মুফতি আবদুল্লাহ মামুন কাসেমী ।।
পরিবারের কোনো সদস্য যখন অসুস্থ হয় তখন পরিবারের সবার কষ্ট হয়। একটা বাচ্চা অসুস্থ হলে মা বাবার রাতে ঘুম নেই। এমনও দেখা যায়, পরিবারের সবাই সুখী। কারো কোনো সমস্যা নেই।কিন্তু সেই পরিবারের কোনো একজন সদস্যের পেরেশানীতে দেখা যায় গোটা পরিবারটাই পেরেশান।
এখন দেশে হাজার হাজার মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত। খোঁজ নিলে দেখা যাবে, আমাদের কোনো আত্মীয় কিংবা আমাদের আত্মীয়ের আত্মীয় অথবা আমাদের কোনো সহকর্মীর আত্মীয়- মোটকথা কোনো না কোনোভাবে আমাদের সাথে সম্পৃক্ত কেউ এ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত।
প্রথম শোনা গেল, শুধু ঢাকায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে। পরে শোনা গেল আশপাশের বিভিন্ন জেলায়। পরে জানা গেল দেশের সকল জেলায় এ ব্যাধি ছড়িয়ে পড়েছে।
এখন এই পরিস্থিতিতে বিভিন্নজন মহলকে দেখা যাচ্ছে একে অন্যকে দোষারোপ করছে। অন্যের উপর দায় চাপাবার চেষ্টা চলছে। কিন্তু এভাবে দোষারোপ করে কোনো জিনিসের সমাধান হয় না। এভাবে আসল কারণটাই ঢাকা পড়ে যায়।
প্রকৃতপক্ষে ডেঙ্গুর মহামারিসহ এ জগতে যত ধরণের বিপর্যয় সবই মানুষের হাতের কামাই। এগুলো আমাদেরই কর্মের ফল। ইরশাদ হয়েছে, জলেস্থলে মানুষের কুকর্মের কারণে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে।আল্লাহ তাদেরকে তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করাত চান, যাতে তারা ফিরে আসে।
আল্লাহ পক্ষ থেকে এই যে শাস্তি এটা আমাদেরই কল্যাণ এর জন্য। যেন আমরা ফিরে আসি। তওবা করি এবং আখেরাতের শাস্তি থেকে বেচেঁ যাই।
আরেক আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, তোমাদের উপর যেসব মুসিবত আপতিত হয়, তা তোমাদেরই কর্মের ফল। আর তিনি তোমাদের অনেক গোনাহ ক্ষমা করে দেন।
আমাদের কর্মের কারণে যে পরিমাণ বিপদ আসার কথা আল্লাহ আমাদেরকে সেই পরিমাণ পাকড়াও করেন না। আমাদের বেশির ভাগ অপরাধই আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। কেবল সামান্য অপরাধের শাস্তিই এ দুনিয়ায় দেওয়া হয়। তাও আমাদের কল্যাণের জন্য যেন আমরা দুনিয়ার বিপদ দেখে সচেতন হই এবং আখেরাতের বিপদ থেকে বাঁচার চেষ্টা করি।
অন্যের প্রতি অভিযোগ ইসলামের শিক্ষা নয়। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে অভিযোগ করতে হয় নিজের বিরুদ্ধে। এই যে নামাজ শেষে দোয়া পড়ি, আল্লাহুম্মা যালামতু নাফসি… আয় আল্লাহ আমিই আমার নিজের উপর যুলুম করেছি।… তুমি ছাড়া ক্ষমা করার কেউ নেই।
তায়েফে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নির্যাতিত হয়ে তায়েফবাসীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেননি। অভিযোগ করেছেন নিজের বিরুদ্ধে। নিজের দূর্বলতা, অক্ষমতা আল্লাহর সামনে পেশ করেছেন।
প্রত্যেকে যদি আমরা নিজেদের দিকে তাকাই, নিজের আমলের হিসাব করি তাহলে ইস্তিগফারের রাস্তা খুলবে। আর ইস্তিগফার চলা অবস্থায় আল্লাহ কাউকে শাস্তি দেন না। ইস্তিগফার করলে আল্লাহ শাস্তি উঠিয়ে নেন।
ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহ তাদেরকে ততক্ষণ পর্যন্ত শাস্তি দেবেন না যতক্ষণ তারা ইস্তিগফার করতে থাকবে। এজন্য বর্তমান পরিস্থিতির জন্যে আমরা বেশি বেশি ইস্তিগফার করতে থাকি।
জুমার বয়ান থেকে অনুলিখন: এনাম হাসান জুনাইদ
![](https://www.islamtime24.com/wp-content/uploads/2021/03/20210308_200803-scaled.jpg)