ইসলাম টাইমস ডেস্ক: নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত একটি ইফতার অনুষ্ঠানে বৈষম্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার নির্বাচন ভবনের ফোয়ারা চত্বরে ইফতার অনুষ্ঠানে একই অনুষ্ঠানে একই ছাদের নিচে দেয়া হয়েছে দু ধরনের খাবার।
সে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা, ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদসহ সহ অন্যান্য কমিশনাররা।
অভিযোগ রয়েছে, সিইসি, ইসি সচীবসহ ভিআইপিরা ইফতারে ভালো ভালো খাবার খেলেও তাদের অধীনস্থ সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভিন্ন খাবার দেয়া হয়েছে। সিইসিসহ বড় কর্মকর্তাদের সামনে ১৪ আইটেম পরিবেশন করা হলেও অন্যদের জন্য বরাদ্দ ছিল ১১ আইটেম।
আরও অভিযোগ এসেছে যে, সাধারণ মানুষদের ট্যাং এর শরবত দেয়া হলেও ভিআইপিরা সেই শরবতের পাশাপাশি পান করেছেন পোস্তা বাদামের শরবত। এছাড়া ভিআইপিদের পাতে ছিল লাল আঙুর ও চিকেন ভুনা যা সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দেয়া হয়নি। তাদের জন্য বরাদ্দ মেন্যুতে ছিল ট্যাং এর শরবত আর মাটন তেহারির প্যাকেট।
ওই ইফতার অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন গণমাধ্যমকর্মী কাজী হাফিজ। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেসবুকে এ নিয়ে প্রমাণ হিসাবে কয়েকটি ছবিসহ একটি স্ট্যাটাস পোস্ট করলে বিষয়টি ভাইরাল হয়।
মঙ্গলবার রাতে তার সেই পোস্টে অনেকেই ইফতারের মতো ধর্মীয় বিষয়ে এমন কাণ্ডকে অবিবেচকের মতো ও অগ্রহণযোগ্য কাজ বলে মন্তব্য করছেন।
কাজী হাফিজের ওই স্ট্যাটাসটিতে ঘটনার যে বর্ণনা পাওয়া যায় –
‘এই নির্বাচন কমিশনের পক্ষেই এমনটা সম্ভব। পবিত্র রমজানের ইফতার অনুষ্ঠানে এক ছাদের নিচে বসে আজ সাধারণ খাবারের অতিরিক্ত হিসাবে নিজেরা খেলেন পোস্তা বাদামের শরবত, লাল আঙ্গুর আর চিকেন ভুনা।
কমিশন সচিবালয়ের উঁচু পদের কর্মকর্তারাও এই বিশেষ ভোগ থেকে বঞ্চিত হননি। কিন্তু সাধারণ কর্মকর্তা- কর্মচারী আর সাংবাদিকরা এসব খাবার পেলেন না। ভিন্ন মেন্যুতে তাদের জন্য বরাদ্দ টেং এর শরবত আর মাটন তেহারির প্যাকেট । নির্বাচন কমিশনার আর কমিশনের উঁচু পদের কর্মকর্তাদের মেন্যুর সঙ্গে সাধারণ কর্মকর্তা -কর্মচারী ও সাংবাদিকদের মেন্যুটা পড়লেই বৈষম্যটি বুঝতে পারবেন।
সৌভাগ্যবানদের জন্য ১৪টি আইটেম আর হতভাগ্যদের জন্য ১১টি। এর মধ্যে সালাদের ক্ষেত্রেও পার্থক্য আছে। একপক্ষের জন্য মাখা সালাদ আর অন্যপক্ষের জন্য পিস ( শসার কয়েক টুকরা) সালাদ।’
এমন বৈষম্যমূলক ইফতার অনুষ্ঠান বিষয়ে কাজী হাফিজ নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করলেও এ নিয়ে বঞ্চিত সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে তাদের ভেতরে ভেতরে ক্ষোভ রয়েছে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবারের ওই সমালোচিত ইফতার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাবেক অনেক নির্বাচন কমিশন ও কর্মকর্তা, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া, র্যাবপ্রধান বেনজীর আহমদ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবসহ অনেকে।
