মুহাম্মদপুরে আগুনে পোড়া ঘর পুননির্মাণ সহায়তায় মাদরাসার ছাত্ররা

এনাম হাসান জুনাইদ ।। 

মিডিয়ায় কভারেজ দিতে না পারলেও সমাজ সেবার আন্তরিক প্রচেষ্টায় মাদরাসার ছাত্রশিক্ষরা সব সময়ই এগিয়ে ছিলেন। সম্প্রতি এমনই আরেকটি সুন্দর দৃষ্টান্ত পেশ করলেন মুহাম্মদপুর সালমাশি এলাকার মারকাযুল লুগাতিল আরাবিয়্যাহ মাদরাসার ছাত্ররা। সবাই যখন মোবাইল নিয়ে ছবি তোলায় কিংবা কি হয়েছে কৌতুহল নিবারণের জন্যে ব্যস্ত তখন আগুন নেভানোর জন্যে পানি আর বালু হাতে এগিয়ে এলেন মাদরাসার ছাত্ররা। গত সোমবার (৩জানুয়ারি) মোহাম্মদপুরের সালমাশি এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীসূত্রে জানা যায়, গত  সোমবার মোহাম্মদপুরের সালমাশি এলাকায় রাস্তার পাশে একটি টিন শেড বাসায় আগুন লাগে। বাসার মালিক ইটের ভাটার শ্রমিক দুই ভাই।  আগুন লাগার সময় বাড়িতে কেউ ছিল না। এসময় আগুন নেভানোর জন্য সর্ব প্রথম যারা এগিয়ে আসেন তারা পার্শ্ববর্তী মারকাযুল লুগাহ মাদরাসার ছাত্র। পরে এলাকাবাসীও তাতে শরীক হন।

মাদরাসার ছাত্রদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় ঘন্টা দুয়েকের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু ইতিমধ্যে আগুনে পুড়ে যায় ইটের ভাটায় কাজ করা দুই ভাইয়ের সংসার, ঘরের যাবতীয় তৈজসপত্র।

Image may contain: outdoor

মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মুহিউদ্দীন ফারুকী ইসলাম টাইমসকে জানান, দুপুরে যখন আগুন লাগে তখন মাদরাসার ছাত্ররা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। মাওলানা ফারুকী আরও জানান, আগুনে ঘর পোড়া দুই ভাই ইটের ভাটার শ্রমিক। আগুনে তাদের ঘরের সব পুড়ে গেছে।

ঘটনার দিন রাতেই  মাদরাসার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক প্রয়োজন পূরণের জন্যে ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে। রাতে মাদরাসা থেকে  কম্বল বালিশ আর বাসা থেকে পুরুষ-মহিলাদের কাপড়চোপড় তাদেরকে হাদিয়া দেওয়া হয়েছে। আমাদের এই যৎ সামান্য হাদিয়া পেয়ে ওই দুই ভাইয়ের চোখে পানি চলে এসেছিল -যোগ করেন মহিউদ্দীন ফারুকী।

মাওলানা মহিউদ্দীন ফারুকী আরও জানান, তারা ক্ষতিগ্রস্তদেরকে পরের দিন (মঙ্গলবার) খাবার দাবারসহ তাদের ঘর পুনরায় নির্মাণের কাজ শুরু করে দিয়েছেন। নির্মাণ কাজেও মাদরাসার ছাত্ররা আর্থিক সহযোগিতা থেকে শুরু করে নির্মাণ কাজেও নিজেরা স্বতস্ফূর্তভাবে শরীক হয়েছেন। পাশপাশি নিজের বন্ধুবান্ধবদের কাছেও আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যসহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন মাওলানা ফারুকী। ইতিমধ্যে ইটভাটার মালিক ঘর নির্মাণের কাজে ইট সিমেন্ট পাঠিয়েছেন বলেও জানা গেছে।

মাওলানা মহিউদ্দীন ফারুকী বলেন,  এলাকার অধিকাংশই সাধারণ মানুষ, দ্বীনী বিষয়ে অজ্ঞ। তাদেরকে উদ্দেশ্য করে মাদরাসার পক্ষ থেকে দাওয়াতী কাজ করা হয়। সামাজিক এসব কর্মকাণ্ড দ্বীনী দাওয়াতী কাজকে আরও গতিশীল করে তুলতে পারে।  আপতত ঘরের অপূর্ণ কাজ পূর্ণ করতে তিনি তহবিল সংগ্রহ করছেন। স্বেচ্ছায় যে কারো অংশ গ্রহণের সুযোগ রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

পূর্ববর্তি সংবাদচীনে যে পরিণতি ভোগ করলেন করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রথম সতর্ককারী ডাক্তার
পরবর্তি সংবাদচট্টগ্রামে পিকআপ- ট্রাকের সংঘর্ষে নিহত ৩