তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে বাড়ছে মশাও, সিটি করপোরেশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

ইসলাম টাইমস ডেস্ক : এবারের শীতে প্রমাণ পাওয়া গেছে যে এইডিস মশাবাহিত  রোগ  এখন সারাবছরের সমস্যা ।  সে কথা আগেই জানিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা। আগে ডিসেম্বর-জানুয়ারি সময়ে ডেঙ্গু হওয়ার ঘটনা ছিল কম। এবার জানুয়ারি মাসে নগরীতে এইডিস মশার উপস্থিতি যেমন বেশি পাওয়া গেছে, ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন গতবারের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি রোগী।

ফেব্রুয়ারির শুরু থেকেই শীতের প্রকোপ কমতে শুরু করেছে এবার। তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মশাও বাড়ছে। নগরবাসী বলছে, দিনের বেলা কোনোমতে পার হলেও সন্ধ্যার আগে থেকে শুরু হয় মশার উপদ্রব।

সিটি করপোরেশন মশক নিয়ন্ত্রণে নানা কার্যক্রম চালানোর কথা বললেও নগরবাসীর অভিযোগ, মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম অপ্রতুল।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ‘ডেঙ্গু সার্ভিলেন্স অ্যান্ড প্রেডিকশন প্রোজেক্ট’ এর আওতায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মশার উপস্থিতি নিয়ে গবেষণা করছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা শাখা। সেজন্য রাজধানীর বিভিন্ন এলাকাকে ছয়টি অঞ্চলে ভাগ করে জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে মশার উপস্থিতি দেখা হচ্ছে। এ জরিপ চলবে আগামী দুই বছর।

এই জরিপ জানাচ্ছে, জানুয়ারি মাসেও রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় ডেঙ্গুর বাহক এইডিস মশার উপস্থিতি ঝুঁকিপূর্ণ।

জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, জানুয়ারিতে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পরীবাগ ও শাহবাগ এলাকায় মশার ব্রুটো ইনডেক্স ছিল সবচেয়ে বেশি- ২৬ দশমিক ৬৭। এছাড়া লালমাটিয়া-মোহাম্মদপুরে ১০, গুলশান বনানীতে শূন্য, বাসাবো-খিলগাঁওয়ে ১৩ দশমিক ৩৩, শাঁখারীবাজার ও পাটুয়াটুলীতে ১৩ দশমিক ৩৩ ছিল।

ফেব্রুয়ারিতে এখন পর্যন্ত গুলশান-বনানী এবং লালমাটিয়া-মোহাম্মদপুর এ দুটি অঞ্চলের তথ্য নেওয়া হয়েছে। তাতে দেখা যায়, গুলশানে ব্রুটো ইনডেক্স বেড়ে ২০ হয়েছে। লালমাটিয়ায় কমে হয়েছে ৬ দশমিক ৬৭।

মশার লার্ভার উপস্থিতি হিসাব করা হয় ব্রুটো ইনডেক্সের মাধ্যমে। জরিপে প্রতি একশ প্রজনন উৎসের মধ্যে ২০টি বা তার বেশিতে যদি এইডিস মশার লার্ভা বা পিউপা পাওয়া যায়, তাহলে সেটাকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ উপস্থিতি’ বলা যায়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, জানুয়ারিতে মশার এতটা উপস্থিতি ভালো কথা নয়। জানুয়ারিতে ব্রুটো ইনডেক্স পাঁচের নিচে থাকার কথা।

“এ সময় এটা হলে সামনের পরিস্থিতি অনুমেয়। গত বছর জানুয়ারির চেয়ে এ বছর জানুয়ারিতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাও বেশি। তার মানে এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপও বেশি হতে পারে।”

২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩৮ জন। আর এ বছর জানুয়ারিতে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৯৭ জন। আর ফেব্রুয়ারির প্রথম ১২ দিনে মোট ২২৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

 

পূর্ববর্তি সংবাদকরোনাভাইরাস : ১০ হাজার মৃতদেহ জ্বালিয়ে দিয়েছে চীন
পরবর্তি সংবাদঋতুস্রাব পরীক্ষার নামে ভারতে কলেজ হোস্টেলে হেনস্থার শিকার মেয়েরা