শনিবার বাদ ফজর বয়ান : যে দ্বীনের উপর থাকবে আল্লাহ তাকে সফলতা দান করবেন, মাওলানা আব্দুর রহমান (মুম্বাই)

ইসলাম টাইমস প্রতিনিধি :   দ্বীনের কথা শোনার হক তিনটি ৷

১. ভালোভাবে ধ্যান লাগিয়ে শুনবো৷ যখন ধ্যান লাগিয়ে কথা শুনবো তখন সে কথা দ্বারা উপকৃত হতে পারবো।

২. দ্বীনি কথা আমলের নিয়তে শুনবো। আমলে নিয়তে শুনে যখন আমল করবো তখন আল্লাহর পক্ষ থেকে যে পুরস্কার আসার কথা তা আমরা পাবো৷

৩. দ্বীনের কথার তাবলীগ করা৷ যেকথা যেভাবে শুনবো সে কথা সেভাবে অন্যের কাছে পৌঁছাবো। সারা দুনিয়ায় পৌঁছানোর মেহনত থাকতে হবে৷ হতে পারে আমি যার কাছে পৌঁছাবো সে আমার চেয়ে বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাবে এবং মেহনত বেশি করবে৷

সারা দুনিয়ায় প্রায় ৭০০ কোটি মানুষ। তাহলে কীভাবে আমি সবার কাছে দাওয়াত পৌঁছাবো? তাদের কাছে যাওয়ার নিয়ম-ই বা কী? আমরা আমাদের চেষ্টা মতো সবার কাছে যাওয়ার মেহনত করবো। পাশাপাশি এমন কিছু ভালো লোক তৈরী করবো যারা অন্যের কাছে দাওয়াত নিয়ে যাবে। যেমন, আল্লাহ তার রাসূলকে দাওয়াতের কাজের জন্য বানিয়েছেন৷ কিন্তু তিনি সবার কাছে যেতে পারেন নি৷ বরং তার নবুওয়াতের ২৩ বছরে এমন কিছু লোক তৈরী করেছেন যারা রাসূলের নকশে কদমে মানুষকে আল্লাহর দিকে ডেকেছেন৷ রাসূলের ইন্তেকালের পর রাসূলের মিশন ও মেহনতকে সারা দুনিয়ায় পৌঁছিয়েছেন।

আমাদের বুঝতে হবে, দুনিয়াতে যতো মানুষ আছে প্রত্যেককে যদি আল্লাহ তায়ালা সফলতা দান করার ইচ্ছে করেন তাহলে দ্বীনের মাধ্যমেই সফলতা দান করবেন৷ আর যদি ধ্বংস করতে চান তাহলে দ্বীন না থাকার কারণে ধ্বংস করবেন৷ এটাই আল্লাহর নিয়ম৷ এই দ্বীন সবার মাঝে পয়দা করার মেহনতকে দাওয়াত ও তাবলীগ বলে৷

আমাদের এই কথা বুঝানোর জন্য এবং রাস্তা দেখানোর জন্য আল্লাহ কুরআন নাযিল করেছেন৷ যার মধ্যে পূর্ববর্তী নবীদের কথা বলেছেন৷ দুনিয়ায় মানুষ দুই ধরণের৷ এক, যারা আল্লাহকে মান্য করছে এবং দ্বীনের উপর চলেছে। তাদের সংখ্যা কম ছিলো এবং দুর্বল ছিলো। আল্লাহ তাদের সফলতা দিয়েছেন৷ তাদের বিপরীতে যারা আল্লাহকে মানে নাই কিন্তু শক্তি সামর্থ্যে সবল ছিলো তাদের দ্বীন না থাকার কারণে ধ্বংস করে দিয়েছেন৷

কুরআন শরীফে এমন ধ্বংসশীল জাতিদের আজাবের কথা আল্লাহ এনেছেন৷ আল্লাহ বলেন, তাদের ধ্বংস করার দ্বারা আমি জুলুম করি নি। বরং তারা দ্বীনের উপর না থাকার কারণে নিজেরাই ধ্বংস হয়ে গেছে৷

আল্লাহ মানুষকে কামিয়াব করার জন্য একটা রাস্তার কথা বলে দিয়েছেন। সেটা হলো দ্বীনের রাস্তা৷ মানুষ যে অবস্থায় থাকে তার মধ্যে যদি দ্বীন থাকে তাহলে সে কামিয়াব হবে৷ নতুবা ধ্বংস হয়ে যাবে ‘না-কাম’ হয়ে যাবে৷ মানুষের কাছে আসবাব বেশি হওয়ার মধ্যে কামিয়াবি থাকে না৷ বরং কামিয়াব হলো দ্বীন ও দাওয়াতে তাবলীগের মধ্যে।

আল্লাহ হযরত সুলাইমনা আ. ও হযরত দাউদ আ. কে রাজত্ব দিয়ে কামিয়াব করেছেন৷ উল্টোদিকে ফেরাউন ও কারুন কে রাজত্ব দিয়ে ধ্বংস করে দিয়েছেন৷ বুঝা গেলো, রাজত্বের মধ্যে সফলতা নাই। বরং সফলতা হলো দ্বীনের মধ্যে। দাওয়াত তাবলীগ মানে দুনিয়ার ব্যবসা বাণিজ্য, পরিবার পরিজন ছেড়ে দেয়া নয়৷ বরং সব কাজকারবার দ্বীনদারীর মাধ্যমে করবে। এমন মহল বানাবে যার মধ্যে দ্বীনদারী থাকবে৷ যে ব্যক্তি দ্বীনের উপর থাকবে আল্লাহ তাকে ইতমিনান দান করবেন৷ তার পেরেশানি দূর করে দিবেন৷

যখন আমরা পুরোপুরি দ্বীনের উপর চলবো তখন আমরা উপকৃত হবো৷ আল্লাহ দুনিয়াতে আরামের জিন্দেগী দান করবেন এবং আখেরাতের সফলতা দিবেন৷ দ্বীনের মধ্যে আমরা কতটুকু আছি৷ আমাদের দ্বীনি কাজে ঘাটতি কতটুকু তা দেখতে পাবো যখন রাসূল সা. ও সাহাবায়ে কেরামের জিন্দেগীর আয়নাতে নিজেদের দেখবো। তখনি দ্বীনের মেহনতের ব্যাপারে কমতি ধরা পড়বে। যখন কমতি ধরা পড়বে তখন আমাদের কাজের মধ্যে পরিবর্তন আসবে।

পূর্ববর্তি সংবাদখাগড়াছড়িতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, পুড়ে গেছে ১৫ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
পরবর্তি সংবাদসকাল ১০টায় বিশেষ বয়ান : ওলামাদের জন্যে বয়ানের মিম্বারে, তালেবুল ইলমদের জন্যে নামাজের মিম্বারে