বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাশ্মিরী যুবকদের তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের সংবিধানিক বিশেষ মর্যাদা বিলোপ করার পর গত দুসপ্তাহে শত শত যুবককে আটক করা হয়েছে।  আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপি দেশটির সরকারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে দাবি করছে, সেখানে কমপক্ষে চার হাজার লোককে বন্দী করা হয়েছে।

কাশ্মিরি রাজনীতিবিদ শেহলা রশিদ দিল্লিতে একের পর এক টুইট করে বলেছেন, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা রাতে বাড়িতে বাড়িতে হানা দিয়ে তরুণ যুবকদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে।

শেহলা রশিদ এক টুইটে লিখেন, “তারা বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর করছে, খাবার ফেলে দিচ্ছে বা চালের বস্তায় তেল ঢেলে দিচ্ছে এবং শেষে বাড়ির যুবকদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে।”

তিনি আরো লিখেছেন, সোপিয়ানের একটি আর্মি ক্যাম্পে চারজন যুবককে ধরে নিয়ে গিয়ে জেরা ও নির্যাতন করার সময় তাদের সামনে মাইক্রোফোন ধরে রাখা হয়েছিল – যাতে তাদের চিৎকারের আওয়াজ শুনে গোটা এলাকা ভয় পায়।

ঠিক দুসপ্তাহ আগের আর এক সোমবারে ভারতীয় পার্লামেন্টে কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষিত হওয়ার পর থেকে সেখানে এযাবত কতজনকে আটক করা হয়েছে, তা নিয়ে প্রশাসন আগাগোড়াই অস্পষ্টতা বজায় রেখেছে। তবে সরকারি মুখপাত্র নির্দিষ্টভাবে কোনও সংখ্যা জানাতে অস্বীকার করলেও বার্তা সংস্থা এএফপি কাশ্মিরে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে উদ্ধৃত করে বলছে, আটকের সংখ্যা কিছুতেই চার হাজারের কম হবে না।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মীনাক্ষি গাঙ্গুলিও বলছিলেন পরিস্থিতি সত্যিই উদ্বেগজনক। তার কথায়, “দেখুন ডিটেনশন তো শুধু গত দুসপ্তাহে নয় – তার বহু আগে থেকেই হচ্ছে। ইয়াসিন মালিক কিংবা হুরিয়াতের আরও বহু নেতাকে তো অনেকদিন ধরেই আটকে রাখা হয়েছে। সরকার যদিও বলছে যে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে তারা খুব অল্প কিছু লোককে আটক করেছে, আমরা কিন্তু বলব আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে তারা এখানে তাদের দায়িত্ব পালন করছে না। আমরা এনিয়ে খুব শিগগিরি বিবৃতিও দেব। এসব ক্ষেত্রে সরকারের দায়িত্ব হল স্বচ্ছতার সঙ্গে আটককৃতদের নামের তালিকা প্রকাশ করা, যাতে পরিবারের লোকজন জানতে পারে তারা কোথায়।”

“তাদেরকে আইনি সহায়তা দেওয়া দরকার, ডিটেনশনের মেয়াদ যাতে অনির্দিষ্টকাল না-হয় সেটা যেমন দেখা দরকার – তেমনি ডিটেনশন ছাড়া অন্য কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যেত কি না, সেটাও জাস্টিফাই করতে হয়। কিন্তু কাশ্মিরে ভারত সরকার কোনোটাই এখনও করেনি”, বলছিলেন মীনাক্ষি গাঙ্গুলি।

শ্রীনগরের লেখক ও গবেষক বশির আসাদও অবশ্য দিল্লিতে বলেছেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রচুর লোককে আটক করা হচ্ছে এবং এখানে মূলত নিশানা করা হচ্ছে জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক ও ভাবধারার লোকজনকে।”

“বস্তুত কাশ্মিরে জামাতকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল মাসদুয়েক আগেই, এখন তাদের সমর্থকদের জেলে আসা-যাওয়া লেগেই আছে”, বলছিলেন আসাদ।

 

এএফপি দাবি করেছে, কাশ্মিরের জেলে আর জায়গা নেই বলে আটক বহু ব্যক্তিকে বাকি ভারতেও পাঠাতে হচ্ছে।

পূর্ববর্তি সংবাদডাবের পানিতে আগুন! ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে একটি ডাব
পরবর্তি সংবাদডা. জাকির নায়েকের ভাষণ নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে মালয়েশিয়ার ৭ রাজ্যে