তিনমাসে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত প্রায় ৪ লাখ, মৃত্যু ৫৪

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: সারা দেশে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সর্দি-কাশি, হাঁপানি, জ্বর, গলাব্যথা, বাত-ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, ব্রংকাইটিস, টনসিলের ব্যথা ও প্রদাহসহ নিউমোনিয়ার প্রকোপ। তবে এর মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য অংশই ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্ট।

সরকারের স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য বলছে, গত বছরের ১ নভেম্বর থেকে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) পর্যন্ত এসব রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮০৮ জন এবং মারা গেছেন ৫৪ জন।

এদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়ায় ২ হাজার ৮৬, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে প্রায় ৯৪৫ ও অন্যান্য রোগে প্রায় ৩ হাজার ৪০ জন রোগী হাসপাতালে এসেছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশু ও বয়স্কদের নিউমোনিয়া হলে মৃত্যু ঝুঁকি অনেকাংশ বেড়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া যাদের ক্রনিক শ্বাসতন্ত্রের রোগ আছে, নিউমোনিয়া হলে তাদেরও মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ছে।

তবে শিশুরা মূলত নিউমোনিয়াতে আক্রান্ত হয়েই মারা যাচ্ছে। মৃত শিশুদের ৯০ শতাংশের বয়স পাঁচ বছরের নিচে।

এছাড়াও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আসছে জন্ডিস, জ্বর, চোখ ও চর্ম সমস্যা নিয়ে।

এ বিষয়ে কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক আয়শা আক্তার বার্তা২৪.কমকে বলেন, সাধারণত জানুয়ারিতে ঠাণ্ডাজনিত রোগী কমে আসে। কিন্তু এবার শীতের প্রকোপ বেশি থাকায় ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জনগণকে সচেতন করতে এ বিষয়ে নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

একই বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) বক্ষব্যাধি মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, শিশু, বয়স্ক ও শ্বাসতন্ত্রের রোগীদের ফুসফুসের প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। ফলে নিউমোনিয়া হলে তাদের ফুসফুস ফেইলিয়রে মৃত্যু হয়। এই সময়টা ওষুধের চেয়ে সচেতন থাকার কোনো বিকল্প নেই। সচেতনতাই পারে এই রোগবালাইয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে।

অন্যদিকে হেলথ বুলেটিন ২০১৮-এর তথ্যমতে, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে গত বছর ১ লাখ ৩৬ হাজার ২০৫ জন রোগী চিকিৎসা নেন। প্রতিবছর দেশে যে পরিমাণ মানুষ মারা যান তার ৬৭ শতাংশই অসংক্রামক রোগে। এর মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ক্রনিক রেসপিরেটরি ডিজিজ (সিআরডি)। অর্থাৎ সিআরডি বা শ্বাসতন্ত্রের রোগে ১০ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হয়।

সংস্থাটির জরিপে আরো দেখা যায়,  বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৬ লাখ মানুষ মারা যায়। এর মধ্যে শ্বাসতন্ত্রের রোগী প্রায় ৪২ হাজার।

পূর্ববর্তি সংবাদগোবর-গো-মূত্র গবেষণায় নজর দিতে বিজ্ঞানীদের প্রতি ভারতীয় মন্ত্রীর আহ্বান
পরবর্তি সংবাদকাশ্মীরে ভয়াবহ তুষারধস: চার ভারতীয় সেনাসহ ৯ জনের মৃত্যু