাই।

নামায পরবর্তী সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন হাটহাজারী উপজেলার সফল ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মাওলানা নাসির উদ্দীন মুনির সাহেব, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী সাহেব, হাফেজ মাওলানা তৈয়ব সাহেব, আলহাজ্ব জান্নাতুল ইসলাম চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন মাওলানা মীর ইদরীস নদভী, মাওলানা জাফর আহমদ, মাওলানা মাহমুদুল হোসাইন, মাওলানা কামরুল ক্বাসেমী, মাওলানা ইনআমুল হাসান ফারুকি, জনাব আহসান উল্লাহ মাস্টার, মাওলানা এনায়েত হোসাইন প্রমুখ।

উল্লেখ্য গত ১৫ মে বুধবার দুপুর চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এই প্রতিষ্ঠানটি দখলমুক্ত করে মোতাওয়াল্লী কর্তৃক মনোনীত পরিচালকের হাতে তুলে দিতে প্রশাসনের কাছে দাবী জানান হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব উক্ত সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি ওমর ফারুক মাদরাসা দখলমুক্ত না হলে কঠোর কর্মসূচী দেয়া হবে বলেও জানান।

আল্লামা বাবুনগরীর সংবাদ সম্মেলনের একদিনের মাথায় ১৬ মে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাদরাসাটি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়।

পূর্ববর্তি সংবাদআগামী ২০ মে থেকে বিআরটিসির আগাম টিকিট বিক্রি শুরু করবে
পরবর্তি সংবাদপুলওয়ামায় ভারতীয় বাহিনীর গুলিতে শহীদ দুই কাশ্মীরী তরুণ