তাফসির পরিচিতি: প্রাচীনতম তাফসিরের কিতাব তাফসীরে তাবারী

তাওহীদুল ইসলাম তায়্যিব।।

তাফসীরে তাবারী। কিতাবটির মূল নাম হলো ‘জামিউল বায়ান আন তাবীলি আয়িল কোরআন’। লেখক : তবারিস্তানের অধিবাসী খ্যাতনামা মুফাসসির ইমাম আবু জাফর মুহাম্মাদ ইবনে জারীর আত-তাবারী রাহ. (ইনতিকাল ৩১০ হিজরী)।

ইমাম তাবারী রাহ. যেহেতু বিখ্যাত প্রায় সকল তাফসির গ্রন্থকারদের আগের, তাই পরবর্তীগণ তাঁর কিতাব থেকে প্রচুর সহায়তা গ্রহণ করেছেন এবং এই কিতাবের উদ্ধৃতি উল্লেখ করেছেন।

কিতাবটি রিওয়ায়াত ভিত্তিক তাফসীরের সুব্যাপ্ত একটি সংকলন। মূলতেএই কিতাবে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত হাদীস এবং সাহাবায়ে কেরাম ও তাবিয়ীন রাহ.-এর বক্তব্যগুলোই জমা করা হয়েছে। এই কিতাবে ইমাম তাবারী রাহ. কোরআনে কারীমের প্রতিটি আয়াত উল্লেখ করার পর প্রথমে তার সংক্ষিপ্ত তাফসীর পেশ করেছেন। এরপর সেই তাফসীরের সূত্র ও প্রমাণ হিসাবে হাদীস ও আসার উদ্ধৃত করে মুফাসসির ইমামগণের মধ্য থেকে যারা এই তাফসীর করেছেন তাঁদের নাম উল্লেখ করেছেন। তারপর ভিন্ন কোনো তাফসীর থাকলে তাফসিরকারদের নাম ও দলীলসহ তা বর্ণনা করেছেন। হাদীস ও আসার উল্লেখ করার ক্ষেত্রে তিনি সনদ ও মতন (সূত্র ও বক্তব) এর ছোট বড় পার্থক্যও উল্লেখ করেছেন। আর কোরআনের শব্দ বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে জাহিলী ও ইসলামী যুগের কবিদের প্রচুর কবিতা উদ্ধৃত করেছেন।

এই কিতাবের গুরুত্বপূর্ণ একটি বৈশিষ্ট্য হলো, তাতে শাস্ত্রজ্ঞ ইমামগণের বরাতে আয়াতের বিভিন্ন কেরাত উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর একাধিক কেরাতের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো কেরাতকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। তবে একটি লক্ষণীয় বিষয় হলো, এই কিতাবে রেওয়ায়েত সংকলনের বিষয়ে সনদের মান বিবেচনায় তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। বরং সব ধরনের রেওয়ায়াত জমা করার প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই কিতাবটি গবেষকদের অতীব প্রয়োজনীয় হলেও সব ধরনের পাঠকের জন্য মুনাসিব মনে করা যায় না।

আরবের বিভিন্ন মাকতাবা থেকে বিখ্যাত গবেষকের তাহকীকসহ কিতাবটি প্রকাশিত হয়েছে। তন্মধ্যে ‘মুআসসাসাতুর রিসালা’র ২৪ খণ্ডের নুসখা ও ‘দারুল হিজর-’এর ২৬ খণ্ডের নুসখা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

পূর্ববর্তি সংবাদদুর্নীতির অভিযোগে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১৪ কর্মকর্তাকে শোকজ
পরবর্তি সংবাদবুযুর্গদের ইতিকাফ: রমযানে কুরআন তিলাওয়াতে মুখরিত থাকে বগুড়ার জামিল মাদরাসা