দেড় কোটি নাগরিকের স্মার্টকার্ড অনিশ্চিত

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: চুক্তিভঙ্গের দায়ে উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়ত্র (এনআইডি) বা স্মার্টকার্ড প্রস্তুততকারী প্রতিষ্ঠান অবার্থার টেকনোলজিসকে জরিমানা আদায় করতে পারেনি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। উল্টো ব্ল্যাংক স্মার্টকার্ড (যে কার্ডে তথ্য ইনপুট করা হয়) আটকে রেখেছে ফরাসি প্রতিষ্ঠানটি। যে কারণে প্রায় দেড় কোটি নাগরিক সহসা স্মার্টকার্ড পাচ্ছেন না।

ইসি সূত্র জানিয়েছে, চুক্তি অনুযায়ী, অবার্থার সময়মতো কার্ড সরবরাহ না করলে জামানতের টাকা ফেরত না পাওয়ার কথা ছিল। নির্বাচন কমিশন সে টাকা আটকে দিলে প্রতিষ্ঠানটি ফরাসি দূতাবাসের মাধ্যমে বিভিন্ন মহলে তদবির শুরু করে দেয়। তারা কারণ দেখায় ব্ল্যাংককার্ড সব তৈরি করা হয়েছে। যার মধ্যে সরবরাহের বাকি আছে ১ কোটি ৩৪ লাখ কার্ড। আর কার্ডগুলো নিয়ে তারা তাদের ব্যয় মেটানোর পরিশোধের দাবি তোলে। আর এজন্য তাদের পরিশোধ করতে হবে ২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা দুইশ কোটি টাকার বেশি।

২০১৫ সালের ১৪ জানুয়ারি ৯ কোটি নাগরিকের স্মার্টকার্ড সরবরাহে অবার্থারের সঙ্গে ৭৯৬ কোটি ২৬ লাখ টাকার চুক্তি করেছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। শর্ত অনুযায়ী ১৮ মাসের মধ্যে সবগুলো স্মার্টকার্ড তৈরি করে দেওয়ার কথা থাকলেও ৩০ মাসেও পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে চুক্তির মেয়াদ করা হয় ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত। সে সময় ফাঁকা কার্ড পাঠিয়েছে ছয় কোটি ৬৩ লাখ ছয় হাজার। এগুলোর মধ্যে পারসোনালাইজেশন হয়েছে এক কোটি ২৪ লাখ। ব্ল্যাংককার্ড দিতে পারেনি দুই কোটি ৩৬ লাখ চার হাজার। বর্তমানে কার্ড দেওয়া বাকি আছে ১ কোটি ৩৪ লাখ।

এ বিষয়ে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, অবার্থারকে টাকা ছাড় করে কার্ড বুঝে নিতে একটু আইনি জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। একটি পক্ষ টাকা ছাড় না করতে মামলা করেছে। আমরা আইনি লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আদালতের একটি নির্দেশনা আছে অর্থ পরিশোধ না করার জন্য। আমরা আপিল করবো।

ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, চুক্তি অনুযায়ী সময়মতো কার্ড দিতে না পারায় অবার্থারের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু উল্টো অবার্থারই এখন বেকায়দায় ফেলেছে। বলছে, তাদের ব্ল্যাংককার্ড তৈরিতে যে ব্যয় হয়েছে, সেটা না দিলে কার্ড দেবে না।

দেশে ভোটার রয়েছেন ১০ কোটি ৪৮ লাখের মতো। সেই ৯ কোটির বাইরে নতুন দেড় কোটি ভোটার ও ভবিষ্যতে সব নাগরিককে স্মার্টকার্ড দেওয়ার নতুন প্রকল্প হাতে নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। সরকারের তহবিল থেকেই এই ব্যয় মেটানো হবে।

পূর্ববর্তি সংবাদঈদে সবার মুখে ফুটে উঠুক প্রাণখোলা হাসি
পরবর্তি সংবাদঅর্থনৈতিক অবস্থা চিন্তা করে বাজেট কমাচ্ছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী