ঈদযাত্রায় সড়কে বেদনাদায়ক প্রাণহানি: কারণ ও প্রতিকার নিয়ে যা বলেন ইসলামিক স্কলারগণ

ইসলাম টাইমস প্রতিবেদন: ঈদ আনন্দের জন্য। প্রতিবার ঈদ আসে খুশির বার্তা নিয়ে। আনন্দময় ঈদ উদযাপনের উদ্দেশ্যে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলা শহর থেকে কর্মব্যস্ত মানুষ ছুটে যান পরিচিতজনদের কাছে। কিন্তু যাত্রাপথে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে বহুজনের ঈদ আনন্দ মাটি হয়ে যায়। অনেক পরিবার ঈদের জামাতের শেষে জানাযার জন্য গোসল দেন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়া তাদের আপনজনকে।

সংবাদমাধ্যমে পাওয়া তথ্যমতে এবার ঈদের আগে পরে সড়ক দুর্ঘটনায় সারাদেশে নিহত হয়েছেন ২২১ জন। আহত হয়েছেন ৬৫২ জন। মারাত্মক আঘাত পেয়ে পঙ্গু হয়েছেন ৩৭৫ জন। ২০১৮ সালের ঈদুল ফিতরে প্রায় ৩০০ জনের মতো মানুষ সড়কে প্রাণ হারিয়েছিলেন।

সড়কে অব্যাহত প্রাণ ঝরার সংবাদে মানুষ আতঙ্কিত। প্রশাসনের দায়িত্বশীল বিভিন্ন পর্যায় থেকে এবারের ঈদযাত্রা স্বস্তির হবে বলে ঘোষণা করলেও থেমে থাকেনি সড়ক দুর্ঘটনা। বাস খাদে পড়ে, বাস-ট্রাক সংঘর্ষে, সিএনজি উল্টে আরো নানাভাবে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে মানুষ। সড়কে মৃত্যু এখন কোনো দুর্ঘটনা নয় বরং নিয়মিত ঘটনা। গতকাল সংসদে সেতুমন্ত্রী গত দশবছরে সড়কে ২৫ হাজার লোক নিহত হওয়ার সংবাদ জানালেন।

ঈদযাত্রায় অব্যাহত সড়ক দুর্ঘটনার কারণ ও তার প্রতিকার কী এ ব্যাপারে কথা বলা হয় মারকাযুদ দাওয়াহ আল ইসলামিয়ার উস্তায মাওলানা যাকারিয়া আবদুল্লাহ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান শামীমের সাথে।

মাওলানা যাকারিয়া আবদুল্লাহ ইসলাম টাইমসকে বলেন, চালকদের অদক্ষতা ও বেপরোয়া মনোভাব এবং যাত্রীদের অসাবধানতা সড়ক দুর্ঘটনার প্রধানতম কারণ। এছাড়া বাংলাদেশের সড়কের অব্যবস্থাপনাও দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। বাস-ট্রেনের ছাদে করে যাতায়াত, গাড়িতে অতিরিক্ত যাত্রী উঠা সড়কে ভয়াবহতা ডেকে আনে।

প্রতিকার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাওলানা যাকারিয়া আবদুল্লাহ বলেন, যাত্রীদের সচেতনতা, চালকদের দক্ষতা থাকার পাশাপাশি প্রশাসনের এ ব্যাপারে নজরদারি করা উচিত। ঈদে একসাথে অনেক মানুষের যাতায়াতের কথা বিবেচনা করে আগ থেকেও পরিবহন বাড়ানো ও সেগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়া উচিত। তাছাড়া আলেমদের কর্তব্য থাকবে চালক, যাত্রী সবার মাঝে সচেতনতার আলোচনা করা।

অধ্যাপক কামরুজ্জামান সড়ক দুর্ঘটনার কারণ প্রসঙ্গে ইসলাম টাইমসকে বলেন, ঈদের সময় দেখা যায়, ঢাকার বিভিন্ন রুটে চলা ছোট ছোট বাসগুলিও ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে দূর-দূরান্তে রওয়ানা দিয়ে দেয়। চালকের সহকারী যারা তারাও এসময় গাড়ি ড্রাইভ করতে শুরু করে। মালিকপক্ষ এতে কোনো বাধা দেয় না। অদক্ষ চালক এবং ফিটনেসবিহীন গাড়ি সড়ক দুর্ঘটনার প্রধানতম কারণ। এক্ষেত্রে যাত্রীদের অনেকেও নিজের নিরাপত্তার কথা না ভেবেই কোনোমতে গন্তব্যে পৌঁছার চেষ্টা করেন। এছাড়া দূরপাল্লার গাড়ির চালকরাও ঈদ উপলক্ষে অধিক ইনকামের জন্য বেপরোয়া গাড়ি চালায়। ফলে বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটে।

সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিকার কী জানতে চাইলে ড. কামরুজ্জামান বলেন, জনসচেতনতা ও আইনের সঠিক প্রয়োগই সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে সাহায্য করবে।

পূর্ববর্তি সংবাদআগামীকাল বাজেট–পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন করবেন প্রধানমন্ত্রী
পরবর্তি সংবাদআফগানিস্তানে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত ৮, আহত ১২