শরীফ মুহাম্মদ ।।
আল্লামা আযহার আলী আনোয়ার শাহ। বাংলাদেশের অন্যতম অভিভাবক আলেমেদ্বীন। শুয়ে আছেন রাজধানীর টোলারবাগের একটি হাসপাতালের কেবিনে। আজ (৯ জানুয়ারি) বাদ মাগরিব তাঁকে দেখতে গিয়েছিলাম। চলমান দীর্ঘ চিকিৎসার মধ্যে তিনি কেমন আছেন এখন, কী অবস্থা তাঁর স্বাস্থ্য, বোধ ও চিন্তার, উজ্জ্বল ও আশাব্যঞ্জক চিত্র দেখে এলাম তারই।
এই শীর্ষ আলেমেদ্বীন কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড-বেফাক ও মাদরাসা বোর্ডসমূহের সম্মিলিত সংস্থা-হাইআতুল উলয়ার সিনিয়র সহ-সভাপতি। তিনি কিশোরগঞ্জ আলজামিয়াতুল ইমদাদিয়ার মহাপরিচালক ও ঐতিহ্যবাহী শহীদি মসজিদের খতিব। গত অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে চিকিৎসার জন্য তাঁকে নেওয়া হয় ব্যংককে। দেড় মাসের বেশি সময় সেখানে তাঁর চিকিৎসা চলেছে। এখন ঢাকার হাসপাতালে চলছে তাঁর চিকিৎসা পরবর্তী প্রতিক্রিয়া জনিত স্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয় সেবা ও পরিচর্যা। তাঁর শারীরিক অবস্থা পর্যায়ক্রমে উন্নতির দিকে।
এরকম পরিচর্যা ও পর্যবেক্ষণ চলবে আরো প্রায় মাস দেড়েকের মতো। ব্যংককের চিকিৎসকদের ভাষ্য হলো, নির্ধারিত এই সময়ের পর ইনশাআল্লাহ তিনি পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠবেন।
তীব্র অসুস্থতা, ভারি চিকিৎসা ও চিকিৎসা পরবর্তী এই দুর্বলতার মধ্যেও বরেণ্য এই আলেমেদ্বীন বোধ ও চিন্তায় আশ্চর্যরকম সজীব, আলহামদুলিল্লাহ। অধম আমি যখন রুমে ঢুকে তাঁর সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম, উপস্থিত কেউ কিছু বলার আগে, মুহূর্তের মধ্যেই আমার নাম ধরে সম্বোধন করে তিনি নিজ থেকেই কথা বললেন। শিফার দোয়া পড়লাম, আওয়াজ করে তিনি আমীন, আমীন বললেন। তাঁর ছলছল করা চোখের দিকে তাকিয়ে আমার চোখ ভিজে এল। তিনি এর মধ্যেই তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমার পরিস্থিতি জানতে চাইলেন।
মাওলানা আনোয়ার শাহ : জীবনের দিনলিপি
মনীষী ও ব্যক্তিত্ববান আলেমেদ্বীন হযরত আনোয়ার শাহ’র চিকিৎসার শুরু থেকেই তাঁর সঙ্গে জড়িয়ে আছেন তাঁরই স্নেহভাজন জামাতা মাওলানা জালালুল ইসলাম ভাই। তাঁর সঙ্গে দীর্ঘ কথা হলো। আন্তরিক এই মানুষটি জানালেন, ব্যাংককে আল্লামা আনোয়ার শাহ’র চিকিৎসা অত্যন্ত সুন্দরভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। চিকিৎসার স্বাভাবিক নিয়মানুযায়ী সেখানকার চিকিৎসকরা বলেছেন, তাঁর স্বাস্থ্যগত অবস্থা আশাব্যঞ্জক। ক্রমেই তিনি সুস্থ হয়ে উঠছেন এবং মাস দেড়েকের মধ্যে ইনশাআল্লাহ পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠবেন।
মাওলানা জালাল ভাই আরো জানালেন, এই অসুস্থ অবস্থা এবং এই তীব্র ক্লান্তির মধ্যেও হযরত আনোয়ার শাহ দায়িত্বশীল কাউকে পেলেই মুসলিম উম্মাহ, ইসলামি শিক্ষা, বেফাক, জামিয়া ইমদাদিয়া, তাবলীগ জামাত-ইজতেমা ইত্যাদি বিষয়ে কথা বলেন, পরিস্থিতি জানার চেষ্টা করেন, হৃদয়ের তড়প পেশ করে পরামর্শ দেন। দেশের বেশ কয়েকজন শীর্ষ আলেমেদ্বীন চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁকে দেখতে এলে তিনি এসব বিষয় নিয়েই সময় দিয়েছেন ও কথা বলেছেন বেশি।
উম্মাহ দরদী এই আলেমেদ্বীনের পূর্ণ সুস্থতার জন্য এখন আমাদের কাজ, আল্লাহর দরবারে তাঁর জন্য দোয়া করা- আল্লাহ তাঁকে শিগগির পূর্ণ শিফা দান করুন, এই উম্মাহর জন্য তাঁর হায়াত ও দরদকে আরও কাজে লাগানোর সুযোগ দিন।
![](https://www.islamtime24.com/wp-content/uploads/2021/03/20210308_200803-scaled.jpg)