টিভির লাইভে ইমামের অনুসরণে তারাবি, কী বলছেন ইসলামী চিন্তাবিদরা!

নুরুদ্দীন তাসলিম।।

সুস্থ স্বাভাবিক পৃথিবীতে হঠাতই সব আলোচনার মোড় ঘুড়িয়ে দিয়েছে করোনা ভাইরাস। নতুন রোগের সাথে যুক্ত হয়েছে নতুন নতুন প্রেক্ষাপট। এরোগকে কেন্দ্র করে এমন কিছু অপ্রস্তুত অবস্থার মুখোমুখি হতে হচ্ছে মানুষকে যা আদৌ কামনা করেননি তারা। দেশের মানুষ এমন এক আশ্চার্যের মুখোমুখি হয়েছেন ঢাকা-৯ আসনের সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরীর কথায়।

তিনি (১৮ এপ্রিল) শনিবার রাতে ফেসবুক লাইভে বলেন, আসন্ন রমজানে টেলিভিশনে সরাসরি তারাবি নামাজ সম্প্রচারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এতে মানুষ চাইলে বাড়িতে  টেলিভিশনের মাধ্যমে ইমামকে ফলো করে নামাজ আদায় করতে পারবেন।

তারাবি নামাজ বাড়িতে নাকি মসজিদে তা ভিন্ন ব্যাপার। কিন্তু একটি মুসলিম দেশের জনপ্রতিনিধির মুখে ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান নিয়ে এমন মন্তব্যকে কিভাবে দেখছেন ইসলামি চিন্তাবিদরা জানতে চাইলে,দেশের খ্যাতিমান আলেম, মালিবাগ জামিয়ার সিনিয়র মুহাদ্দিস  মাওলানা আবু সাবের মুহাম্মদ আবদুল্লাহ ইসলাম টাইমসকে বলেন, জামাতে কোন নামাজ সহীহ হওয়ার জন্য ইমাম মুসল্লি একই স্থানে উপস্থিত থাকা কিংবা মুসল্লিদের কাতার পরস্পরের সাথে সংযুক্ত থাকা শর্ত, টিভিতে সম্প্রচারিত লাইভে নামাজের অনুসরণে তারাবি আদায় করলে ঘরে থাকা মুসল্লিরা ইমামের সাথে শারিরীকভাবে সংযুক্ত হবে কিভাবে ,যদি এমনি হতো তাহলে শরীয়তে ইসলামীতে মসজিদের কোন প্রয়োজন থাকতো না। অথচ মসজিদে স্বশরীরে উপস্থিত থেকে ইমামের পেছনে নামাজ আদায় করা জরুরী। রাসূল সাঃ হাদিসেও প্রত্যেক এলাকায় আলাদা আলাদা মসজিদ নিমার্ণ করতে বলেছেন। এই ইসলামি চিন্তাবীদের  ভাষায় সংসদ সদস্যের  টিভিতে সম্প্রচারিত তারাবি অনুসরণেরের উদ্যোগ অবাঞ্ছিত।

এদিকে মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও মোহাম্মদপুর জামিয়াতুল উলুম আল ইসলামিয়ার মুহাদ্দিস ,পরিচিত মুখ মাওলানা তাহমিদুল মাওলা বলছেন, ধর্মীয় বিষয়ে সংসদ সদস্যের এমন মন্তব্য দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষকে শুধু অবাক করেনি, সাথে সাথে একজন উচ্চশিক্ষিত জনপ্রতিনিধির ধর্মীয় জ্ঞানের অপ্রতুলতার ব্যাপারটি নতুন করে জনগণের সামনে ফুটিয়ে তুলে, ইসলাম সম্পর্কে নূন্যতম ধারণা রাখেন এমন সবার কাছে  বিষয়টি হাস্যকর হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে।

এছাড়া তিনি বলছিলেন,  নামাজ ,মসজিদ বিষয়ে কথা বলার জন্য দেশে  ইফতা বোর্ড আছে, বিশিষ্ট ধর্মীয় ব্যক্তি আছেন কিন্তু অনলাইন মাধ্যমের ব্যবহার বাড়ার সাথে সাথে  ধর্মীয় বিষয়ে যে কেউ তার নিজস্ব মতামত প্রদানে এক  প্রতিযোগীতায় নেমেছেন। যা সত্যিই দুঃখজনক।সাথে ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে এমন অনধিকার চর্চাকে আশঙ্কা হিসেবেও দেখছেন তিনি।

মালিবাগ জামিয়ার সিনিয়র মুহাদ্দিস  মাওলানা আবু সাবের মুহাম্মদ আবদুল্লাহ বলছিলেন, সৌদীসহ বিভিন্ন দেশে টিভি চ্যানেলে নামাজের যেই লাইভ সম্প্রচার করা হয় তা শুধুমাত্র দেখার জন্য , অনুসরণ করে নামাজ আদায়ের জন্য নয়।

বর্তমানে দেশের বিশিষ্ট আলেমরা সুস্থ ব্যক্তিদের জন্য মসজিদ খুলে দেওয়ার যে আহ্বান জানিয়েছেন তার মতে প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে এ ব্যাপারে সরকার প্রধান কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারেন।

পূর্ববর্তি সংবাদসুস্থ মুসল্লিদের মসজিদে আসতে বিধি-নিষেধ প্রত্যাহার করা হোক: তানযীমুল মাদারিস
পরবর্তি সংবাদকরোনা চিকিৎসায় সফলতার দাবি করা ইসরায়েলে আক্রান্ত ১৩ হাজার ছাড়িয়েছে