ইসলাম টাইমস প্রতিবেদন: ঈদুল ফিতর। রমযানের একমাস রোযা রাখার প্রতিদান দিবস। প্রতিদান ও ক্ষমার এই দিনটিকে খুশি ও আনন্দের দিন ধার্য করা হয়েছে। হাদীসে এইদিনে সাধ্যানুযায়ী ভালো খাবার খেতে এবং তুলনামূলক উত্তম পোষাক পরতে উৎসাহিত করা হয়েছে। গরীব-দুখীরাও যাতে এদিনে একদম আনন্দবঞ্চিত না থাকে সেজন্য সদকাতুল ফিতরের বিধান চালু করা হয়েছে।
কিন্তু রমযানে বেশি পরিমাণে ইবাদতের পুরস্কারপ্রাপ্তি হিসেবে খুশির দিন ধার্য করা ঈদ উদযাপনের আয়োজন করতে করতেই অনেকের রমযানের বরকতময় মুহূর্তগুলো কেটে যেতে দেখা যায়। রমযানের শুরুতে তারাবীসহ অন্যান্য নামাযে মুসুল্লীদের উপস্থিতি ব্যাপক থাকলেও ঈদ যতই কাছে আসে নামাযীর সংখ্যা দিনদিন কমতে থাকে। অথচ রমযানের শেষ দিনগুলোর গুরুত্ব অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় বেশি। রমযানের শেষ দিকেই কোনো একরাতে শবে কদর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ সময় আল্লাহর নৈকট্যশীল বান্দাগণ ইদিকাফের আমল করেন।
রমযান মাসের বরকতময় মুহূতর্গুলো বাজারে, মার্কেটে কাটিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে ইসলাম টাইমস- এর পক্ষ থেকে কথা বলা হয় চট্টগ্রামের বিশিষ্ট আলেম ড. আ. ফ. ম. খালিদ হুসাইন ও ঢাকার ফরিদাবাদ মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি ইমাদুদ্দীনের সঙ্গে।
ড. খালিদ বলেন, ঈদ মুসলমানদের আনন্দের দিন। একটি ধর্মীয় উৎসব। এদিনে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন পোষাক পরা ও ভালো খাবারের আয়োজন করা হয়ে থাকে। সেজন্য টুকটাক কেনাকাটার প্রয়োজনীয়তাও রয়েছে। তবে বর্তমানে যে শহরের মার্কেটগুলোতে রাতব্যাপী ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতি দেখা যায় এটা নিন্দনীয় কাজ। রমযানের প্রতিটা মুহূূতও গুরুত্বপূর্ন। বিশেষ করে শেষ দশকের রাত্রগুলোর গুরুত্ব তো বলে প্রকাশ করা যাবে না। এ সময়ই হয়ে থাকে হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ট কদরের রজনী।
রাসূল সা. রমযানের দুইমাস আগ থেকেই কাজ-কর্ম সেরে রমযানের প্রস্তুতি নিতেন উল্লেখ করে মাওলানা খালিদ হুসাইন জানান, ঈদের অত্যাবশ্যক যা কেনাকাটা তা রমযানের আগেই সেরে নেওয়া উচিত। তারপরও প্রয়োজন হলে রমযানের মাহাত্ম বজায় রেখে শালীনতা ভদ্রতার সাথে দ্রুত তা কিনে বাজার থেকে ফেরা উচিত।
মুফতি ইমাদুদ্দীনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ইসলাম টাইমসকে বলেন, জুমআর দিনের শ্রেষ্ঠত্ব যেমন অন্য ছয়দিনের উপর তেমনি রমযানের শ্রেষ্ঠত্ব বাকি এগারো মাসের উপর। রমযান ইবাদত করার বিশেষ মাস। পূর্বের উম্মতকেও ইবাদতের জন্য বিশেষদিন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা সেদিনে আল্লাহর ইবাদত না করে নাফরমানিতে লিপ্ত হওয়াই আল্লাহ তাদেরকে পাকড়াও করেন। এই উম্মতকে তো আর একসাথে শাস্তি দেওয়া হবে না। নতুবা মার্কেটে মার্কেটে ঘুরে যেভাবে রমযানের অমর্যাদা করা হয় তা আশঙ্কার কথা।
মুফতি ইমাদুদ্দীন আরো বলেন, কুরআন নাযিলের মাস রমযানে বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত, নামায ও যিকিরে কাটানো উচিত। প্রয়োজন ছাড়া মার্কেটে ঘুরাঘুরি বাদ দিয়ে মুসলমানরা যদি তওবার দিকে ফিরতে পারে তবে প্রতিদিনই তাদের কাছে আনন্দের হবে।
