ইসলাম টাইমস ডেস্ক: আবরারের জীবনদান আধিপত্যবিরোধী সংগ্রামে আগামীর জন্য মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী।
তিনি বলেন, আবরারের জীবনদান আধিপত্যবিরোধী সংগ্রামে আগামীর জন্য মাইলফলক হয়ে থাকবে। ইতিমধ্যেই সারা দেশের সাধারণ ছাত্রসমাজ আবরার হত্যার প্রতিবাদের পাশাপাশি আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধেও ফুঁসে উঠেছে।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, দেশপ্রেমিক সাধারণ ছাত্রসমাজ ও শান্তিপ্রিয় জনতার প্রতি আমাদের উদাত্ত আহ্বান, এই মৃত্যু উপত্যাকাকে শান্তিময় করতে আবরার হত্যার প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে সবার স্বোচ্চার শামিল হয়ে দেশবিরোধী শক্তিকে উৎখাত করতে হবে।
আল্লামা কাসেমী বলেন, ভারতের বহুমুখী আগ্রাসনসহ সর্বশেষ ফেনী নদীর পানি ভারতকে দেয়ার প্রতিবাদ এবং ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের অন্যায্য চুক্তির অসঙ্গতিসমূহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তুলে ধরায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে।
দেশের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠানের একজন দেশপ্রেমিক মেধাবী ছাত্রকে রুম থেকে ধরে নিয়ে হলের ভেতরে এভাবে পিটিয়ে হত্যাকাণ্ড দেশের জন্য এক ভয়াবহ অশনিসংকেত।
এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের নেতাদের প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতার কথা পত্র-পত্রিকায় স্ববিস্তার প্রকাশিত হয়েছে। আমরা আবরার হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা এবং অবিলম্বে হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের মাধ্যমে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, আবরার সত্য তথ্য উল্লেখ করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিল। সেই পোস্টে ভারতের সঙ্গে অসম চুক্তির অসঙ্গতিগুলো তুলে ধরেছিল। আর এ জন্যই আজ তাকে জীবন দিতে হল। মেধাবী তরুণ আবরার ফাহাদের নৃশংস হত্যার ঘটনায় গোটা জাতিকে যেমন কাঁদিয়েছে, তেমনি বিক্ষুব্ধ করে তুলেছে। আজ দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে এই ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে, যাতে আর কোনো মায়ের কোল শূন্য না হয়।
আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, এটা কোন্ দেশ? খুনিদের সরকারি দলের তকমা থাকলেই তারা দেশটাকে হিংস্রতার অভয়ারণ্য বানিয়ে ছাড়ে। আর তাই নির্ভয়ে তারা বিরোধী মত ও পথের মানুষদের অবলীলায় হত্যা করতেও দ্বিধা করছে না।
জমিয়ত মহাসচিব বলেন, আমরা সরকারের প্রতি তীব্র হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলতে চাই, অবিলম্বে আবরার ফাহাদের খুনিদের গ্রেফতার এবং দ্রুত বিচারের মাধ্যমে সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর করুন। সঙ্গে সঙ্গে ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত ফেনী নদীর পানি, গ্যাস বিক্রি, উপকূলে রাডার স্থাপন, সড়কপথে ট্রানজিট, নদী ও বন্দর ব্যবহারসহ অসম সব চুক্তি বাতিল করতে হবে।
অন্যথায় সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, জাতীয় স্বার্থরক্ষা এবং দেশকে নিরাপদ করতে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে।