ঈদে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ঘরে ফেরা: নানা জনের নানা প্রশ্ন

ইসলাম টাইমস ডেস্ক: ঈদুল ফিতরের ছুটিতে ব্যক্তিগত গাড়িতে বাড়ি ফেরা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যক্তিগত গাড়ি নয়, ব্যক্তিগত ব্যবস্থায় বাড়ি ফেরা মানুষকে বাধা না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। পুলিশকে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। নির্দেশনা পাওয়ার পরপরই ঘরে ফেরা মানুষকে ঠেকাতে কঠোর অবস্থান থেকে সরে এসেছে পুলিশ।

পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে নতুন নির্দেশনা মতে, এখন থেকে কেউ ব্যক্তিগত গাড়িতে বা ব্যক্তিগত ব্যবস্থায় চলাচল করলে কোনও বাধা দেওয়া হবে না। কেউ যদি ব্যক্তিগত উদ্যোগে ভাড়া করা গাড়িতে চলাচল করে তাতেও বাধা দেওয়া হবে না।’

তবে সরকারের এই নির্দেশনার কারণে দেশজুড়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কয়েকগুণ বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন অনেকেই।

কেউ কেউ প্রশ্ন তুলে বলছেন, গাড়ির চালকেরা যে পরিবেশে থাকেন, সেখানে ‘স্বাস্থ্যবিধি‘ শব্দটির আদৌ কোনো উপস্থিতি নেই। তাছাড়া গাড়ির মালিক বা চালক কারোরই করোনা পরীক্ষা হয়নি। সুতরাং তারা কিভাবে নিশ্চিত হলেন তারা করোনা আক্রান্ত নন?

কেউ প্রশ্ন তুলছেন, গাড়ি নিয়ে যারা যাবেন, তারা কি গাড়িতেই থাকবেন? পথে কোথাও থামবেন না? ফেরিঘাটে বা ফেরিতে নামতে হবে না? গ্রামের বাড়ি গিয়ে কোথায় থাকবেন? ‘স্বাস্থ্যবিধি‘ মেনে আলাদা ঘরে? ব্যবহার করবেন আলাদা আলাদা বাথরুম? এতে একেকজন মানুষের গ্রামের বাড়িতে কতগুলো ঘর ও বাথরুম থাকতে হবে? আমাদের কি একেবারেই কোনো ধারণা নেই? এখন না হয় আমরা শহুরে নাগরিক হয়েছি বা হওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু, এসেছি তো গ্রাম থেকেই। এই যে শহর থেকে যারা গ্রামে যাবেন, তারা করোনাভাইরাস সঙ্গে করে নিয়ে যাচ্ছেন— না নিয়ে আসবেন, তা কি আমরা জানি? কেউ জানেন?

জানা যায়, সরকারের এই ঘোষণার পর থেকে ছোট গাড়ি ও মাইক্রোবাস ভাড়া করে গ্রামে যাওয়া শুরু হয়েছে। চালকসহ পাঁচ আসনের গাড়িতে ছয়-সাত জন, আটজনের গাড়িতে ১০-১২ জন, ১৪ আসনের গাড়িতে ১৮-১৯ জন যাচ্ছেন। ধারণা করা যায় আগামী কয়েকদিন এ ধারা অব্যাহত থাকবে। দুর্ঘটনার বিষয়টি আমাদের বিবেচনায় কখনও থাকে না, এবারও নিশ্চয়ই নেই। তা ছাড়া, ‘স্বাস্থ্যবিধি‘ জিনিসটার অবস্থা কী হচ্ছে আর কী হওয়ার সম্ভাবনা আছে? কে কার পরিবারের সদস্য, কে বা কারা তা নিশ্চিত করবেন? আইনশৃঙ্খলা বাহিনী? সম্ভব? সেই সামর্থ্য আমাদের আছে?

বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে করোনা মহামারি বিষয়ে দূরদর্শী সিদ্ধান্ত এখনো অনুপস্থিত। পোশাক কারখানা বন্ধ-খোলা বিষয়ক সিদ্ধান্তহীনতার মতো, ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে গ্রামে যাওয়া যাবে, আরও একটি অদূরদর্শী সিদ্ধান্ত। যা হতে পারে ভয়ঙ্কর বিপদের কারণ, করোনাভাইরাস সংক্রমণের সহায়ক।

আরো পড়ুন: ব্যক্তিগত ব্যবস্থায় বাড়ি ফেরা মানুষকে বাধা দেবে না পুলিশ

 

পূর্ববর্তি সংবাদট্রাম্পের সেবন করা হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন করোনায় মৃত্যুঝুঁকি বাড়াতে পারে
পরবর্তি সংবাদএবারও পাঁচ দফায় বায়তুল মোকাররমে হবে ঈদের জামাত