করোনায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি নিলো না মুগদা হাসপাতাল

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: করোনা পজিটিভ হওয়ার পরও মুগদা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভর্তি নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন এক রোগী।

রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতাল থেকে তাকে ওষুধ দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। একইসঙ্গে তাকে আইসোলেশনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই রোগী জানান, তার মতো নিম্নবিত্ত পরিবারের সদস্যদের পৃথক রুমে আইসোলেশনে থাকা সম্ভব নয়। ভর্তি না নেওয়ায় ছোট দুই সন্তান আর ক্যান্সার আক্রান্ত শাশুড়ি ঝুঁকিতে পড়বে বলেও জানান তিনি। তবে মুগদা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, রোগী ভর্তির একটা ক্রাইটেরিয়া রয়েছে। তবে যদি কারও বাসায় আইসোলেশনে থাকতে সমস্যা হয় তাহলে হাসপাতালে রাখা হবে।

জুরাইন দারোগা বাড়ি রোডে দুই ছেলেমেয়ে আর বৃদ্ধ শাশুড়িকে নিয়ে থাকেন ওই করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি।  পেশায় সিএনজি চালক ওই ব্যক্তি ৭/৮ দিন আগে জ্বর ও মাথা ব্যথায় ভুগছিলেন, সঙ্গে ছিল ঠাণ্ডা। শুরুর দিকে তিনি গলির ওষুধের দোকান থেকে ওষুধ কিনে খান, কিন্তু তাতে কমেনি তার সমস্যা। তারপরই করোনা পরীক্ষার করার কথা মাথায় আসে তার। এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি নমুনা জমা দেন। মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) সকালে তাকে জানানো হয় তিনি করোনা পজিটিভ।

এরপর রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে যান তিনি। সেখানকার অভিজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যাবার পর তারা প্রেসক্রিপশন দিয়ে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার জন্য বলেছে।’তিনি বলেন, ‘সকাল১২ টার দিকে মুগদা হাসপাতালে যাই, কিন্তু সেখানে যা অবস্থা দেখলাম তাতে খুব একটা সুবিধার মনে হইলো না। শাঁখারি বাজার থেকে আসা এক পরিবারের চারজনসহ মোট ছয়জনের মতো পজিটিভ রোগী ছিলাম  হাসপাতালে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সেখানে যাবার পর দূর থেকে সম্ভবত একজন ওয়ার্ডবয় একটা বড় রুম দেখায়ে দিল, সেখানে যাবার পর বসে রইলাম প্রায় এক থেকে দেড় ঘণ্টা। আমরা কেন আসলাম, কোথায় যাবো-কেউ কোনও খবরই নেয় না। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর আগে আসা চারজনকে তারা স্লিপ লিখে বাসায় চলে যেতে বলা হয় হাসপাতাল থেকে। কিন্তু বাকিদের কোনও খোঁজ তখনও নেওয়া হচ্ছিল না। তখন আমি একটু চিৎকার করি, তারপর তারা ওষুধ লিখে বাসায় চলে আসতে বলে। এরপর আর কী করবো, বাসায় চলে আসি।’

তিনি বলেন, ‘আমার ১১ বছরের ছেলে, আট বছরের মেয়ে আর বৃদ্ধ শাশুড়ি থাকেন। এতদিন ছেলে মেয়েসহ একই ঘরে থাকলেও আজ থেকে বাসায় থাকা আরেকটি ঘরে থাকছেন তিনি। বৃদ্ধ শাশুড়ি ক্যান্সারের রোগী। যদিও তারা এখনও সুস্থ আছেন, তবে ভাইরাসের ব্যাপারে তো কিছু বলা যায় না। ছেলে-মেয়ে আর শাশুড়িটা কতদিন সুস্থ থাকে সেটাও একটা ব্যাপার। তাদেরও তো পরীক্ষা করতে হবে, কিন্তু আমাদের বাড়ি আজ বিকালে লকডাউন করে দিয়েছে। কাউকে বের হতে দিচ্ছে না, এখন যদি কেউ উদ্যোগী হয়ে ওদের পরীক্ষা করায় তাহলে হয়তো সম্ভব হবে।’ সর্বশেষ রাত আটটায় তার সঙ্গে যখন মোবাইল ফোনে কথা হয় তখনও তিনি ভর্তি হতে পারেননি।

জানতে চাইলে মুগদা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাদিকুল ইসলাম বলেন, আমদের হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীদের ভর্তি করা হচ্ছে, কিন্তু রোগী ভর্তির একটা ক্রাইটেরিয়া রয়েছে। ক্রিটিক্যাল রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি নেওয়া হচ্ছে, মাইল্ড রোগীদের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে বলা হচ্ছে। করোও যদি বাসায় আইসোলেশনে থাকতে সমস্যা হয় তা জানালে হাসপাতালে রাখা হবে।

তবে এ বিষয়ে করোনা আক্রান্ত ওই ব্যক্তি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার বাসার সমস্যা আমি হাসপাতালে বুঝায়ে বলছিলাম। কিন্তু তারা বলছে, আমাদের কিছু করার নেই, হাসপাতালে সিট কম। সব রোগীকে ভর্তি নিতে পারবে না।’

পূর্ববর্তি সংবাদকুমিল্লায় মারা যাওয়া শিশু নুসরাত করোনায় আক্রান্ত ছিল না
পরবর্তি সংবাদসময় টিভিকে ১২ ঘন্টার মধ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে: সমমনা ইসলামী দলসমূহ