ইসলাম টাইমস ডেস্ক: বাংলাদেশে ফলন ওঠার মৌসুমে ধানের দাম অস্বাভাবিক কমে গেছে। উৎপাদন খরচের তুলনায় দাম অনেক কম হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খবর পাওয়া যাচ্ছে যে ধানের দাম কমে যাওয়ায় কৃষকদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
ক্ষোভে কৃষকরা ধানে আগুন লাগিয়ে বা রাস্তায় ধান ঢেলে দিয়ে নানা অভিনব কায়দায় প্রতিবাদও জানিয়েছেন। তারা দাবি জানিয়েছেন ধানের ন্যায্যমূল্যের।
এমন প্রেক্ষাপটে সরকারের কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলছেন, এ মুহূর্তে ধানের দাম বাড়ানো খুবই কঠিন। তবে ধান রপ্তানির মতো ভিন্ন কিছু উপায়ের কথা তারা বিবেচনা করছেন।
এতে ধানের দামের ওপর একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে তিনি মনে করেন।
তার কথায়, “কিছুদিনের মধ্যে ধান কাটা শেষ হলেই ফসলের পরিমাণ দেখে তারা রপ্তানির সিদ্ধান্ত নেবেন।”
তবে বাংলাদেশের মত দুর্যোগপ্রবণ দেশে এ সিদ্ধান্ত অনেক ভেবেচিন্তে নিতে হবে বলে কৃষিমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক দাম কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে বলছেন, “আমরা বলছি যে ধানের উৎপাদন এবার আশাতীতভাবে বেশি হয়েছে। আমাদের টার্গেট ছিল এক কোটি চল্লিশ লক্ষ টন। ১৩ লক্ষ টন বেশি হয়েছে। ১৭ সালে সরকারি ও বেসরকারি গুদামে আমদানিটাও বেশি হয়েছিলো।”
কিন্তু যারা ইতিমধ্যেই ধান উৎপাদন করে ফেলেছেন এবং কম দাম হওয়ার কারণে বিপাকে পড়েছেন তাদের কী হবে?
এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এবার তাদের কিছুটা ক্ষতি হবে। তবুও আমরা চেষ্টা করছি যতটা সম্ভব কেনার।”
দেশের কৃষকরা যেখানে দাম পাচ্ছেন না সেখানে তারপরও বিদেশ থেকে চাল আমদানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমে তা নিয়ে বিস্তারিত খবর প্রকাশিত হয়েছে। এই প্রসঙ্গে কৃষিমন্ত্রী বলেন, “পত্রিকার খবর সঠিক নয়। পত্রিকায় বলা হয়েছে ২ লক্ষ টনের এলসি আছে। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি ৯৭ হাজার টন।”
তিনি বলছেন, বাংলাদেশে কৃষি এখন এক ধরনের পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কৃষির অনেক যান্ত্রিকীকরণ হচ্ছে।
সেটি আরও বেশি হলে দাম নিয়ে এই সমস্যা থাকবে না বলে তিনি মনে করছেন।
কৃষকদের এসব যন্ত্র কিনতে সাবসিডি (ভর্তুকি) দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
কৃষিমন্ত্রী বলছেন, “আমরা ৫০ শতাংশ সাবসিডি দিচ্ছি। একটা হারভেস্টাররের দাম ৮ লাখ টাকা। তাতে সরকার দিচ্ছে ৪ লাখ টাকা। একটা কম্বাইনার যদি ২৫ লাখ হয় অর্ধেক সরকার দেয়।”
ধান রপ্তানি করে কিভাবে ধানের দাম স্থিতিশীল করা যাবে – এমন প্রশ্নে কৃষিমন্ত্রী বলছেন, “বাংলাদেশ প্রচণ্ডভাবে দুর্যোগ প্রবণ। আমাদের ভয় হল হঠাৎ যদি বন্যা হয় তাহলে আবার আমরা বিপদে পড়বো। এজন্য চিন্তাভাবনা করে রপ্তানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
এসব চিন্তাভাবনা মাথায় রেখে শুধু ফলন ভালো হলে তবেই রপ্তানি করা যেতে পারে বলে জানান তিনি।
কিন্তু যেখানে সরকারের কৃষিমন্ত্রী স্বয়ং বলছেন, এবার আর দাম নিয়ে কিছু করা যাচ্ছে না তখন বিপাকে পড়া কৃষকরা কিভাবে ক্ষতি পোষাবেন সেই প্রশ্ন উঠছে।
সূত্র: বিবিসি
