সাধক-সংগ্রামী বাঁশেরকেল্লার সেই তিতুমীর

সালাহউদ্দীন জাহাঙ্গীর ।।

উনিশ শতকের প্রথমার্ধে যখন হাজি শরিয়তুল্লাহ বাংলার এ শ্যামল প্রান্তরে সংস্কার আন্দোলনের বীজ বপন করেছিলেন, যখন সাইয়েদ আহমদ বেরেলভির বিপ্লবাত্মক আন্দোলন দক্ষিণ ভারতের আকাশ-বাতাস তোলপাড় করে দিয়েছিল, তখন উপমহাদেশের পূর্বাঞ্চলে আরেকজন মুক্তিপাগল মুসলিম বিপ্লবী বিপ্লবের আগুন জ্বালিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনিই সেই তিতুমীর, মীর নিসার আলী। তিনি ছিলেন বঙ্গ-আসামের আরেকজন ধর্মীয় ও সমাজ সংস্কারক এবং স্বাধীনতার বীরযোদ্ধা ।বাংলা এলাকায় আজাদির প্রথম বিপ্লবী শহিদ। ব্রিটিশ বিরোধী সংগ্রামে তিনি অমর এক নাম।

মাওলানা তিতুমীরের সংগ্রাম ছিল জাতীয় প্রতিষ্ঠা ও স্বাধীনতা সংগ্রামের এক অবিস্মরণীয় ইতিহাস। তার বাঁশের কেল্লার যুদ্ধ ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে উৎকীর্ণ হয়ে আছে। ‘মুক্তি অথবা মৃত্যু’ এই মন্ত্রে উজ্জীবিত তিতুমীর স্বাধীনতার এমন এক সংগ্রামী বীর, যিনি আত্মসমর্পণের মাধ্যমে গ্লানিকর জীবন উপভোগের বদলে শহিদ হওয়াকে উত্তম বিবেচনা করেছিলেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে তিনি চিরদিন অম্লান হয়ে থাকবেন তার ত্যাগ ও মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসার নজরানা পেশ করে।

মাওলানা মীর নিসার আলীর জন্ম ১৭৮২ সনে ২৭ জানুয়ারি (১১৮৮ বঙ্গাব্দ, ১৪ মাঘ) পশ্চিমবঙ্গের চবিবশ পরগনা জেলার বশিরহাট মহকুমার চাঁদপুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম মীর হাসান আলী। তার বংশগত নাম মীর নিসার আলী। কথিত আছে, তিক্ত ঔষধের প্রতি তিতুমীরের আসক্তি ছিল বলে তাকে তিতা মিয়া বলে ডাকা হত। এই তিতা মিয়াই পরবর্তীকালে ‘তিতুমীর’ নামে পরিচিত হন।

 

শিক্ষা ও কাজ

বাল্যকালে গ্রামের মাদরাসায় আরবি, উর্দু ও ফার্সি ভাষা শিক্ষা করেন তিতুমীর। তিনি তার শিক্ষাজীবনে একজন আলেম ও হাফেজ উস্তাদের সাহচর্য লাভ করে কুরআন শরিফ মুখস্থ করেন এবং হাদিসশাস্ত্রেও ব্যুৎপত্তি অর্জন করেন। ১৮ বছর বয়সে মাদরাসার শিক্ষাজীবন শেষ করেন। আরবি, ফার্সি ও উর্দু ভাষায় এতটুকু ব্যুৎপত্তি লাভ করেন যে, এসব ভাষায় তিনি অনর্গল বক্তৃতা করতে পারতেন। মাওলানা তিতুমীর একজন খ্যাতনামা পাহলোয়ান ছিলেন। মাদরাসাশিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে তিনি তার উস্তাদ সাইয়েদ নিয়ামতুল্লাহর উৎসাহে স্থানীয় আখড়ায় শরীরচর্চার প্রশিক্ষণে গমন করেন। তিনি কলকাতার সম-সাময়িককালের একজন খ্যাতনামা পাহলোয়ানরূপে পরিচিত হন।

শিক্ষা সমাপ্তির পর তিনি দেশে ফিরে হায়দারপুরে বসতি স্থাপন করেন এবং শান্তিপূর্ণভাবে ওয়াজ-নসিহত ও তাবলিগের কাজে আত্মনিয়োগ করেন। মুসলমানদের সমাজজীবনে যেসব অনাচার অনুপ্রবেশ করেছিল, তা দূর করার মানসে তিনি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন।

তিনি বলতেন, মুসলমানদেরকে কথা-বার্তায়, আচার-আচরণে প্রকৃত মুসলমান হতে হবে। তারা যদি অমুসলমানের আচার-আচরণ, চাল-চলন ও কাজকর্ম পছন্দ করে, তাহলে শেষবিচারের দিন আল্লাহ তাদেরকে অমুসলমাদের সঙ্গে দোজখে স্থান দিবেন। তিতুমীর বলেন, ইসলাম শরিয়ত, হাকিকত, তরিকত ও মারেফত; এ চার মিলিয়ে মুসলমানের পূর্ণাঙ্গ জীবন এবং এর মধ্যেই রয়েছে ইহকাল-পরকালের মুক্তি। এর প্রতি কেউ উপেক্ষা প্রদর্শন করলে আল্লাহ তাকে কঠোর শাস্তি দেবেন। নামাজ পড়া, রোজা রাখা, দাড়ি রাখা, গোঁফ ছাঁটা মুসলমানদের অবশ্য পালনীয় কর্তব্য। এসব পরিত্যাগ করলে আল্লাহ তাদের কঠোর শাস্তি দেবেন।

১৮২২ সনে মাওলানা নিসার আলী ওরফে তিতুমীর হজের উদ্দেশে মক্কা শরিফ গমন করেন এবং সেখানে উপমহাদেশের ইসলামি আন্দোলনের পথিকৃৎ মাওলানা সাইয়েদ আহমদ বেরেলভির সঙ্গে তার সাক্ষাত হয়। তিতুমীর তার হাতে তরিকত ও জিহাদের বায়আত গ্রহণ করেন। কথিত আছে, কিছুদিন তার সান্নিধ্যে অবস্থানের পর মদিনায় নবি কারিম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামের রওজা পাক জিয়ারতকালে তিতুমীর তার মুর্শিদ সাইয়েদ আহমদ বেরেলভির কাছ থেকে ‘খেলাফত’প্রাপ্ত হন।

১৮২৭ সনে তিতুমীর দেশে প্রত্যাবর্তন করেই শিরক-বিদআত উৎখাত এবং সুন্নতের পূর্ণ অনুসরণের আন্দোলন শুরু করেন। তিতুমীরের ভাবাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে অল্পকালের মধ্যে তিন-চারশ লোক তার শিষ্যত্ব গ্রহণ করে। উল্লেখ্য যে, তার মুর্শিদের প্রদর্শিত ‘তরিকায়ে মুহাম্মদিয়া’ আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য তিনি সর্বস্ব নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। অচিরেই তিনি এক বিরাট সমর্থকগোষ্ঠী গড়ে তুলতে সমর্থ হন। তার সমর্থকদের বেশিরভাগই ছিল কৃষক, তাঁতী ও সমাজের খেটে খাওয়া মানুষ। মসজিদ সংস্কার, নামাজসহ ইসলামি আচার-অনুষ্ঠান পালন, ধর্মীয় সমাবেশ ও জলসার মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা ইত্যাদির মধ্যেই তিনি তার প্রাথমিক আন্দোলনের কাজ সীমাবদ্ধ রাখেন।

তিতুমীরের আন্দোলনের প্রধান তিনটি উদ্দেশ্য ছিল- মুসলমানদের অধর্মীয় আচরণ থেকে বাঁচানো, শাসক ইংরেজদের ইঙ্গিতে পরিচালিত অত্যাচারী শোষক জমিদারদের হাত থেকে শোষিত হিন্দু-মুসলমান প্রজাদের রক্ষা করা এবং ভারতবর্ষকে ইংরেজ শাসনমুক্ত করা।

Related image
কল্পিত বাঁশেরকেল্লা

স্বাধীনতার অকুতোভয় সৈনিক

তিতুমীর প্রথমে সশস্ত্র বিদ্রোহ এবং রক্তপাত চাননি। কিন্তু জমিদার বাবুরা তার শান্ত আন্দোলনে হস্তক্ষেপ করেন। ইংরেজদের বলে বলীয়ান হয়ে তারাগুনিয়ার বিখ্যাত জমিদার রাম নারায়ণ বাবু, পূঁড়ার জমিদার কৃষ্ণদেব রায়, নগরপুরের গৌর প্রসাদ চৌধুরী প্রমুখ একত্রিত হন তিতুমীরের আন্দোলন খতম করার জন্য।

এর কিছুদিন পর কলকাতায় জমিদারদের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সিদ্ধন্ত হয়, যেহেতু তিতুমীরকে দমন করতে না পারলে হিন্দু জমিদারদের পতন অনিবার্য, সে জন্য যে কোনো প্রকারেই তাকে শায়েস্তা করতে হবে। অন্য জমিদাররা এ ব্যাপারে সহযোগিতা করবেন বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তারা বশিরহাট থানার দারোগা রামরাম চক্রবর্তীর শরণাপন্ন হন।

দারোগা সাহেব তাদের অনুরোধে সাড়া দিয়ে কয়েকদিন পর এক শুক্রবারে কৃষ্ণদেব রায়ের জমিদারী এলাকায় যান। পুলিশের সঙ্গে নিয়ে যান জমিদারের লাঠিয়ালবাহিনী। সেখানে সরফরাজপুর মসজিদে মুসল্লিরা জুমার নামাজ পড়া অবস্থায় কৃষ্ণদেবের লাঠিয়ালবাহিনী সে মুহূর্তেই মসজিদে আগুন লাগিয়ে দেয়। মসজিদের মুসল্লিরা আত্মরক্ষার্থে বাইরে এলে লাঠিয়ালবাহিনী পুলিশের সহায়তায় তাদের উপর হামলা করে। এতে দুজন মুসল্লি নিহত হন এবং অনেকে আহত হন।

এই ঘটনার পর সরফরাজপুর গ্রামবাসীর পরামর্শে তিতুমীর কয়েকজন সঙ্গীকে নিয়ে নারিকেলবাড়িয়া নামক স্থানে চলে যান। কিন্তু এখানেও তিনি নিরাপদে বসবাস করতে পারলেন না। ১৮৩১ সালের ২৯ অক্টোবর কৃষ্ণদেব রায় সহস্রাধিক লাঠিয়াল ও বিভিন্ন অস্ত্রধারী বাহিনী নিয়ে নারিকেলবাড়িয়ায় আক্রমণ করে এবং বহু মুসলিম নর-নারীকে অকারণে মারপিট ও জখম করে। তখন তিতুমীর তার সঙ্গীদের নিয়ে হিন্দু লাঠিয়ালবাহিনীর মোকাবেলা করেন। তাদের প্রতিরোধের মুখে জমিদারবাহিনী পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।

এর কয়েকদিন পর ৬ নভেম্বর জমিদার কৃষ্ণদেব রায় পুনরায় তার বাহিনী এবং অন্য জমিদারদের সম্মিলিত বাহিনী নিয়ে মুসলমানদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। উভয় পক্ষে বহু লোক হতাহত হয়। এরপর কৃষ্ণদেব রায় চারদিকে হিন্দুসমাজে প্রচার করে দেয় যে, মুসলমানারা অকারণে হিন্দুদের উপর নির্যাতন চালাচ্ছে। এ প্রচারণায় হিন্দুদের মধ্যে দারুণ উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এবং গোবরডাঙ্গার নীলকর জমিদার কালীপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় মোল্লাআটি নীলকুঠির ইংরেজ ম্যানেজার মি. ডেভিসকে মুসলমানদের বিরুদ্ধে উত্তেজিত করে তোলে। ডেভিস প্রায় চারশ হাবশি ক্রীতদাস যোদ্ধা ও বিভিন্ন মারণাস্ত্রসহ নারিকেলবাড়িয়া আক্রমণ করে। এবারও উভয় পক্ষে বহু লোক হাতহাত হয়। ক্যাপ্টেন ডেভিস পলায়ন করেন। মুসলমানরা তার বজরা ধ্বংস করে দেয়। উক্ত ঘটনার কিছুদিন পরে গোবরা-গোবিন্দপুরের জমিদার দেবনাথ রায় এক বিরাট বাহিনীসহ নারিকেলবাড়িয়া আক্রমণ করেন। প্রচণ্ড যুদ্ধে দেবনাথ রায় সড়কির আঘাতে নিহত হন।

এদিকে খবর পাওয়া যায়, শেরপুর নীলকুঠির ম্যানেজার মি. বেঞ্জামিন বহু লাঠিয়াল ও সড়কীওয়ালাসহ নারিকেলবাড়িয়া আক্রমণের জন্যে যাত্রা করেছে। এ খবর প্রচারিত হওয়ার পর তাদেরকে বাধাদানের জন্য তিতুমীরের সেনাপতি গোলাম মাসুমকে মুজাহিদ বাহিনীসহ পাঠানো হয়। তারা বারঘরিয়া নামক গ্রামে এক ঝোঁপের ঝাড়ে লুকিয়ে থাকেন। যথাসময় শত্রুপক্ষের বজরা বারঘরিয়ায় ভিড়লে বজরায় দুজন ইংরেজ ও কৃষ্ণদেবকে দেখতে পেয়ে মুজাহিদ বাহিনী আক্রমণের প্রস্তুতি নেয়। শত্রুপক্ষ মুজাহিদবাহিনীকে দেখতে পেয়ে গুলি চালায়। মুজাহিদবাহিনী সড়কী চালায়। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়।

তিতুমীর উপুর্যপরি পরি অতীব ধৈর্যের সঙ্গে হিন্দু জমিদার ও নীলকরদের আক্রমণ ও প্রতিহিংসা প্রতিহত করতে চেষ্টা করেন। খণ্ড খণ্ড যুদ্ধে তিতুমীরের মুজাহিদ বাহিনীর কিছু সংখ্যক মুজাহিদ শহিদ হন। বাধ্য হয়ে মুসলিম মুজাহিদগণ তিতুমীরের প্রধান সেনাপতি গোলাম মাসুমের নেতৃত্বে একটি প্রতিরোধী মুজাহিদ দল গড়ে তোলেন এবং নারিকেলবাড়িয়ায় একটি বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেন। তিতুমীর ইংরেজ রাজত্বের বিলুপ্তি এবং মুসলিম রাজত্বের পুনঃপ্রতিষ্ঠা ঘোষণা করেন। বাস্তবক্ষেত্রে তিতুমীর জমিদার, নীলকর ও শাসক ইংরেজদের বিরুদ্ধেই জিহাদ ঘোষণা করেন। তিনি জমিদারদের খাজনা প্রদান নিষিদ্ধ করেন। সুদপ্রথা বিলোপ করেন এবং দেশকে ‘দারুল হরব’ ঘোষণা করে ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার আহবান জানান। একটি ন্যায়বিচারভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা ছাড়া জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়- এই বিশ্বাস থেকে তিনি একটি স্বাধীন ইসলামি সরকার গঠন করেন এবং একটি মন্ত্রিসভার অধীনে সরকার পরিচালনার ব্যবস্থা করেন। তিতুমীর নিজে ছিলেন এই স্বাধীন সরকারের প্রধান বা খলিফা। বারাসাত, চব্বিশ পরগণা ও নদীয়া অঞ্চলে তিনি পরিচিতি লাভ করেন স্বাধীন বাদশাহ হিসেবে। তখন মুজাহিদদের সংখ্যা ছিল চার-পাঁচ হাজারের অধিক।

ভীত-সন্ত্রস্ত জমিদার ও নীল কুঠিয়ালরা তিতুমীরকে দমনের জন্য সামরিক সাহায্য চেয়ে বাংলার তৎকালীন গভর্নরের কাছে দরখাস্ত করেন। গভর্নরের নির্দেশে কলকাতা থেকে যশোরে একটি সেনাদল পাঠানো হয়। এদের সঙ্গে রাইফেলধারী বিপুলসংখ্যক বরকন্দাজ পুলিশ যোগ দেয়। যশোরের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আলেকজান্ডারের নেতৃত্বে এই বাহিনী ১৮৩১ সনের ১৫ নভেম্বর নারিকেলবাড়িয়ায় আক্রমণ করে। কিন্ত মুজাহিদবাহিনী যুদ্ধের এক পর্যায়ে এই বাহিনীকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। যুদ্ধে ইংরেজ পক্ষের বহু লোক হতাহত হয়। আলেকজান্ডার কোনোমতে পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন। বিজয়ী বাহিনী অতঃপর কয়েকটি নীলকুঠি লুট করে। ১৭ নভেম্বর কৃষ্ণনগরের ম্যজিস্ট্রেট আর একটি বাহিনী নিয়ে নারিকেলবাড়িয়া যাত্রা করেন। এই বাহিনীও বিপর্যস্ত ও পর্যুদস্ত হয়ে পলায়ন করে।

 

চূড়ান্ত লড়াই

এরপর আসে সেই চূড়ান্ত লড়াই। পূর্ব উল্লিখিত আলেকজান্ডার ও মেজর স্কুটের নেতৃত্বাধীন এক বিশাল বাহিনী ১৯ নভেম্বর নারিকেলবাড়িয়া আক্রমণ করে। আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ইংরেজবাহিনীর মোকাবেলায় ঢাল সড়কীধারী মুজাহিদগণ টিকতে পারল না। ইংরেজবাহিনী কামানের গোলার আঘাত তিতুমীরের বাঁশের কেল্লাটি ধ্বংস করে দেয়। তিতুমীরসহ ৫০ জন মুজাহিদ শাহাদাত বরণ করেন। তাদের দেহ পৈশাচিক উল্লাসে পুড়িয়ে ফেলা হয়। প্রধান সেনাপতি গোলাম মাসুমকে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেয়া হয়। ৩৫০ জন মুজাহিদ বন্দী হন।  অপর ১১ জনকে যাবজ্জীবন এবং ১২৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেয়া হয়।

এভাবেই মাওলানা নিসার আলী ওরফে তিতুমীরের বাঁশের কেল্লার আন্দোলন আপাত ব্যর্থতায় থেমে যায়। কিন্তু থামে না তাঁর সংগ্রাম ও স্বাধীনতার উৎসর্গিত আয়োজনের রেশ।

পূর্ববর্তি সংবাদসৌদি আরব সফরের অনুমতি পেল ইসরাইলী ইহুদীরা
পরবর্তি সংবাদএবার বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসে সরাসরি রকেট হামলা