পুলিশের উগ্রবাদ বিরোধী প্রতিযোগিতা স্কুল-কলেজকে বাদ রেখে শুধু মাদরাসায় কেন: আল্লামা কাসেমী

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে ‘মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের জন্য উগ্রবাদ বিরোধী রচনা প্রতিযোগিতা’ শিরোনামে গতকাল শনিবার যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়, তাতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী।

গতকাল (২৬ মে) রবিবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট কর্তৃক প্রচারিত এই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহিংস উগ্রবাদ বিরোধী সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য রচনা আহবান করা হচ্ছে’।

আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, গুলশানের হলিআর্টিজেন-এর ভয়াবহ ঘটনাসহ এ পর্যন্ত বাংলাদেশে যেসব জঙ্গী ও সন্ত্রাসী ঘটনা সংঘটিত হয়েছে, তার সবগুলোর সাথে ইংলিশ মিডিয়াম ও আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত তরুণরাই জড়িত দেখা গেছে। প্রধামন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী, এমপি, এমনকি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণও বার বার এটা স্বীকার করেছেন যে, জঙ্গিবাদের সাথে মাদ্রাসার ছাত্রদের সম্পৃক্ততা নাই, বরং সাধারণ উচ্চশিক্ষিত ও বিত্তশালী পরিবারের সন্তানরাই জড়িত।

তিনি বলেন, এমন বাস্তবতায় স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষিতদের বাদ দিয়ে শুধুমাত্র ‘মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের জন্য পুলিশের ‘উগ্রবাদ বিরোধী রচনা প্রতিযোগিতা’র আয়োজন গুরুতর আপত্তিকর ও উদ্বেগজনক। এটা আলেম-উলামা, মাদ্রাসা শিক্ষাসহ সর্বোপরি ইসলাম ও ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি পরিকল্পিতভাবে সমাজে ঘৃণা ও নেতিবাচক মনোভাব তৈরির চেষ্টা বলেই আমাদের মনে হচ্ছে। পুলিশের এমন একপেশে প্রতিযোগিতা আয়োজনের খবরে দেশের আলেম সমাজ ও তৌহিদী জনতাকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।

আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, অবিলম্বে মাদরাসা শিক্ষা, আলেম-উলামা ও ইসলামী শিক্ষার প্রতি নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টিকারী এই প্রতিযোগিতা বন্ধ করুন। এই প্রতিযোগিতা বহাল থাকলে দেশের আলেম সমাজ ও জনগণের মনে পুলিশের ভূমিকা ও ভাবমূর্তিকে মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। কারণ, এই একপেশে ও বিতর্কিত প্রতিযোগিতার লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের সাথে আন্তর্জাতিক ইসলামনির্মূলবাদী চক্রের ভাষার যথেষ্ট মিল রয়েছে।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহিংস উগ্রবাদ বিরোধী সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতিযোগিতার প্রয়োজন মনে করা হলে, তাতে স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটিসহ সকল স্তরের শিক্ষার্থীকে শামিল করুন। আলেমরা প্রতিদিনই শান্তির পক্ষে এবং সমাজে সন্ত্রাস ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে শিক্ষা দিয়ে থাকেন।

পূর্ববর্তি সংবাদসিরিয়ায় যেভাবে কাটছে গৃহহীন মানুষের রমযান
পরবর্তি সংবাদইন্দোনেশিয়ায় ১৮ হাজার মদের বোতল ধ্বংস