এক্সক্লুসিভ: ‘বি-বাড়িয়ায় কাদিয়ানি হামলার ঘটনা নিয়ে জাতীয় বেশ কিছু মিডিয়াতে মিথ্যাচার করা হয়েছে’

তারিক মুজিব ।।

‘দিন দিন বেড়েই চলছে কাদিয়ানিদের দৌরাত্ম। কখনো প্রকাশ্যে কখনো গোপনে কাদিয়ানিরা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের ধর্মের প্রচার। প্রলোভন, ধোঁকা-প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মূলত চলে তাদের প্রচার কাজ। ‘আহমদিয়া মুসলিম জামাত’ নাম ধারণ করে নিজেদেরকে তারা মুসলমানদের একটি উপদল হিসেবে ঘোষণা করতে চায়। বাস্তবে তারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে এক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত’।

এসব কথা বলেন দেশের বরেণ্য আলেমে দ্বীন, বি বাড়িয়ার জামিয়া দারুল আরকাম আল ইসলামিয়ার প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল এবং ঐতিহ্যবাহী জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়ার শায়খুল হাদিস আল্লামা সাজিদুর রহমান।

সম্প্রতি মাদরাসা ছাত্রদের ওপর কাদিয়ানিদের হামলা প্রসঙ্গে বি বাড়িয়ার সার্বিক অবস্থা জানতে ইসলাম টাইমসের পক্ষ থেকে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব কথা বলেন।

আল্লামা সাজিদুর রহমান বলেন, বি বাড়িয়ায় কাদিয়ানিদের প্রচারের মাত্রাটা অন্য অনেক জায়গার তুলনায় বেশি। বি বাড়িয়া বাংলাদেশে কাদিয়ানিদের অন্যতম ঘাটি। এদিকের অনেক সরলমনা মুসলমানকে নানা ছল চাতুরির আশ্রয় নিয়ে এবং বিভিন্ন প্রকারের প্রলোভন দেখিয়ে কাদিয়ানি বানিয়ে ফেলা হয়েছে। কেউ তাদের ধোঁকাবাজি বুঝতে পেরে ইসলামে ফিরে আসলে তাকে নানাভাবে নির্যাতন করা হয়।

বি বাড়িয়া শহরের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় কাদিয়ানিরা তাদের ঘাঁটি গেড়েছে জানিয়ে আল্লামা সাজিদুর রহমান বলেন, রিক্সা করে যাওয়া সম্ভব হয় না- এমন জায়গায় তারা বাসা-বাড়ির আদলে তিন তলা উপাসনালয় বানিয়েছে। এটাকে আবার মসজিদ নাম দিয়েছে। ছাত্রদের ওপর হামলা প্রসঙ্গে আল্লামা সাজিদুর রহমান বলেন, মসজিদের নামে কাদিয়ানিদের উপাসনালয় উদ্বোধন এবং প্রশাসনের নিষেধ সত্ত্বেও বার্ষিক জলসা করতে চাইলে এলাকার কিছু মাদরাসার ছাত্র এবং দ্বীনদার মানুষ তাদেরকে সমাবেশ করতে নিষেধ করে। সমাবেশস্থলে কাদিয়ানিরা আগে থেকেই লাটি এবং ধারালো অস্ত্র সংগ্রহ করে রেখেছিল। ছাত্ররা তাদের নিষেধ করতে যেতেই তাদের ওপর অতর্কিত সন্ত্রাসী আক্রমণ করে বসে। কয়েকজন গুরুতর আহত হয়।

বাংলাদেশের জাতীয় বেশ কিছু মিডিয়াতে বি বাড়িয়ার ঘটনা নিয়ে মিথ্যাচার করা হয়েছে মন্তব্য করে আল্লামা সাজিদুর রহমান বলেন, জাতীয় কয়েকটা সংবাদমাধ্যমে ঘটনার পুরোপুরি উল্টো বিবরণ প্রকাশ হতে দেখা গেছে। যেখানে মাদরাসার ছাত্রদের ওপর হামলা করা হয়েছে সেখানে ওইসব মিডিয়াতে খবর প্রকাশ করা হয়েছে-ছাত্ররা কাদিয়ানিদের ওপর হামলা চালিয়েছে। অথচ কাদিয়ানিদের সন্ত্রাসী হামলায় মাদরাসার বেশ কয়েকজন ছাত্র গুরুতর আহত হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। মূলত মিডিয়ার সাপোর্টটা কাদিয়ানিদের দৌরাত্ম অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন দেশের এ শীর্ষ আলেম।

মাদরাসার ছাত্রদের ওপর হামলার প্রতিক্রিয়া প্রসঙ্গে আল্লামা সাজিদুর রহমান বলেন, দেশের অনেক জায়গায় হামলার নিন্দা জানিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়েছে। আজকেও ঢাকায় কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। আগামী সোমবার বি বাড়িয়ায় প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

আল্লামা সাজিদুর রহমান বলেন, বি বাড়িয়াতে কাদিয়ানিরা তাদের ক্ষমতা বাড়াতে চাইলেও ঐতিহাসিকভাবেই এ এলাকার মানুষ দ্বীনপ্রাণ। দ্বীনের জন্য বি বাড়িয়ার মানুষের অনেক কুরবানী আছে। কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে বি বাড়িয়াতে আগেও কঠোর আন্দোলন হয়েছে। সামনেও কঠোর আন্দোলন হবে।

উল্লেখ্য, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে শেষ নবী না মানার কারণে উলামায়ে কেরাম সর্বসম্মতভাকে কাদিয়ানিদের কাফের ফতোয়া দিয়েছেন। এছাড়াও তাদের আরও ভ্রান্ত আকিদা-বিশ্বাস রয়েছে। অমুমলিম হয়েও নিজেদেরকে মুসলিম দাবি করে মুসলমান সমাজে মিশে নিজেদের মতবাদ প্রচারের জন্যই তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম।

পূর্ববর্তি সংবাদইভিএম নিঃশব্দে ভোট চুরির প্রকল্প : আমীর খসরু
পরবর্তি সংবাদ৩০ জানুয়ারি নির্বাচন হলে ওইদিন কালো পতাকা মিছিল করবে হিন্দু মহাজোট