‘বাংলাদেশের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণেই বিএসএফ দুঃসাহস দেখাতে পারছে’

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেছেন, সীমান্তে বিএসএফ’র বর্বরতার সকল সীমা অতিক্রম করেছে। তারা হিংস্র উল্লাসে পাখী শিকারের মতো বাংলাদেশী খুনের নেশায় মেতেছে। সরকারের ভারত নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণেই বিএসএফ এমন দুঃসাহস দেখাতে পারছে।

আজ (২৫ জানুয়ারী) শনিবার এক বিবৃতিতে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী আরও বলেন, গত দুই সপ্তাহে বিএসএফ সীমান্তে ১০ জন বাংলাদেশীকে খুন করেছে। সরকারি হিসেবেই গত এক বছরে বিএসএফ’র বাংলাদেশী খুনের ঘটনা বেড়েছে ১২ গুণ। কিন্তু সরকার এসব সীমান্ত খুনের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ তো দূরের কথা, মৌখিক কড়া প্রতিবাদও জানাতে দেখছি না। সরকারের এমন নতজানু ভূমিকা গভীর বেদনাদায়ক, লজ্জার ও নিন্দনীয়।

তিনি বলেন, বিএসএফের যে কোন আগ্রাসী তৎপরতার জবাবে অতীতে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর বীরত্বপূর্ণ গৌরবময় ভূমিকা জনগণ দেখে এসেছে। অথচ বর্তমান সরকারের লাগাতার তিন মেয়াদে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীকে কার্যতঃ নিষ্ক্রীয় রাখা হয়েছে। সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বর্ডার গার্ডের তরফ থেকে পতাকা বৈঠক করে লাশ গ্রহণ ছাড়া ভরসা রাখার মতো কোন তৎপরতাই এখন চোখে পড়ে না। বরং কখনো কখনো বর্ডার গার্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এসব হতভাগ্য নিহত বাংলাদেশীদেরকে চোরাচালানী বা অবৈধ গরুব্যবসায়ী আখ্যা দিয়ে প্রকারান্তরে বিএসএফের নিষ্ঠুরতার পক্ষেই যেন সাফাই গেয়ে যান।

জমিয়ত মহাসচিব বলেন, বিশ্বের কোথাও এমনটা আমরা দেখি না যে, কেবল অবৈধ সীমান্ত পারাপার বা চোরাচালানের জন্য নিরীহ মানুষ খুনের মতো নিষ্ঠুরতা ঘটে। এমনকি ভারতের সাথে চীন, মিয়ানমার, ভূটান, নেপাল ও পাকিস্তান সীমান্তেও কোনরূপ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে না। বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফ যে হারে নির্বিঘ্নে খুন করে চলেছে, বিশ্বে এমন ঘটনা নজিরবিহীন।

তিনি বলেন, ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের তরফ থেকেই সরকারীভাবে বার বার বলা হচ্ছে, উভয় দেশের মধ্যে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিরাজ করছে। গত বছরের শেষ দিকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের সময় বলা হল- সেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ‘বিশেষ ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে’ উন্নিত হয়েছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারী মাসের শুরুতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন ভারত সফরের পূর্বে উভয়ে দেশের সম্পর্ককে ‘স্বামী-স্ত্রীর মতো’ ঘনিষ্ঠ বলে অভিহিত করেছেন।

জমিয়ত মহাসচিব বলেন, ঘনিষ্ঠ বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের সাথে সমমর্যাদা ও সমঅধিকারের ভিত্তিতে সুসম্পর্ক থাকাটাই আমাদের কাম্য। কিন্তু সীমান্তে বাংলাদেশীদেরকে লাগাতার খুন করে যাবে, আর বাংলাদেশ সুসম্পর্ক রক্ষার জন্য চুপচাপ সয়ে যাবে; আমরা এমনটা দেখতে চাই না। আমরা চাই সীমান্তে বাংলাদেশের স্বার্থ ও নাগরিকদের জানমালের হেফাজতে বর্ডার গার্ডের জাওয়ানরা বীরের মতো ভূমিকা রাখুক এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে বহিঃর্দেশীয় যে কোন আগ্রাসী তৎপরতার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।

পূর্ববর্তি সংবাদইশতেহারে `চমক’ দেখানোর আশ্বাস আতিকের
পরবর্তি সংবাদকোমরে দড়ি লাগিয়ে সিনহাকে দেশে আনা হবে: মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী