ইসলাম টাইমস ডেস্ক : যদিও কিছু উগ্রপন্থী হিন্দুত্ববাদী দল ও বিজেপির কিছু নেতা এগুলোর গুরুত্ব খাটো করে দেখাতে চান কিন্তু অফিসিয়াল হিসাবে দেখা যায়, ভারতের প্রথম সারির রাজস্ব উৎপাদনকারী প্রাচীন নিদর্শনাবলীর পাঁচটিই মুসলিম শাসকদের হাতে নির্মিত। সেগুলো হচ্ছে, তাজমহল, আগ্রার দূর্গ, কুতুব মিনার, ফাতেহপুর শিকরি, লালকেল্লা।
কুতুব মিনার নির্মিত হয় ভারতে মুসলিম সুলতান কুতবুদ্দীন আইবেকের আমলে আর বাকী চারটি নির্মিত হয় মোঘলদের হাতে।
২০১৭-১৮ অর্থ বছরে এই পাঁচটি প্রাচীন নিদর্শন থেকে ভারত সরকারের আয় হয়েছে ১৪৬.০৫ কোটি রুপি, যা ভারতের রাষ্ট্রীয়ভাবে সংরক্ষিত প্রাচীন নিদর্শনাবলীর মোট আয়ের (২৭১.৮ কোটি) অর্ধেকের চেয়েও বেশী। ভারতের প্রত্মতত্ত্ব বিভাগের জরিপ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ভারতের প্রত্মতত্ত্ব বিভাগের যারপরনাই দুর্ব্যবস্থাপনার পরও সবচেয়ে বেশী আয় হয় তাজমহল থেকে, যার পরিমাণ ৫৬.৮৩ কোটি রুপি।
২০১৭-১৮ অর্থ বছরে তাজমহলের দেশী-বিদেশী দর্শনার্থীর সংখ্যা ৬৪.৫৮ লাখ যা ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ছিল ৫০.৬৬লাখ।
তারপরও ভারতের কতক রাজনীতিক মাঝেমধ্যে বিতর্ক সৃষ্টি করে বলে থাকেন, মোঘল আমলের এই নিদর্শনটি ভারতীয় সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করে না। তাই গত বছর ইউপি ট্যুরিজম ডিপার্টমেন্ট প্রদেশের প্রধান পর্যটনকেন্দ্রের তালিকা থেকে তাজমহলকে বাদ দিয়েছে।
দ্বিতীয় অর্থকরী প্রাচীন নিদর্শন হিসাবে ধরা যায় আগ্রা দূর্গকে, যার বার্ষিক আয় ৩০.৫৫ কোটি রুপি। তাজমহলের মত এটিও আন্তর্জাতিক ভাবে ইউনেসকো থেকে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত প্রাচীন নিদর্শন।
যদি দর্শনার্থীর সংখ্যা বিচার করা হয় তাহলে তাজমহলের পরের স্থান কনার্ক সূর্য মন্দিরের। এতে দর্শনার্থীর সংখ্যা প্রায় তাজমহলের পরেই। কিন্তু এর আয় মাত্র ১০.০৬ রুপিয়া। কারণ এর দর্শনার্থী কেবল হিন্দুরাই।
বলা বাহুল্য, দেশীয় দর্শনার্থীদের থেকে জনপ্রতি নেওয়া হয় ৩০ রুপি, সেখানে বহিরাগতদের থেকে নেওয়া হয় জন প্রতি ৫০০ রুপি।
‘অর্থহীন রাজনীতির বুলি আওড়ে পুরো ভারতকে সাম্প্রদায়িক বানানো কখনোই সম্ভব নয়,’ তাজমহলে দিন দিন দর্শনার্থীদের সংখ্যা বাড়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলছিলেন ইতিহাসবিদ ইরফান হাবিব।
‘তাজমহল ও লাল কেল্লা নিয়ে রাজনীতিকরা যে যাই বলুক না কেন, ভারতীয়দের কিন্তু এগুলো ছাড়া উপায় নেই’, যোগ করেন ইরফান হাবিব।
ভারতের দি প্রিন্ট পত্রিকা থেকে অনুবাদ : এনাম হাসান জুনাইদ।