দ্য হিন্দুর প্রতিবেদন: বিশ্বজুড়ে বন্ধু হারাচ্ছে ভারত?

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: দিল্লির সহিংসতার ঘটনায় মোদি সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছে ভারতের বন্ধু দেশগুলোও। এটাকে একটি শিক্ষণীয় বিষয় হিসেবে দেখা যেতে পারে যে, কীভাবে মানুষকে প্রভাবিত করা যায় ও বন্ধু হারানো যায়। ওই ঘটনার পরে ভারতের পরীক্ষিত বন্ধু রাষ্ট্রগুলো হঠাৎ হয় সমালোচকে পরিণত হয়েছে অথবা শীতল নীরবতা অবলম্বন করছেন। এসবের মূলে রয়েছে উত্তর পূর্ব দিল্লির হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা। সেখানে পুলিশকেও হিন্দুত্ববাদীদের পক্ষ নিতে দেখা যায়। বেশ কতগুলো ঘটনার ফল হচ্ছে দিল্লির ওই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। এর মধ্যে রয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধন আইন (সিএএ), ভারতের সংবিধান থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল এবং আসামের নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি)। ভারতের এসব ঘটনায় বিভিন্নভাবে যেসব দেশ অসন্তোষ দেখিয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ইরান, তুরস্ক এবং বিশেষ করে পাকিস্তানের মতো প্রতিবেশী দেশগুলো। এর বাইরে আছে বৃটেন। সেখানে ভারতের সমালোচনা করে দীর্ঘ বিতর্ক করেছেন পার্লামেন্ট সদস্যরা। আর যুক্তরাষ্ট্রে, ভারতীয় বংশোদ্ভ‚ত একজন মার্কিন কংগ্রেসওম্যান প্রমিলা জয়পাল কাশ্মীর থেকে সব রকম বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়ে ভারতের কাছে একটি প্রস্তাব জমা দিয়েছেন।

কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডক্টর মাহাথির মোহাম্মদ যে বিবৃতি দিয়েছেন তার বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া দিয়েছে ভারত সরকার। পাল্টা পদক্ষেপ হিসাবে তারা মালয়েশিয়া থেকে পামওয়েল কেনা কমিয়ে দেয়ার কথা বলেছে। বলা হয়েছে, এই ঘাটতি কাটাতে তারা ইন্দোনেশিয়া থেকে অধিক পরিমাণে পামওয়েল কিনবে। কিন্তু এর পরে দিল্লির সহিসতায় কয়েক ডজন মানুষ নিহত হলে তার কঠোর সমালোচনা করে ইন্দোনেশিয়াও। গত সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়ায় নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলব করে তারা। ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে সম্পর্ক ঐতিহ্যগতভাবে ঘনিষ্ঠ। এরই মধ্যে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার বিস্ময়কর এক পদক্ষেপ নিয়েছে। তারা ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধন আইন সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের মামলায় হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করেছে। সরকার এসব প্রতিক্রিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে যাচ্ছে। ইরান সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, আমাদের বন্ধু কে, তা জানতে পারবো।

তবে সমালোচনার এই ধারাকে ‘ডিসমিস’ বা উড়িয়ে দেয়া এতোটা সহজ নয়। যুক্তরাজ্যের হাউজ ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটিতে যে প্রস্তাব জমা দিয়েছেন প্রমিলা জয়পাল তা সমর্থণ করেছেন ৪৯ জন এমপি। ভারতের বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধন আইন নিয়ে এরই মধ্যে হতাশা প্রকাশ করেছে আফগান সরকার। এই আইনের মাধ্যমে (মুসলিমদের বাদ দিয়ে তিনটি দেশের) সংখ্যালঘুদের রক্ষা করার বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে তারা। দিল্লি দাঙ্গার কারণে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল এবং হেরাত-এ ভারতবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। আফগানিস্তানের বিক্ষোভ নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র বিষয়ক গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর সাবেক স্পেশাল সেক্রেটারি আনন্দ আরনি বলেছেন, (আফগানিস্তান হলো) এমন একটি স্থান, যেখানে আমরা গর্বের সঙ্গে বলতে পারতাম যে আমরা ভারতীয় এবং দেখুন সেখানে আমাদের অবস্থান কোথায় চলে গেছে।

পূর্ববর্তি সংবাদকরোনার তথ্য গোপন করলে অর্থদণ্ড বা ২ মাসের জেল
পরবর্তি সংবাদইসলামে কি ছোঁয়াচে রোগকে অস্বীকার করা হয়েছে?