ইসলাম টাইমস ডেস্ক: কুয়েতে মানব পাচারে যুক্ত হলো লক্ষীপুরের সংসদসদস্য কাজি শহিদের নাম। কুয়েতে মানবপাচারকারী বাংলাদেশের তিন ব্যক্তির একজন সংসদসদস্য কাজী শহিদ ইসলাম। সেখানে গ্রেপ্তার অভিযান শুরুর আগেই তিনি দেশে চলে এসেছেন। কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে স্থানীয় পত্রিকা এ খবর দিয়েছে। প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আরব টাইমস।
কাজি শহিদ বাংলাদেশের স্বতন্ত্র সংসদসদস্য। বিগত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে তিনি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করে জয়লাভ করেন। এই এমপিসহ তিনজনের ওই চক্র অন্তত ২০ হাজার বাংলাদেশিকে কুয়েতে পাঠিয়ে প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা আয় করেছে বলে দাবি করেছে কুয়েত সিআইডি।
গত বুধবার কুয়েতের আরবি দৈনিক আল কাবাস ও আরব টাইমস সাংসদসহ বাংলাদেশের মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। কুয়েতের গণমাধ্যমগুলোতে অভিযুক্ত সংসদসদস্যের নাম না এলেও কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাস গণমাধ্যমকর্মীদের জানিয়েছে, অভিযুক্ত সাংসদের নাম কাজী শহিদ ইসলাম ওরফে পাপুল।
তিনি লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাংসদ। স্বতন্ত্র এই এমপি আওয়ামী লীগ কুয়েতের প্রধান পৃষ্ঠপোষক, বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটি সদস্য, বাংলাদেশ কমিউনিটি কুয়েতের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।
এ অভিযোগ সম্পর্কে শহিদ ইসলাম অবশ্য বলেন, ‘সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার কারণে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। আমি এ ধরনের কোনো অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত নই। আমি সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করে আসছি।’
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, কাজী শহিদ ইসলাম পূর্ব থেকেই জনশক্তি রপ্তানির ব্যবসার সাথে যুক্ত। তিনি মারাফী কুয়েতিয়া গ্রুপ অব কোম্পানিজ, কুয়েত, ওমান ও জর্ডানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। এ ছাড়াও তিনি বেসরকারি খাতের ব্যাংক এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান এবং এনআরবি সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কোম্পানির চেয়ারম্যান।
আরব টাইমস–এর গত বুধবারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিন বাংলাদেশির একজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। অভিযানের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে বাকি দুজন কুয়েত ছেড়ে পালিয়ে যান। চক্রটি ২০ হাজারের বেশি বাংলাদেশিকে কুয়েতে এনে অন্তত ৫ কোটি কুয়েতি দিনার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা আয় করেছে। ওই চক্রের অন্যতম সদস্য বাংলাদেশের একজন সংসদসদস্য, যিনি নিয়মিতভাবে ঢাকা–কুয়েত আসা–যাওয়া করেন। তিনি কখনো কুয়েতে ৪৮ ঘণ্টার বেশি থাকেন না।
এদিকে বাংলাদেশের একজন সংসদ সদস্যের কুয়েতে মানবপাচার সংক্রান্ত গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনকে ‘ফেক নিউজ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন।
রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা শুনেছি এটা ফেক নিউজ। আমাদের কাছে এ ধরনের কোনও তথ্য নেই। আমাদের মিশন ওখান থেকে কোনও খবর দেয়নি। আমরা এখনও জানি না। এটা বোধহয় কোনও একটা পত্রিকায় বের হয়েছিল এবং পরবর্তীতে ওই পত্রিকাই বলেছে এর সত্যতা সম্পর্কে সন্দেহ আছে।’
